মাহমুদাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর খুনের সাক্ষী না রাখতে ঘুমন্ত তিশামণি এবং সাহেদকেও শ্বাসরোধে এবং সর্বশেষ কাঠের ফালি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
কুমিল্লার হোমনায় চাঞ্চল্যকর তিন খুনের আসামি গ্রেপ্তার আক্তার হোসেন প্রথমে হোমনায় পুলিশের কাছে ও পরে কুমিল্লায় আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হত্যার দায় স্বীকার কারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানান।
হোমনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মীর মহসীন মাসুদ রানা রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আক্তার হোসেন স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে সে মাহমুদাকে চাচী সম্বোধন করতো। আক্তার হোসেনের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে নিহত মাহমুদা আক্তার সাত চল্লিশ হাজার টাকা ধার নেন। বুধবার তাকে ওই টাকা দেওয়ার কথা বলেই মাহমুদা তাকে (আক্তারকে) বাড়িতে নেন। বাড়িতে যাওয়ার সময় সঙ্গে আঁখ ও সিঙ্গারা নিয়ে যান। রাত আটটার সময় সে ওই বাড়িতে যায়। সেখানে আঁখ, সিঙ্গারা খেয়ে-দেয়ে রাত দশটার মধ্যে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। আক্তারকেও ঘরের মেঝেতে ঘুমাতে দেন। এর আগে টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্য হয়।’
মীর মহসীন মাসুদ রানা আরও বলেন, ‘এ রাগে-ক্ষোভে রাত প্রায় দুইটার দিকে প্রথমে মাহমুদা আক্তারকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে করে হত্যা করে। এসময় মাহমুদার একমাত্র ছেলে শাহেদ (৯) ও ভাসুরের মেয়ে তিশামণি (১৪) ঘুমিয়ে ছিল। আক্তার মনে মনে চিন্তা করে আমি যে, এই ঘরে ছিলাম শাহেদ ও তিশামণি দেখছে, তারা তো সকালে লোকজনের কাছে বলে দিবে। এই ধারণা থেকে কোনো সাক্ষী না রাখতে ঘুমন্ত শাহেদ ও তিশামণিকে একই কায়দায় হত্যা করে। পরে কাঠের একটি ফালি দিয়ে মাথায় আঘাত করে থেঁতলে রক্তাক্ত জখম করে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে ভোরে ফজরের নামাজের আগেই আক্তার পালিয়ে যায়।’
প্রকাশ, বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বড় ঘাগটিয়া গ্রামের শাহপরানের ঘর থেকে তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (২৭) একমাত্র ছেলে শাহেদ (৯) ও তার ফুফাত ভাইয়ের মেয়ে দুলালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী তিশামণি (১৪) এর লাশ উদ্ধার করে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। পরে এ ঘটনায় নিহত মাহমুদা আক্তারের বাবা উপজেলার শ্রীমদ্দি গ্রামের বাসিন্দা মো. আবুল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হোমনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পরদিন শুক্রবার প্রযুক্তির মাধ্যমে হোমনা পৌরসভার শ্রীমদ্দি চরেরগাঁও গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর শনিবার তার জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য কুমিল্লায় ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট পাঠানো হয়। জবানবন্দি রেকর্ডের পর তাকে সেখান থেকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। সূত্র: ইত্তেফাক
চস/স