হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে তিনি জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে নির্মমভাবে শাহাদাৎ বরণ করেন।
বঙ্গমাতা ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহাকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ছিল রেণু। বাবার নাম শেখ জহুরুল হক ও মায়ের নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই-দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটিতে সরকারি কর্মসূচি ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। এ লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যে প্রেরণাদাতা ছিলেন ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তিনি বঙ্গবন্ধুর গোটা রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি কাজে প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বারবার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি জীবন-যাপন করছিলেন, তখন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কাছে ছুটে যেতেন। তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা পৌঁছে দিতেন ও লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যোগাতেন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তি নিয়ে কিছু কুচক্রী স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল। তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। স্বামী বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছায়ার মত অনুসরণ করা বেগম মুজিবকে জীবনে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন, এজন্য অনেক কষ্ট-দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাকে।
এদেশের মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে বেগম মুজিব যে কর্তব্যনিষ্ঠা, দেশপ্রেম, দূরদর্শী চিন্তা, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তার ফলে জাতির পিতার পাশাপাশি তিনি আজ বঙ্গমাতার আসনে অধিষ্ঠিত। এ দেশের রাজনীতিতে তার অনন্য সাধারণ ভূমিকার জন্য চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এই মহীয়সী নারী ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে সপরিবারে খুনিচক্রের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শহীদ হন।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন, কোরআন খতম, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করবে আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনসমূহ।
এছাড়া বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে বিজয়-লক্ষ্মী নারী’ শীর্ষক আলোচনা সভা করবে আওয়ামী যুবলীগ। দুপুর ২টায় বাদ যোহর স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় এতিমদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। বিকাল ৩টায় আলোচনা সভা করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শ্রমিক লীগ।
এছাড়া গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ায় দিনব্যাপী ফ্রি হেলথ ক্যাম্প আয়োজন করবে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ। বঙ্গমাতা শহীদ শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও ‘বাংলাদেশের মাতা, বাংলাদেশের নেতা’ শীর্ষক ছাত্রী সমাবেশ করবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
চস/স