বিএনপি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মাঠে মারা গেছে: তথ্যমন্ত্রী

বিএনপি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মাঠে মারা গেছে: তথ্যমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি এখন মাঠে মারা গেছে, শুধু মির্জা ফখরুল সাহেবসহ তাদের নেতাদের মুখে আছে। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আন্তর্জাতিক মহলের হাতে পায়ে ধরে বিভিন্ন সময়ে তুলে ধরলেও কোনো দেশ তাদের দাবি সমর্থন করে নাই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (১৭ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের কুমিরায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত নতুন শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

ads here

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। যে নির্বাচনের আয়োজক হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী দিনের সরকার নির্বাচিত হোক, সেটিই আমরা চাই। কিন্তু বিএনপি নির্বাচন কমিশনের কাছে, বিদেশিদের হাতে-পায়ে ধরে নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি চায়।

তিনি বলেন, বিএনপিকে তো নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং বিদেশিরাও দিতে পারবে না। তারা আসলে নির্বাচনকে ভয় পায়। আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, এ সমস্ত বক্বকানি না করে তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি যে মাঠে মারা গেছে সেই বাস্তবতা মেনে নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য।

চট্টগ্রামের জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ ইতিহাস-ঐতিহ্যের অনেক স্থাপনা ভাঙচুর করেছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে চট্টগ্রাম-৭ আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ ড. হাছান মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রামে বিএনপি তারুণ্যের সমাবেশের কথা বলে যেভাবে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনসহ আমাদের মুক্তি আন্দোলনে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের ছবি এবং ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে, এতেই প্রমাণিত হয় বিএনপি তারুণ্যের সমাবেশ করে তাদের তরুণদেরকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য শিক্ষা দিচ্ছে। তারুণ্যের সমাবেশের নাম কওে পেঠুয়া বাহিনী ও নৈরাজ্য শিক্ষার সমাবেশ করেছে তারা।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ স্বপ্ন দেখে, কিন্তু সব মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় না। খুব কম মানুষের স্বপ্ন তীরে ভিড়ে। কিংবা খুব কম মানুষের স্বপ্ন, স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছায়। কিন্তু সেই মানুষের অনেক স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় যে স্বপ্নের সাথে প্রচেষ্টাকে যুক্ত করে। তাই অভিভাবকদের অনুরোধ জানাবো সন্তানদেরকে স্বপ্ন দেখাতে শেখাবেন। সন্তান যেন স্বপ্ন দেখে। আর সেই স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি সন্তান যেন প্রচেষ্টাকে যুক্ত করে।

তিনি বলেন, দরিদ্রতা কখনো প্রতিবন্ধকতা নয়। এ পি জে আবদুল কালামের বাবা ছিলেন একজন সাধারণ ডিঙ্গি নৌকার মাঝি। ১২ বছর বয়সে পত্রিকার হকার হিসেবে কাজ করতেন এ পি জে আবদুল কালাম। পত্রিকা বিক্রি করে সেই অর্থ দিয়ে তার পড়ালেখা চালাতেন। দরিদ্রতা তার জীবনযুদ্ধকে থমকে দেয়নি। তিনি ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী হয়েছেন, ভারতের মিসাইল প্রযুক্তির জনকও তিনি এবং তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। দারিদ্র তাকে দমাতে পারেন।

তিনি বলেন, দরিদ্রতার কারণে কবি নজরুল মেট্রিক পাশ করতে পারেননি। তিনি দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন দরিদ্রতার কারণেই। আজকে কবি নজরুল জাতীয় কবি এবং তিনি বাংলাদেশ এবং ভারতে সমানভাবে সম্মানিত। কবি নজরুলকে বাদ দিয়ে বাংলা সাহিত্য কল্পনা করা যায় না।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও কাউকে দমাতে পারে না উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, আমাদের যশোরের মেয়ে তামান্নার দুই হাত এবং একটা পা নেই, একটা পায়ের দুই আঙ্গুল দিয়ে লিখে সে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। তাকে যখন প্রশ্ন করা হলো, তুমি এত সাহস কোথায় পাও ? এত প্রেরণা কোথায় পাও ? সে বলেছে স্টিফেন হকিংস উঠতে পাওে না, বসতে পাওে না, মাথা নাড়াতে পাওে না। শুধুমাত্র দুটো আঙ্গুল দিয়ে লিখে পৃথিবীর জন্ম রহস্যটাই বদলে দিয়েছে। সুতরাং শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোন সমস্যা নয়।

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম-এর ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবু রেজা মো. নেজাম উদ্দিন নদভী এমপি, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি এমপি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

চস/স

ads here