ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতিমালা জারি করেছে, সেটির কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ আদেশ আরও দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
এ ছাড়া এই সময়ে ওই নীতিমালার সুবিধাভোগীরা নতুন করে ঋণ নিতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন আদালত। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ সোমবার এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত বিচারপতি জেবিএম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
১৬ মে ঋণখেলাপিদের নতুন করে একটা সুযোগ দিয়ে ২ শতাংশ সুদ জমা দিয়ে ১০ বছরের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য সার্কুলার দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়। এর পর রিটকারীদের আবেদনের শুনানি নিয়ে ২১ মে ওই সার্কুলারের ওপর ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজার রাখার জন্য আদেশ দেন হাইকোর্ট।
২৪ জুন এ স্থিতাবস্থার মেয়াদ আরও দুই মাস বাড়ানো হয়। পরে এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
এর শুনানি নিয়ে গত ২ জুলাই চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান হাইকোর্টের ওই আদেশ ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেন।
একই সঙ্গে আবেদনটি ৮ জুলাই আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন তিনি। এর ধারাবাহিকতায় আজ আপিল বিভাগে শুনানি হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
মনজিল মোরসেদ বলেন, হাইকোর্টের আদেশ ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রেখে আবেদনটি ওই দিন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন আদালত। মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবির করা এক রিট আবেদনে হাইকোর্ট ১৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ঋণখেলাপির তালিকা দাখিলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে রুল জারি করেন।
রুলে আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়।
এর পর ২৪ জুন হাইকোর্টে ঋণখেলাপিদের তালিকা দাখিল করা হয়। এ রিটের সঙ্গে সম্পূরক আবেদন হিসেবে ঋণখেলাপিদের সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতিমালা জারি করেছিল তা স্থগিতের আবেদন করে রিটকারী পক্ষ।
চস/আজহার
