লুসাইল স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসির হাত ধরে বিশ্বকাপ শিরোপা তুলে ধরার মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে বিশ্ব ফুটবলের ২২তম আসরের। বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে প্রায় ৯ মাস হতে চলল কিন্তু এখনো তার রেশ এখনো রয়ে গেছে। কাতার দেখেছিল মেসির রুদ্রমূর্তি।
বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে শান্ত মেসির রুদ্রমূর্তি দেখেছিল ফুটবল বিশ্ব। আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডসের বহুল আলোচিত সেই ম্যাচ এখনো মুছে যায়নি দর্শকদের স্মৃতি থেকে। আগুন লড়াইয়ে রূপ নেয়া সেই ম্যাচ এতটাই উত্তপ্ত ছিল যে রেফারিকে ১৮ বার কার্ড বের করতে হয়েছে পকেট থেকে। আলোচিত ম্যাচে গোলের পর ডাচ কোচ ফন গালের উদ্দেশে দুই কানে হাত দিয়ে মেসির সেলিব্রেশনও পরে ‘ট্রেডমার্কে’ পরিণত হয়।
অবশ্য ম্যাচ শেষে মেসি জানান, ডাচ কোচ ফন গালের কথায় অপমানিত হয়ে তিনি এমনটা করেন। কোয়ার্টারে মেসির মুখোমুখি হওয়ার আগে ফন গাল বলেছিলেন, আর্জেন্টিনার পায়ে যখন বল থাকে না, মেসি তখন কিছুই করেন না।
সেই ম্যাচটি হারের পর গণমাধ্যমে কখনো বিষয়টি নিয়ে কথা বলেননি ফন গাল। অবশেষে মুখ খুললেন ডাচ কোচ। আর মুখ খুলেই বোমা ফাটালেন তিনি। নিজ দেশের গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাতকারে ফন গাল বলেন, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ম্যাচটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল। মেসিকে বিশ্বকাপ জেতাতে এমনটা করা হয়েছিল।
সম্প্রতি ডাচ সংবাদমাধ্যম ‘এনওএস’ স্পোর্টসকে ফন গাল বলেন, আমি এটা নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না। আপনি যখন দেখবেন কীভাবে আর্জেন্টিনা গোলগুলো করেছিল এবং আমরা কীভাবে গোলগুলো করেছিলাম (তখন বুঝতে পারবেন)। তাদের কিছু খেলোয়াড় সীমা অতিক্রম করেছিল এবং এরপরও তাদের কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি। ফলে আমার মনে হয়েছে এই ম্যাচটা পুরোপুরিভাবে পূর্বপরিকল্পিত খেলা ছিল। আমি যা বলতে চেয়েছি, মেসিকে কি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতেই হতো? আমার মনে হয়, হ্যাঁ।
তবে মেসি ও আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ শিরোপা পাওয়া নিয়ে পক্ষপাতের অভিযোগ অবশ্য নতুন কিছু নয়। বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ে পর্তুগিজ ডিফেন্ডার পেপে বলেছিলেন, আমরা একটি গোল খেয়েছি, যা প্রত্যাশিত ছিল না। তবে আগের রাতে যা হয়েছে, এরপর এই ম্যাচে আর্জেন্টাইন রেফারিকে দায়িত্ব দেয়া গ্রহণযোগ্য নয়। আমি যা দেখলাম তার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি, বিশ্বকাপটা তারা এখন চাইলে আর্জেন্টিনাকে দিয়ে দিতে পারে। আমি এটা এখন বলতেই পারি।
এর মেসিদের বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচে পরাজিত হয়ে ক্রোয়াট অধিনায়ক লুকা মদ্রিচ বলেছিলেন, পেনাল্টি দেয়ার সিদ্ধান্ত আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। এটা স্পষ্ট যে সেই সিদ্ধান্ত ম্যাচ বদল দিয়েছে।
উল্লেখ্য, মেসি কাতার বিশ্বকাপে ৭টি গোল করেন। পাশাপাশি ৩টি গোলে অবদান রাখেন। যার স্বরূপ টুর্নামেন্টের গোল্ডেন বলের পুরস্কার উঠে তার হাতে। গত মৌসুম জুড়ে ও বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য মেসি ২০২৩ সালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ব্যালন ডি’অর শিরোপা জয়ের পথে বেশ এগিয়ে রয়েছেন। এবার যদি মেসি ব্যালন ডি’অর শিরোপা জয় করেন তাহলে এটি হবে তার ক্যারিয়ারের অষ্টম ব্যালন ডি’অর। যা রেকর্ড বিশ্বের আর কারো নেই।
সূত্র: গোলডটকম
চস/আজহার