‘আলোর পথে’ একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন। নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানার পাল্লা বাজারের আশপাশের কয়েকজন বন্ধু মিলে গড়ে তোলেন এই সংগঠনটি। চায়ের কাপের আড্ডা থেকেই ২০১৮ সালের ১ মে এর জন্ম।
সংগঠনের কার্যক্রম দেখে সত্যি যে কেউ মুগ্ধ হবে। প্রধান লক্ষ্য সেইসব মানুষের পাশে দাঁড়ানো, যারা লজ্জায় চেয়ে নিতে পারেন না, বলতে পারেন না তাদের ঘরে খাবার নেই।
তিন বছরের পথচলায় এ পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ টাকা সংগঠনটি মানুষের জন্য ব্যয় করেছে। সদস্যরা কারও কাছে টাকা চান না, কোনো ধরনের চাঁদাও তোলেন না। সবচেয়ে বড় বিষয়, তাদের বড় কোনো দাতাও নেই। বন্ধুরা মিলেই টাকা সংগ্রহ করেন। সেই টাকাই তারা কোনো এক রাতের অন্ধকারে সেসব মানুষের জন্য ব্যয় করেন, যারা দিনের আলোতে সাহায্য নিতে লজ্জ্বা পান। যদিও সংগঠনটি দরিদ্রদের সাহায্য করে, তবে মধ্যবিত্তদের জন্য তারা সবসময় প্রস্তুত থাকে।
সংগঠনটি একসঙ্গে বেশি পরিবারকে সাহায্য করে না, অল্প সংখ্যক পরিবারকে সাহায্য করে। কিন্তু সেটা করার মতো করে। যেমন তারা রমজানে ইফতার সামগ্রী দেয়, সেটা এক মাসের জন্য। শুধু তাই নয়, পরিবারের সদস্য সংখ্যা কতজন, সেই হিসাব করে এক মাসের জন্য দেয়। এভাবে করোনার সময় ত্রাণ, শীতকালে শীতবস্ত্র, ঈদে দরিদ্র শিশুদের জামা-কাপড়, অসহায় মেয়ের বিয়েতে দান, এতিম শিশুদের পড়াশোনায় দান, দরিদ্র পরিবারে সন্তান প্রসবের সময় দান, মসজিদ, মাদ্রাসায় সাহায্য করা সবকিছুতেই তারা কোয়ান্টিটির দিকে লক্ষ না রেখে কোয়ালিটির দিকে লক্ষ্য রাখে। অর্থাৎ কম সংখ্যক মানুষকে সাহায্য করবে এবং সেটা পর্যাপ্ত পরিমাণে সাহায্য হবে।
সংগঠনটির বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ২০ জন। স্থানীয়রাও এদের কাজে মুগ্ধ হয়ে প্রশংসা করছেন। এ বিষয়ে সংগঠনের সভাপতি নাজমুল হক নাহিদ বলেন, আমরা মূলত সবাইকে সাহয্য করার চেষ্টা করি। কিন্তু দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনেকেই আছেন। আবার তারা চেয়ে নিতেও পারেন। সেক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তরা অনেক সময় সেটা পারেন না। আমরা তাই তাদের দিকে ফোকাস দেই একটু বেশি।
সভাপতি আরও বলেন, প্রথমে আমাদের একটা লক্ষ্য ছিল সংগঠনের জন্য অফিস করা। পরবর্তী সময়ে চিন্তা হলো এই অফিসের টাকাও যদি মানুষের জন্য ব্যয় করা হয়, তাহলে আরও কিছু পরিবারের মুখে হাসি ফুটবে। সেদিক বিবেচনা করে আমরা কোনো অফিস নেইনি।
চস/আজহার