সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও শুরু হয়েছে টাইফয়েডের টিকাদান কর্মসূচি। রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টায় চন্দনপুরার গুল-এজার বেগম মুসলিম সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
শাহাদাত হোসেন বলেন, শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে টিকাদান কর্মসূচিকে সফল করতে হবে। নগরের প্রতিটি অভিভাবককে অনুরোধ করছি, নির্ধারিত তারিখে শিশুদের টিকা দিতে নিয়ে আসুন। টাইফয়েড কেবল স্কুলপড়ুয়া নয়, স্কুলবহির্ভূত শিশুরও হতে পারে। তাই আমরা কমিউনিটি পর্যায়েও টিকাদান চালাবো, যেন কোনো শিশু বাদ না যায়।
তিনি আরও বলেন, টাইফয়েড একটি অত্যন্ত মারাত্মক রোগ। অনেক সময় সাধারণ জ্বর ভেবে আমরা বুঝতে পারি না এটি টাইফয়েড। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে অঙ্গহানি পর্যন্ত ঘটাতে পারে। প্রতিরোধই সবচেয়ে বড় সুরক্ষা। অনেক অভিভাবক অজান্তে বারবার অ্যান্টিবায়োটিক পরিবর্তন করেন, যার ফলে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়—এটি একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা। তাই এই টিকাদান কার্যক্রম অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
মেয়র বলেন, স্কুল পর্যায়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এবং কমিউনিটি পর্যায়ে ১ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতায় মোট ১ হাজার ৫৪৬টি স্কুল ও ৭৮৩টি আউটরিচ সাইটে প্রায় ৮ লাখ ২৯ হাজার ৩০১ শিশুকে টিকা প্রদান করা হবে। এর মধ্যে স্কুল শিক্ষার্থী ৫ লাখ ৩১ হাজার ১৬৭ জন এবং স্কুলবহির্ভূত শিশু ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৮৪ জন।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকার এই টিকা আমরা বিনামূল্যে প্রদান করছি, যার মাধ্যমে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রায় ৯ লাখ ৫০ হাজার শিশুকে টিকার আওতায় আনা হবে। এটি চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো একটি বড় প্রতিরোধমূলক জনস্বাস্থ্য উদ্যোগ। আমি ধন্যবাদ জানাই নগরফুলসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোকে, যারা পথশিশুদের এই টিকাদান কর্মসূচিতে সহযোগিতা করছে। এই শিশুরাই আমাদের ভবিষ্যৎ, তাদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠাই আমাদের দায়িত্ব।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের আয়োজনে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সার্বিক সহযোগিতায় এ ক্যাম্পেইন পরিচালিত হচ্ছে।
চস/স