নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা ও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় ওই নারীর স্বামীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে এ সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটি। একইসঙ্গে ওই নির্যাতনের ঘটনায় হামলাকারীদের সঙ্গে নারীর ভাসুরেরও সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
এর আগে ওই নারীকে নির্যাতনের ঘটনায় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনা হলে আদালত ঘটনা তদন্তে গত ৫ অক্টোবর একটি কমিটি গঠন করে দেন আদালত। নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা সমাজ সেবা অফিসার এবং চৌমুহনী সরকারি এসএ কলেজের অধ্যক্ষকে ওই ঘটনা সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে বলা হয়। অনুসন্ধান শেষে ১৫ কার্যদিবসের হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি দাখিল ও শুনানি হয়।
প্রতিবেদনটির বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘ঘটনার দিন ওই নারীর স্বামীকে বেঁধে রাখার বিষয়টি প্রচার হলেও তদন্ত প্রতিবেদনে সেই নারীর স্বামী ও ভাসুরের সম্পৃক্ততা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এছাড়াও প্রতিবেদনে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অবহেলা পাওয়া গেছে। তাই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।’
এছাড়াও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা ও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। একইসঙ্গে আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ওই ভিডিও ফুটেজটির একটি কপি সংরক্ষণ করেছে বিটিআরসি।
আদালতে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ওই ঘটনা আদালতের নজরে আনা আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।
উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জে ওই গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানো হয়। ঘটনার ৩২ দিন পর ৪ অক্টোবর দুপুরে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই দুটি মামলা হয়। এ বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।
চস/আজহার