spot_img

২৩শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার
৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বশেষ

সেন্টমার্টিনগামী বোটে মিয়ানমার থেকে ফের গুলি

সেন্টমার্টিনগামী বোটে আবারও মিয়ানমার থেকে গুলি করেছে। টানা ৭ দিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (১১ জুন) টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনগামী পাঁচজন যাত্রী নিয়ে যাওয়া একটি স্পীড বোটকে লক্ষ্য করে ফের গুলিবর্ষণ করেছে গোষ্ঠীটি। তবে এতে হতাহত না হলে দ্বীপজুড়ে এখন চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দ্বীপে চলছে তীব্র খাদ্য সংকট।

টেকনাফের নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনাটি নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্ট নামে পরিচিত। আর সেই নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে মিয়ানমারের অজ্ঞাত একটি অস্ত্রধারী গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীটি কোনোভাবেই টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে ট্রলার বা স্পিড বোট চলাচল করতে দিচ্ছেনা। ওই রুটে ট্রলার বা বোট দেখার সঙ্গে সঙ্গেই গুলি করছে।

মঙ্গলবার গুলি করা স্পীড বোটটির মালিক খোরশেদ আলম বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য জরুরি টেকনাফে আসা পাঁচজন যাত্রীর সেন্টমার্টিন যাওয়ার প্রয়োজন হলে চালক মোহাম্মদ বেলাল সকাল সাড়ে ১০টায় টেকনাফের কায়ুকখালী ঘাট থেকে যাত্রা দেয়। বোটটি শাহপরীরদ্বীপ অতিক্রম করে নাফনদীর বদরমোকামের গোলগরা পয়েন্টে পৌঁছে। এটি নাইক্ষ্যংদিয়ার বিপরীতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের অংশ এলাকাটি। কিন্তু এরপরও মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে ট্রলারে অবস্থানরত অস্ত্রধারীরা বাংলাদেশের জলসীমায় এগিয়ে এসে গুলি করে। টানা ১০-১২ রাউন্ডগুলি করা হয়।

চালক বেলাল অবস্থা বুঝে স্পীড বোট দ্রুত চালিয়ে পশ্চিমের বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে যায়। এতে কেউ হতাহত হয়নি। বোটটি দুপুর ১২টার দিকে দ্বীপে গিয়ে পৌঁছে। কাঠের ট্রলার বা সার্ভিস বোটে যাত্রী বা পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি জটিলতা রয়েছে। ট্রলারগুলিকে নাফনদী এবং বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে এসে মিয়ানমারের কাছাকাছি এলাকা অতিক্রম করতে হয়। এটা করতে গিয়ে ৫ জুন সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের বহনকারী নৌযানে গুলিবর্ষণ করে মিয়ানমার থেকে। এতে ট্রলারটি ক্ষতিগ্রস্থ হলেও কেউ হতাহত হননি।

এরপর ৮ জুন শনিবারও পণ্যবাহী ট্রলারে আবারও গুলি করে। এতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারটিতে গুলি লাগে সাতটি। কিন্তু স্পীড বোট অনেক দূর থেকে চলাচল করলেও কেন বাংলাদেশের জলসীমায় এসে গুলি করছেন বুঝা যাচ্ছেনা’।

সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘টেকনাফের নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনাটি নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে মিয়ানমারে অবস্থানরত অস্ত্রধারীরা কারা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা। তারা ট্রলারে অস্ত্র হাতে নাফনদীতে টহল দিচ্ছে। তারা সেন্টমার্টিনগামী ট্রলার বা স্পীড বোট দেখলেই গুলি করছে। মঙ্গলবারের ঘটনার পর দ্বীপজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সেন্টমাটিন-টেকনাফ যাত্রী ও পণ্যবাহী সব নৌযান চলাচল বন্ধ। যার কারণে দৈনন্দিনের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য সংকট চলছে। সমাধান না হলে দ্বীপবাসীর অবস্থা খুব সংকটাপন্ন হবে। এ ক্ষেত্রে বঙ্গোপসাগরকে ব্যবহার করে নৌবাহিনী বা কোস্ট গার্ডের জাহাজ যোগে খাদ্যপণ্য নেওয়ার দাবি করছি’।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, ৩য় বারের মতো গুলি বর্ষনের বিষয়টি সব পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এর পরিপ্রেক্ষিতে দ্বীপে অবস্থানরত মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে। ওই এলাকায় মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী নাকি বিদ্রোহীরা গুলি চালাচ্ছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা। মিয়ানমার থেকে ট্রলার ও স্পীড বোটকে লক্ষ্য করে বার বার গুলি ছোড়ার ঘটনায় ওই নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে শাহপরীরদ্বীপ অংশ থেকে বিকল্প পদ্ধতিতে বঙ্গোপসাগর হয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়া বিষয়ে গত রবিবার ৯ জুন জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ মহলকে অবহিত করা হয়েছে’।

চস/স

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss