spot_img

২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার
৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বশেষ

আজ শোকাবহ আগস্টের চতুর্থ দিন

বাঙালী জাতির বেদনাবিধুর শোকের মাস আগস্টের আজ চতুর্থ দিন। সর্বত্রই শোকের আবহ। রাজধানীসহ সারাদেশেই বিশাল বিশাল কালো পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার টানানো হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাতে নানা স্লোগান- কবিতা শোভা পাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু-স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ এক ও অভীন্ন। স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘ ইতিহাসের প্রতিটি পাতায় একটিই নাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি আজীবন সংগ্রাম আর ত্যাগে আমাদের মহান স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মাথায় তাঁরই প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল হায়েনার দল।

কিন্তু জাতির পিতাকে হত্যা করেও বাঙালীর হৃদয় থেকে তাঁকে আদালা করতে পারেনি ইতিহাসের খলনায়ক বেঈমান ঘাতকরা। তাই আগস্ট এলেই কোটি কোটি বাঙালী শোক ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করে তাদের হৃদয়ের মণিকোঠায় বঙ্গবন্ধুকে ঠাঁই দেন।

জাতির পিতা তাঁর জীবনের দীর্ঘ ত্যাগ, সংগ্রাম, বীরত্বপূর্ণ নেতৃত্ব, অদম্য স্পৃহা, দৃঢ় প্রত্যয়, অসীম সাহসীকতা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও আদর্শের দ্বারা সমগ্র বাঙালী জাতিকে উজ্জীবিত করেছিলেন স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে। স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত আত্মত্যাগে তিনি গোটা জাতিকে দীক্ষিত করে তুলেছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের জন্মলাভ, ’৪৮ সালের মার্চে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার প্রতিবাদে আন্দোলন, ’৪৯ সালের ২৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের জন্ম, ’৫২-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ৬ দফা আন্দোলন, ’৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ও ১১ দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালী জাতির স্বাধীনতা অর্জনের আকাক্সক্ষা চূড়ান্ত লক্ষ্যে এগিয়ে যায়।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্নিশপথে ঐক্যবদ্ধ হয় গোটা বাঙালী জাতি। ২৫ মার্চ কালরাতে ইতিহাসের বর্বোরচিত গণহত্যার পর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতার ঘোষণা করলে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী নেতৃত্বে পাকিস্তানী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত বাঙালীর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় হাজার বছরের লালিত মহার্ঘ্য স্বাধীনতা।

বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন বাঙালীর স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। বাংলার ইতিহাসের মহানায়ক। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক জাতিরাষ্ট্রের মহান স্থপতি। বাঙালীর জাতির পিতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী। স্বাধীনতার পর ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু ঘাতকরা তাঁর সে স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি। ১৫ আগস্ট পৃথিবীর ইতিহাসে নিষ্ঠুরতম হত্যাকা- ঘটিয়ে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে বেঈমান-মোনাফেক হায়েনারা।

নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শোকাতুর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন শোকের নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে স্মরণ করছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ’৭৫-এ ইতিহাসের নিষ্ঠুর ও জঘন্যতম এই হত্যাযজ্ঞের পর থেকেই বাঙালী ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস এবং পুরো মাসকে শোকের মাস হিসেবে পালন করে আসছে।

শোকের মাসের তৃতীয় দিনেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন সংগঠন শোকর‌্যালি, আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে। সর্বত্র দাবি উঠেছে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-রে নেপথ্যের মাস্টারমাইন্ডদের মুখোশ উন্মোচন করতে একটি জাতীয় কমিশন গঠনের।

চস/আজহার

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss