পুলিশের হাতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের নিহতের ঘটনায় তার দুই সহযোগী শিপ্রা দেবনাথ ও সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে র্যাব।
বুধবার (১২ আগস্ট) র্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন র্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যাণ্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
আশিক বিল্লাহ বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা বিচক্ষণতা বিবেচনায় প্রথমে সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে আসামিদের রিমান্ডে আনতে চাইছেন। তাই ঘটনার সময় থাকা দুই শিক্ষার্থী শিপ্রা এবং সিফাতকে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) যেকোনো সময় প্রয়োজন অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে তারা সব সময় উন্মুক্ত থাকবে। তাদের জন্য সময় নির্ধারিত নয়।
তিনি বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল (মঙ্গলবার) যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরপর বরখাস্ত হওয়া ৭ পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অর্থাৎ আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে তাদের রিমান্ডের সময় গণনা শুরু হবে।
আশিক বিল্লাহ আরো বলেন, কোনো রকম চাপ ছাড়াই সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ হয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে মামলার তদন্ত কাজ করবে র্যাব। আমাদের এখন মূল কাজ হচ্ছে এ মামলার মোটিভ উদঘাটন করা। সেজন্য তদন্ত চলছে।
আরো পড়ুন: অবশেষে সিফাতের জামিন দিয়েছেন আদালত
এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে জানিয়ে এসব থেকে বিরত থাকতে র্যাবের পক্ষ থেকে আহ্বান জানান আশিক বিল্লাহ।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের গুলিতে নিহতের ঘটনার তদন্ত র্যাবের কাছে আসে। এরপর সামগ্রিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পুলিশের দায়ের করা মামলার তিনজন সাক্ষী হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদের সহায়তা করেছেন বলে আলামত পাওয়া গেছে। এ কারণে গতকাল সে ৩ জন মো. নুরুল আমিন, আয়াজ উদ্দিন এবং নিজাম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তিনি বলেন, র্যাব মূলত হত্যাকেন্দ্রিক যে ঘটনাটি ঘটেছে সে বিষয়টির তদন্ত করছে।
প্রসঙ্গত, ৩১ আগস্ট রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউপির শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের হাতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় হত্যা ও মাদক আইনে এবং রামু থানায় মাদক আইনে পৃথক তিনটি মামলা করে।
এছাড়া ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। ৬ আগস্ট বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ সাত আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
চস/স