চার বছর আগে মিরসরাইয়ের এক স্কুলছাত্র খুনের ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড এবং একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মুন্সী আবদুল মজিদ এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কাজী সরওয়ার উদ্দিন, মীর হোসেন ও শহীদুল ইসলাম।
এদের মধ্যে কাজী সরওয়ার উদ্দিনকে ৩৬৪ ধারায় (হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ) আরও ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। অন্য দুইজনের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন হোসনে মোবারক রুবেল। তিনি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সরওয়ারের ভাই।
সরওয়ার পলাতক আছেন। বাকি আসামিদের রায় ঘোষণার পর কারাগারে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রাম জেলা আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি এ কে এম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিনজনকে সর্বোচ্চ শাস্তি এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
নিহত ফারহান সাকিব (১৫) মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ জেবি স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৬ জুন সাকিব স্কুল থেকে জোরারগঞ্জের উত্তর মোবারকঘোনা এলাকার বাড়িতে ফিরে দুপুরের খাবার খায়। এরপর মোবাইলে আসামি সরওয়ার ফোন পেয়ে সে ঘর থেকে বের হয়। বাড়ির অদূরে রাস্তায় পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মাইক্রোবাসে সাকিবকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
সন্ধ্যা পর্যন্ত সাকিব বাড়ি না ফিরলে থানায় মামলা করেন সাকিবের বড় ভাই মো. শহিদুল ইসলাম রুবেল।
তিনি বলেন, “অপহরণের পর আমার ভাইকে তারা বারৈয়ারহাট পৌরসভার পূর্ব দিকে নয়টিলা মাজার সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে হত্যা করে।
“আসামি কাজী সরওয়ার উদ্দিন ও হোসনে মোবারক রুবেল আমাদের প্রতিবেশী। দাদার আমল থেকে জমি নিয়ে তাদের পরিবারের সাথে বিরোধ ছিল। তবে আমার ভাইকে হত্যার আগে তাদের সাথে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।”
আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শহিদুল।
আইনজীবী এ কে এম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সাকিবকে অপহরণের পর নয়টিলার পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়। পরে তার হাতও বিচ্ছিন্ন করে হত্যাকারীরা।
এ ঘটনায় তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর আদালতে পাঁচজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়।
এ মামলায় অন্য একজন আসামি (১৪) অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় শিশু ট্রাইব্যুনালে তার বিচার চলছে।
চস/আজহার