কোরবানির আগে ও পরে পশুর বর্জ্য অপসারণে সবার সহযোগিতা চেয়েছে সরকার। শুক্রবার সরকারি এক তথ্য বিবরণী এবং স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ আনুরোধ করা হয়। সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, সবার সুস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কোরবানির দিন দ্রুততম সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য জনগণের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, কোরবানিকৃত পশুর রক্ত, নাড়িভুড়ি, গোবর, চামড়া ইত্যাদি সুষ্ঠুভাবে অপসারণ না করলে চারদিকে দুর্গন্ধময় পরিবেশের সৃষ্টি হতে পারে। এ বর্জ্য নর্দমায় ফেললে রোগ জীবাণু ছড়িয়ে মানুষকে আক্রান্ত করে। প্রায় ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বজ্যের চাপে ড্রেন বা নর্দমা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার অল্প বৃষ্টিতে নর্দমা আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে। তথ্য বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, সচেতনতার অভাবে জবাইকৃত পশুর রক্ত এবং অপ্রয়োজনীয় অংশ নর্দমাসহ যেখানে সেখানে ফেলার কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই বিস্তারসহ পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে।
এ পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে কোরবানির সময় শহর থেকে গ্রামের সবখানে সবাইকে কিছু সামাজিক দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, সরকার নির্ধারিত স্থানে ও পরিষ্কার জায়গায় পশু কোরবানি দিতে হবে। রক্ত শুকিয়ে যাওয়ার আগেই ধুয়ে ফেলতে হবে। মাটিতে গর্ত করে তার মধ্যে রক্ত, গোবর ও পরিত্যক্ত অংশ মাটিচাপা দিতে হবে। বর্জ্য অপসারণ এবং মাংস বিতরণে পরিবেশসম্মত ব্যাগ ব্যবহার করার চেষ্টা করতে হবে। পশুর হাড়সহ শক্ত বর্জ্য ও অন্যান্য উচ্ছিষ্টাংশ যেখানে-সেখানে না ফেলে ব্যাগে ভরে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত জায়গায় ফেলতে হবে। জীবাণু যাতে না ছড়ায় তার জন্য কোরবানির স্থানে ব্লিচিং পাউডার বা জীবাণুনাশক ছড়িয়ে দিতে হবে।
পাশাপাশি সড়ক ও মহাসড়কে পশুর হাট না বসানোর জন্যও সরকারের পক্ষ থেকে সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ আনুরোধ করা হয়। এছাড়াও কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় পশু কোরবানি করা হলে আয়োজকদের স্ব-উদ্যোগে সেখান থেকে বর্জ্য অপসারণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারাদেশে কোরবানির পশু নির্দিষ্ট স্থানে জবাই নিশ্চিত করতে সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে। কোনোভাবেই উন্মুক্ত স্থানে কিংবা সড়কে কোরবানি দেওয়া যাবে না।
এদিকে প্রতিটি হাটে ভেটেরিনারি সার্জনের সমন্বয়ে মেডিক্যাল টিমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেডিক্যাল টিম ক্ষতিকর স্টেরয়েড প্রয়োগকৃত পশু ও অসুস্থ পশু শনাক্ত করবে এবং এ ধরণের পশু যাতে পশুর হাটে প্রদর্শন বা বিক্রি না হয় সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া মসজিদের ইমামদের নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানির উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে জনগণকে সচেতন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অপরদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোরবানির পশুর হাট ও কোরবানির পশু জবাই কার্যক্রমের নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোরবানির পশুর হাটে জাল নোট শনাক্তকরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
চস/আজহার