চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির উপজেলার এম এম ইস্পাহানী লিমিটেডের মালিকানাধীন নেপচুন চা বাগানের শ্রমিক জেসমিন আকতার (৫৭) জাতীয় চা দিবস উপলক্ষ্যে প্রবর্তিত সেরা পাতা চয়নকারী ক্যাটাগরিতে জাতীয় চা পুরস্কার-২০২৪ পেয়েছেন।
ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে তিন এ পুরস্কার গ্রহণ করেন। জেসমিন আকতার প্রতি ঘন্টায় ৪৮ কেজি চা তুলে দেশসেরা চা চয়নকারী স্বীকৃতি পেলেন।
১৯৬৭ সালে কুমিল্লা জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন জেসমিন আকতার। তার পিতার নাম মৃত আব্দুর রহমান ও মাতার নাম শাফিয়া বেগম। ১৬ বছর বয়সে একই এলাকার আব্দুল বারিকের সাথে তার বিয়ে হয়। ওই বছরেই জীবিকার তাগিদে উভয়ে ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়নহাট ইউনিয়নে অবস্থিত নেপচুন চা বাগানে চলে আসেন এবং অদ্যবদি কর্মরত রয়েছেন। দুই ছেলে এক মেয়েসহ পরিবারের ৮জন সদস্য সবাই নেপচুন চা বাগানে কাজ করেন।
জেসমিন আকতার ২০২৩ সালে অর্থাৎ এক বছরে সর্বমোট ২৫ হাজার ২ শত ১৭ কেজি চা পাতা চয়ন করেছিলেন। বাগানের কালাপানি লাইনে মাটির তৈরি ঘরে থাকেন জেসমিন আকতারের পরিবার।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে জাতীয় এই পুরস্কারটি পেয়েছিলো নেপচুন চা বাগানেরই আরেক শ্রমিক উপলক্ষি ত্রিপুরা (৪৮)। ২ হাজার ৭’শত একরের নেপচুন চা বাগান ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত। বাগানে স্থায়ী, অস্থায়ী ও বহিরাগত মিলে সর্বমোট ১ হাজার ৮’শ শ্রমিক রয়েছে বলে জানা যায়।
পাতা চয়নে নেপচুন চা বাগানের শ্রমিকরা এতো চালু কিভাবে?? এমন প্রশ্নের জবাবে বাগান ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন জানান, শ্রমিকের একাগ্রতা, নিষ্টা সেই সাথে মালিক এবং কর্মকর্তাদের সাথে শ্রমিকের সু-সম্পর্ক ইত্যাদি কারণে এ সাফল্য। বাগানে শ্রমিকদের নিয়ে কোন ঝামেলা নাই। তাই শ্রমিকরা মানসিকভাবে একদম সতেজ থাকে। ফলে কাজে মনোযোগী হয়। তিনি বলেন শ্রমিকদের কারণে আজ আমরা সম্মানিত।
অনুভূতি জানতে চাইলে জেসমিন আকতার আবেগে আপ্লূত হয়ে বলেন, বাবা আমি মূর্খ-সূর্খ মানুষ, এতোসেতো বুঝিনা। কাউকে ঠকানোর জন্য আমি কাজ করিনা। মনপ্রাণ উজাড় করে দিয়ে কাজ করি। কোন পুরস্কার পাওয়ার জন্যও কিন্তু কাজ করিনি। আল্লাহর ইচ্ছায় কাজের স্বীকৃতি পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছি। সেটা আমার জীবনের সেরা প্রাপ্তি। বাবা আমি আর কিছু জানিনা, সব আমার ম্যানেজার জানে বলে তিনি মুঠোফোন রেখে দেন।
চস/স