সারাবিশ্বের মতো এই মহামারি করোনায় বিপর্যস্ত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা। প্রতিদিনই নিয়ম মেনে যেন বেড়েই চলেছে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা। কিন্তু এমন বিপজ্জনক সময়েও কোনো নিয়ম মানছে না এক শ্রেণির মানুষ। তারা এ পরিস্থিতিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে নিত্য নতুন বিনোদন কেন্দ্রে। অথচ করোনার ভয়াল থাবার শুরুর সাথে সাথেই ১৯ মার্চ থেকে নগর পুলিশ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ নগরের সকল বিনোদন কেন্দ্রে জনসমাগম নিষিদ্ধ করে।
এরপরও এক শ্রেণির মানুষ নিয়ম নীতি না মেনে স্বাস্থ্যবিধি তোয়াক্কা করে ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা বিনোদন কেন্দ্রে। এছাড়াও বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের ঘুরাঘুরি ছাড়াও দেখা যায়, কিছু বখাটে তাদের নিজস্ব বাইক নিয়ে মেতে উঠেছে স্ট্যান্টবাজিতে!
শুক্রবার (১২ জুন) বিকেলে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও মেরিন ড্রাইভ সড়কে জেলা প্রশাসন, নগর পুলিশ ও টুরিস্ট পুলিশের যৌথ অভিযান চলাকালে এমনসব দৃশ্য ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহ জটিল অবস্থার মধ্যেও পতেঙ্গা-হালিশহর মেরিন ড্রাইভ সড়কের সমুদ্র তীরে আজ প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর-তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী এমনকি শিশু ও বৃদ্ধ সকল বয়সী লোকজনের সমাগম। যেন দেশে করোনা বলে কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘অনেক শিক্ষিত মানুষকেও করোনার মাঝেই বিলাসবহুল প্রাইভেট কার, মার্সিডিজ বেঞ্জ, হোন্ডা আর পাজেরো গাড়ি নিয়ে সমুদ্র বিলাসে মেতে উঠতে দেখা যায়। সমুদ্র সৈকত তীরে ক্রিকেট, ফুটবল-ও খেলছিল অসচেতন কিশোর-তরুণরা। প্রচুর লোক সমাগম থাকায় সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনায় মোবাইলে কোর্টে জরিমানা করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রায় ৩০ মিনিটের অভিযানে পতেঙ্গা সৈকত ও মেরিন ড্রাইভ সড়ক থেকে দর্শনার্থীদের সরিয়ে দেওয়া হয়।’
‘মার্সিডিজ বেঞ্জ নিয়ে ঘুরতে আসা একটি পরিবারের লোকজনকে সমুদ্র সৈকত এলাকা ত্যাগ করতে বললে পুলিশে সদস্যদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ওই পরিবারটি। আমরা মার্সিডিজ বেঞ্জের গাড়ি ও মালিকের বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি পুলিশকে।’- বলেন তৌহিদুল।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল বলেন, ‘অভিযানের শুরুতে দেখা যায় ইপিজেড থানাধীন আকমল আলী রোড এলাকায় মেরিন ড্রাইভে আনুমানিক ২৫-৩০ টি মোটরবাইক দিয়ে স্ট্যান্টবাজি করছিলো কিছু যুবক। ভ্রাম্যমাণ আদালত দেখেই তারা মোটরবাইক নিয়ে দ্রুতগতিতে বিপদজনকভাবে পালিয়ে যায়। এসব বাইকারদের ছবি ও ভিডিও আমাদের হাতে আছে। যাচাই বাছাই করে এসব গাড়ি ও বাইকের লাইসেন্স বাতিল/জব্দ করার জন্য বি.আরটিএ কে সুপারিশ করা হবে।’
চস/আজহার