পরকালে মদপানকারীর করুণ পরিণতি

মহান আল্লাহ যেসব জিনিস কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো মাদক। অথচ দেশে দিন দিন মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যা দেশ ও সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত একটি খবর থেকে জানা যায়, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৮৫ থেকে ৯০ লাখ।

ads here

সরকারি সংস্থা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসাবে বর্তমানে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৭৫ থেকে ৮০ লাখ। ২০১৮ সালে সারা দেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান চালানো হয়। তখন সরকারিভাবে মাদকাসক্তের সংখ্যা বলা হয়েছিল ৩০ থেকে ৩৫ লাখ। এই তথ্য থেকে বোঝা যায়, মানুষ দিন দিন অবক্ষয়ের দিকে যাচ্ছে।

ধর্ম থেকে দূরে সরে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে। পবিত্র কোরআনে মাদক শয়তানের কর্ম বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা-বেদি ও ভাগ্যনির্ধারক তীরগুলো তো নাপাক শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৯০)

এ ছাড়া মদ ইত্যাদি সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। মানুষের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি করে। আল্লাহর ইবাদত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, যা মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতকে ধ্বংস করে দেয়। পবিত্র কোরআনে এ ব্যাপারে ইরশাদ হয়েছে, ‘শয়তান শুধু মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চার করতে চায়। আর (চায়) আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে তোমাদের বাধা দিতে। অতএব, তোমরা কি বিরত হবে না?’ (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৯১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মদপানকারী ব্যক্তির ৪০ দিনের নামাজ কবুল করা হয় না। সে তাওবা করলে তবে আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন। যদি আবার সে মদ পান করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার ৪০ দিনের নামাজ কবুল করেন না। যদি সে তাওবা করে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার তাওবা গ্রহণ করেন। সে যদি আবার মদ পানে লিপ্ত হয়, তাহলে তার ৪০ দিনের নামাজ আল্লাহ তাআলা গ্রহণ করেন না। যদি সে তাওবা করে, আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন। সে চতুর্থবার মদ পানে জড়িয়ে পড়লে আল্লাহ তাআলা তার ৪০ দিনের নামাজ গ্রহণ করেন না। যদি সে তাওবা করে, আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করবেন না এবং তাকে ‘নাহরুল খাবাল’ থেকে পান করাবেন। প্রশ্ন করা হলো, হে আবু আবদুর রাহমান (ইবনু উমার), খাবাল নামক ঝরনাটি কী? তিনি বললেন, জাহান্নামিদের পুঁজের ঝরনা। (তিরমিজি, হাদিস : ১৮৬২)

অতএব, সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে মাদককে না বলতে হবে। নিজেদের পরিবার-পরিজনের প্রতি কঠোর দৃষ্টি রাখতে হবে। সন্তান-সন্ততিকে এ ব্যাপারে সতর্ক করতে হবে। ইবাদতে মগ্ন করতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমিন

চস/আজহার

ads here