জাপানের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সংসদের নিম্নকক্ষে জিতে সানায়ে তাকাইচি দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
৬৪ বছর বয়সী রক্ষণশীল এই নেত্রী নিম্নকক্ষে পেয়েছেন ২৩৭টি ভোট, যা প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়েও চারটি বেশি। তার এই জয় নারীদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বে পিছিয়ে থাকা জাপানে এক ঐতিহাসিক কৃতিত্ব হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
নির্বাচিত হওয়ার পর এখন তাকাইচির প্রথম কাজ হবে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন। আশা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার রাতেই তিনি তার মন্ত্রিসভার তালিকা ঘোষণা করবেন। এছাড়া আগামী সপ্তাহে তার প্রথম কূটনৈতিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাপান সফরে তিনি অংশ নেবেন।
তাকাইচি মাত্র আড়াই সপ্তাহ আগে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-র নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্বে এলডিপির দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী কোমেইতো জোট ছাড়ে। তবে তিনি দ্রুতই জাপান ইনোভেশন পার্টি (ইশিন)-এর সঙ্গে নতুন জোট গঠন করেন, যার সমর্থনই তাকে প্রধানমন্ত্রীত্ব এনে দেয়।
তবে জোট গঠন সত্ত্বেও, নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে এখনও দুই আসনের ঘাটতি রয়েছে, যা ভবিষ্যতে বাজেট ও আইন পাশের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাকাইচির সামনে রয়েছে একাধিক জটিল চ্যালেঞ্জ: চলমান মুদ্রাস্ফীতির চাপ, এশিয়ায় উত্তপ্ত নিরাপত্তা পরিস্থিতি, বিশেষ করে উত্তর কোরিয়া ও তাইওয়ান ইস্যু, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিভাজন।
এছাড়া জনমত জরিপে দেখা গেছে, জাপানে জনসাধারণের মধ্যে বিদেশিদের আগমন ও অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এসব বিষয়ে কতটা কার্যকর নেতৃত্ব দিতে পারেন, তা নিয়েই এখন আলোচনা চলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তাকাইচির জয়ের মধ্য দিয়ে জাপানের রাজনীতি আরও ডানমুখী পথে অগ্রসর হচ্ছে। এলডিপির কট্টরপন্থী অংশের সমর্থনে উত্থান পাওয়া তাকাইচিকে দেশটির ’আয়রন লেডি’ বলেও অভিহিত করা হচ্ছে।
চস/স