কক্সবাজারে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। আজ শনিবার (১৩ মে) বিকাল ৪টায় এ রিপোর্ট লেখার সময়ে দেখা গেছে দ্বীপের বাসিন্দারা জরুরি সামগ্রী নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন।
সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, আবহাওয়া বার্তা পাওয়ার পর দ্বীপে অবস্থানরত মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেক মানুষ টেকনাফের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। যারা সেন্টমার্টিন ছেড়ে গেছেন তাদের অধিকাংশই টেকনাফের বিভিন্ন হোটেলে রাতযাপন করছেন। বর্তমানে যারা দ্বীপে অবস্থান করছে তারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ১০ শয্যার হাসপাতাল, ডাকবাংলো ও বিভিন্ন হোটেলের দিকে ছুটছে মানুষ। দ্বীপের প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান এবং লোকজনের করণীয় সম্পর্কে জানিয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। দ্বীপের লোকসংখ্যা প্রায় ১১ হাজার।
এদিকে সাধারণ জনসাধারণের জানমাল রক্ষায় কক্সবাজার-৪ উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য ও টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব আব্দর রহমান বদি নিজস্ব সানরাইজ রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
অপরদিকে টেকনাফ ড্রিম কেয়ার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল হোসাইন বলেন, ‘ডাক্তার থেকে শুরু করে সকল পরিক্ষানিরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে ফ্রি করে দেওয়া হবে। কোন টাকা পয়সা লাগবেনা। সরাসরি টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালের সামনে ড্রিম কেয়ার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলে আসার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি’।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সেন্টমার্টিনদ্বীপে ৩টি সাইক্লোন শেল্টারসহ ৩৭টি হোটেল প্রস্তত রাখা হয়েছে। তাতে ৭ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। মানুষজনকে সচেতন করতে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। আমাদের সব ধরনের প্রস্ততি রয়েছে। সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে মাইকিং করছি। বিশেষ করে সেন্টমার্টিনদ্বীপে আমরা খোঁজ খবর রাখছি। পুরো উপজেলায় হোটেল-মোটেলসহ ১০১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রেখেছি। সেন্টমাটিনদ্বীপ ও শাহপরীরদ্বীপকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ঘুর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি থেকে জান-মালের ক্ষতি ও সম্পদ রক্ষার্থে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্দেশনামতে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রস্ততিমূলকসভা করে ঘূর্ণিঝড়ের আগেই স্বেচ্ছাসেবক, আশ্রয় কেন্দ্র, মেডিকেল, শুকনো খাবার সংগ্রহের জন্য বিশেষ সভা করে প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ স্থান উপকূল এবং পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত জনসাধারণকে এখন থেকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য আহবান জানানো হয়েছে। তাছাড়া উপজেলা কন্ট্রোল রুম (০১৮২৫০০১২৭২, ০১৮৫৩০০০৩৫৭, ০১৭০০৭১৬৮৫০) চালু, প্রতিটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার ও সিপিপি টিম লিডার নিয়োগ করা হয়েছে। তাছাড়া ৪ সদস্য বিশিষ্ট ৬টি মেডিকেল টিম ও ৬টি রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলায় সাইক্লোন সেল্টার রয়েছে ৬৪টি। সাইক্লোন সেল্টারসহ সব আবাসিক হোটেল মিলে ১০১টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিটে ২০ জন করে ৬৬টি সিপিপি ইউনিট রয়েছে। সিপিপি ভলান্টিয়ার সংখ্যা ১৩২০ জন এবং রেডক্রিসেন্ট ভলান্টিয়ার সংখ্যা ২০০ জন। এরা সকলেই প্রস্তত রয়েছেন।
চস/স