ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রধান দুটি উৎসবের একটি ঈদুল ফিতর অন্যটি ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা মানেই ত্যাগের মাধ্যমে সুখী হওয়া। তবে এই ঈদকে ঘিরেও আছে আনন্দের ছড়াছড়ি। আছে নানান রকম অনুভূতি। সেসব অনুভূতি জানতে চেয়েছেন চট্টগ্রাম সময়ের রিপোর্টার আজহার মাহমুদ।
কুরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সচেতন থাকতে হবে
বছর ঘুরে আবারো এলো ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। মুসলিম জাহানের রীতি অনুযায়ী এই দিনে নিজেদের মধ্যকার পশুত্বের বিনাশ ঘটিয়ে স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের আশায় পশু কুরবানি করা হয়। এত সংখ্যক পশু কুরবানি করার ফলে সৃষ্ট বর্জ্যরে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাও একটি চ্যালেঞ্জ। এই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র কর্তৃপক্ষের দিকে চেয়ে থাকলেই চলবে না। নির্ধারিত স্থান না থাকলে নিজেদেরকেই একক বা সমন্বিত ভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কাজ করতে হবে। পশুর রক্ত ও উচ্ছিষ্টাংশ থেকে যেন কোনভাবে মানুষ ও পরিবেশের ক্ষতি না হয় এই বিষয়টিতে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ঈদ। ঈদ মোবারক।
বিপ্লব হোসেন
ইংরেজি বিভাগ, যশোর সরকারি সিটি কলেজ, যশোর।
ঈদুল আজহার তাৎপর্য লালন করতে শিখি
পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলিম জাতির অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসব ত্যাগের। তাই ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে মুসলমানরা আনন্দের সাথে পালন করে এ উৎসবটি। ঈদুল আজহা আমাদের ত্যাগ ও আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার শিক্ষা দেয়। ঈদ মানেই আনন্দ। এ আনন্দ সবার সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য শেকড়ের টানে সবাই যেন হাজারো বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে আপন নীড় খোঁজে। হিংসা-বিদ্বেষ ভূলে সাম্য, সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়াই হচ্ছে ঈদের প্রকৃত শিক্ষা।শুধু তাই না, সমাজের মধ্যে যারা অসহায়,অসুখী ও দরিদ্র প্রতিবেশী রয়েছে তাদের খোঁজ খবর নেওয়া এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করার মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে ঈদের দিনটি সুন্দর কাটানোর এই প্রত্যাশা করি।ধনী গরীব সকলে মিলে এ বন্ধন গড়ে উঠুক। ঈদুল আজহার প্রকৃত মহত্ত্ব ও তাৎপর্য নিজে লালন করতে শিখি। ভাতৃত্বের বন্ধন নিয়ে এ ঈদ সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক।
ইসমাইল হোসেন
শিক্ষার্থী, হাটহাজারী সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম।
ঈদ ত্যগে নয় ভোগে
মুসলিমদের জন্য পবিত্র দু’টি ঈদের মধ্যে অন্যতম একটি হলো ঈদুল আজহা। আরবি শব্দ ‘আজহা’ অর্থ ত্যাগ স্বীকার, কোরবানি প্রভৃতি। ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্য পশু কুরবানি করার মাধ্যমে পালন করা হয়। ঈদের প্রকৃত আনন্দ ত্যগে, মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে বান্দার তাকওয়া দেখা হয়। ঈদ মানে পরিপূর্ণ রুপে আনন্দে পরিণত হয় তখন যখন আমরা সর্বোতভাবে সবাই মিলে আল্লাহর শুকরিয়া ও খুশি ভাগাভাগি করে নেই। সমাজের গরীব-অভাবী মানুষ ও যেনো এই মহানন্দে শামিল হতে পারে এ সু যোগ করে দেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। ইসলামি বিধি- বিধান মোতাবেক কুরবানি ঈদের মুখ্যম বিষয় পশু জবেহ করা ও করার পর কুরবানির গোশত বন্টনের ব্যপারেও সচেতন থাকতে হবে। মোছা.জেরিন ফেরদৌস
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ।
ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি
ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি। সামনে আসছে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। এই দিনে আল্লাহকে খুশি করার জন্য পশু কোরবানি দেওয়া হয়। প্রত্যেক সামর্থ্যবান লোকের ওপর পশু কোরবানি দেওয়া ফরজ। তাই যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী পশু ক্রয় করে থাকেন এবং আল্লাহর নামে তা জবেহ করেন। এই যে একটি জীবন্ত প্রাণ আল্লাহকে খুশি করার জন্য জবেহ করা হয় শুধু মাত্র ভোগ করার উদ্দেশ্যে? উত্তর না। পশু কোরবানির সাথে কোরবান করতে হবে আমাদের হিংসা, রাগ,অভিমান, শত্রুতা এবং কারো দ্বারা কষ্ট পেয়ে থাকলে তাকে ক্ষমা করে নতুন করে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা। কোরবানির মাংস শুধু নিজে ভোগ করলে চলবে না, আমাদের আশেপাশের অসামর্থ্যবান এবং অসহায় ব্যক্তিবর্গের মাঝে মাংস বিলিয়ে দিয়ে সকলের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা।
আসমা আকতার
শিক্ষার্থী, চট্রগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ, চট্টগ্রাম।
পরিবেশ নষ্ট না করেই ঈদ উদযাপন হোক
ঈদ মানেই আনন্দ ও মুসলিম উম্মাহর মিলনমেলা। মুসলমানদের অন্যতম আনন্দের একটি দিন হচ্ছে ঈদুল আযহা।এই দিনটি আমরা পরিবারের সদস্যদের সাথে কাটাতেই পছন্দ করি।এই দিনে আমরা সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করে থাকি।পশু কোরবানি থেকে শুরু করে মাংস কাটাকাটি সে কি এলাহি কাণ্ড ও আনন্দের মুহূর্ত। তারপর শুরু হয়ে যায় কুরবানীর মাংস বিতরণের কার্যক্রম আর ঈদ সালামি আদান-প্রদানের পালা। তবে আসল কথা হচ্ছে আমরা যতই আনন্দ করি না কেন পরিবেশের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। কুরবানীর পশুর নাড়িভুঁড়ি যথাযত ভাবে খালাস করে সুন্দর ও দুষণ মুক্ত পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। তাহলেই ঈদ হবে আনন্দের।
মোঃ রাকিব
শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, সরকারি সিটি কলেজ চট্টগ্রাম।