পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে রোববার (২৩ নভেম্বর) সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।
শীতের তীব্রতা প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়তে থাকায় জেলার সর্বত্র এখন শীতের উপস্থিতি স্পষ্ট। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত হিমেল বাতাস আর বাড়তি আর্দ্রতা স্থানীয়দের শীতঘুম ভাঙার আগেই নতুন মৌসুমের বার্তা দিচ্ছে। তবে ঘন কুয়াশা না থাকায় রাস্তাঘাটে চলাচলে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। ভোরের হালকা কুয়াশা কাটার পর সূর্যের দেখা মিললেও আর্দ্রতা বেশি থাকায় শরীরে শীতের অনুভূতি আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
এর আগের দিন শনিবার (২২ নভেম্বর) একই সময়ে তেঁতুলিয়ার তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতাও ছিল আরও বেশি—৯৯ শতাংশ। দুপুরে রোদের উজ্জ্বলতা থাকলেও দিন ও রাতের তাপমাত্রার বড় পার্থক্যের কারণে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের জোর যেন স্পষ্টভাবে অনুভূত হচ্ছে।
দেবীগঞ্জ, বোদা, আটোয়ারী, পঞ্চগড় সদর এবং আশপাশের সব এলাকায় ভোর থেকে বইছে শীতল বাতাস। স্থানীয়রা বলছেন, কয়েক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতের অনুভূতি হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। অনেকেই ইতোমধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী গরম পোশাক ব্যবহার শুরু করেছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়াবিদ জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, গত সপ্তাহজুড়ে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রির আশপাশে ছিল। তবে রোববার তা আরও কমে এসেছে। তিনি আরও বলেন, আগামি সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও নিচে নামতে পারে। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই উত্তরাঞ্চলে শীত জেঁকে বসবে বলেও আশঙ্কা করছেন তিনি।
এদিকে শীতের আগাম বার্তায় জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে উষ্ণ পোশাকের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। রিকশাচালক, দিনমজুর, কৃষকেরা সকালে কাজ করতে বের হয়ে পড়ছেন বাড়তি শীতের সঙ্গে লড়াই করে। যদিও শীতের তীব্রতা বাড়লে নিম্নআয়ের মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা যেভাবে ক্রমশ নিচের দিকে নামছে, তাতে জেলাজুড়ে শীতের পরিধি আরও বিস্তৃত হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েকটি অঞ্চলে সকালের কুয়াশা বৃদ্ধি ও সন্ধ্যার পর বাতাসে ঠাণ্ডার মাত্রা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। শীতের আগমনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসনও প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ বছরের শীত কেমন হবে, তা নিয়ে প্রত্যেক শীতপ্রধান জেলার মানুষের মধ্যেই কৌতূহল। তবে আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস বলছে, পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চল এবারও দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শীতপ্রবণ অঞ্চলের তালিকায় থাকবে। ফলে জেলার মানুষকে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে শীতের প্রকৃত চেহারা দেখার জন্য।
চস/স


