আজকাল হরহামেশাই রাস্তার পাশে দেয়ালে সাঁটা পোষ্টারে দেখা যায় ‘কোরিয়ান ভাষা শিখুন’ এমন বিজ্ঞাপন। অদ্ভুত শোনালেও সরকারিভাবে ইদানীং বিদেশি ভাষা শেখানোর ক্ষেত্রে এই ভাষাটিকে বেশ গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। দেশের প্রায় সকল জেলায় সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই ভাষা শেখানো হচ্ছে। অবশ্য, এর বাইরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য বেসরকারি কোরিয়ান ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র।
দূর-দুরান্ত থেকে অনেকেই এখন এই ভাষা শেখার জন্য বিভাগীয় শহরগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছেন। ঢাকা থেকে অনেক দূরের মাগুরা থেকে দুই মাসের কোর্স করতে এসেছেন কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী শাহিনা পারভিন। তিনি জানান, আমি আসলে কোরিয়ায় পড়াশুনা করতে চাই। ওই ভাষার ওপরেই কোন পড়াশোনা।
ফরাসি, জার্মান বা রুশ ভাষার মতো ভাষা থাকতেও কেন এ ভাষা শিখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোরিয়ান ভাষা সম্পর্কে আমি আমার জেলায় অনেক সার্কুলার দেখেছি। পরিচিতদের কাছে শুনে আমার আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
শুধু উচ্চ শিক্ষার জন্য নয়, অনেকে ব্যবসার জন্যেও শিখছের এ ভাষা। তেমনই একজন মোহাম্মদ আবু জাহের। তিনি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আমদানির ব্যবসা করেন। বছরে বেশ কয়েকবার তাকে কোরিয়া যেতে হয়। তিনি জানান, তার ব্যবসায়িক পার্টনারদের সাথে কাজের সুবিধার জন্য তিনি নিজেই ভাষাটি শিখছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশে ইপিজেডগুলোতে কোরিয়ানদের কারখানায় অথবা অন্যান্য কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানেও এই ভাষা জানা থাকলে দেয়া হচ্ছে অগ্রাধিকার। কিন্তু প্রতি বছর হাজার হাজার ছেলেমেয়ের এ ভাষা শেখার আগ্রহের সবচাইতে বড় কারণ হলো দক্ষিণ কোরিয়াতে চাকরী করতে যাওয়া।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সাল থেকে দুই দেশের সরকারের মধ্যে বিশেষ চুক্তির আওতায় লটারির মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন কারখানায় কাজ করতে শ্রমিক নেয়া হচ্ছে। গত বছর লটারিতে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সুযোগ মিলেছে মোটে আড়াই হাজারের মতো ব্যক্তির। কিন্তু লটারি পর্যন্ত যেতে অনলাইনে আবেদন পড়েছে লাখ দেড়েক। যাদের সবাইকে আবেদনের পূর্বশর্ত হিসেবে এ ভাষা অবশ্যই শিখতে হচ্ছে।
চস/আজহার