spot_img

১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শনিবার
২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পুলিশ কমিশনারের সাথে মতবিনিময়ে

মাদক ও যানজট নিরসনে সহযোগিতা চাইলেন সুজন

মাদক, কিশোর গ্যাং এবং যানজট নিরসনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়’র সহযোগিতা চাইলেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।

আজ রবিবার (২৪ মার্চ ২০২৪ইং) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে নগরীর বিভিন্ন নাগরিক সমস্যা নিরসনে মতবিনিময় করেন সুজন।

এসময় সুজন বলেন, চট্টগ্রাম নগরী বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী। এখানে রয়েছে পাহাড়, নদী এবং সাগরঘেরা মনোরম পরিবেশ। পাশাপাশি রয়েছে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, বিমান ঘাটি, নৌ ঘাটি, তেল শোধনাগার, কাস্টম, ইপিজেড, ব্যাংক, বীমা, কল কারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান। সঙ্গত কারণেই বিপুল সংখ্যক জনসাধারণের বসবাস এ নগরীতে। তাই এ নগরীর মাদক, কিশোর গ্যাং এবং যানজট নিরসনে পুলিশ কমিশনারের সহযোগিতা চাইলেন তিনি।

তিনি বলেন, রমজান মাসে বিকেলের দিকে গাড়ীর চাপ বেশি থাকে, তাই বিকাল ৪টা থেকে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা এবং সড়ক মোড়গুলোতে গাড়ী থামানো বা পার্কিং করে রাখা কঠোরভাবে বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান তিনি। সরকারী ও বেসরকারী বড় স্কুল এবং কলেজগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে বাস সার্ভিস চালু করা। নগরীর মার্কেটগুলোতে পে-পার্কিং চালু ও নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে পার্কিং বন্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার আহবান জানান তিনি। তাছাড়া নগরীর গণপরিবহন এবং ভাঙা-চোরা সীটসমূহ যাত্রী সাধারনের ব্যবহার অনুপযোগী।

গণপরিবহনকে সুশৃংখল চলাচলে বাধ্য করা এবং ব্যবহার উপযোগী করে চলাচলের ব্যবস্থা করার জন্য পুলিশ কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

মাদকের বেচা-কেনা ও বিস্তার রোধে মাদক কারবারী এবং মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে নগরজুড়ে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করারও আহবান জানান সুজন।

এছাড়া নগরীতে উদ্বেগজনক হারে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ছিনতাই, ধর্ষণ, লুটপাট, মাদক ব্যবসা, খুন, অপহরণ ও যৌন হয়রানিসহ ভয়ংকর সব অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এদের উৎপাত থেকে নগরবাসীকে বাঁচাতে ফুট পেট্রোল চালু, থানার মোবাইল পেট্রোল টিম বৃদ্ধি করাসহ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির জন্য সিএমপি কমিশনারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া দেখা যাচ্ছে যে, স্কুল ও কলেজ চলাকালীন সময়ে নগরীর সিআরবি শিরীষতলা, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, কাট্টলী সী-বীচসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে কতিপয় শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা বাদ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের আড্ডা এবং অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে। এ সকল স্থানে স্কুল ও কলেজ চলাকালীন সময়ে পুলিশী তৎপরতা বৃদ্ধি করা এবং পতেঙ্গা থেকে কাট্টলী সমুদ্র উপকূলে গজে উঠা হোটেল রেস্টুরেন্ট বেলা ২ ঘটিকা পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য সিএমপি কমিশনারের আশু দৃষ্টি কামনা করেন খোরশেদ আলম সুজন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় আন্তরিকতার সাথে সুজনকে তাঁর দপ্তরে স্বাগত জানান। তিনি নাগরিক উদ্যোগ উত্থাপিত প্রতিটি প্রস্তাবনার সাথে সহমত পোষন করেন।

তিনি বলেন, এ নগরীর বিপুল সংখ্যক জনসাধারনের নিরাপত্তাসহ আনুসাঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে পুলিশের সকল সদস্য অত্যন্ত আন্তরিক। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ তার উপর অর্পিত সাংবিধানিক দায়িত্ব অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পালন করছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, এ নগরীতে প্রতিনিয়ত মানুষ বাড়ছে, গাড়ি বাড়ছে কিন্তু সে তুলনায় রাস্তার সংখ্যা বাড়ছে না। এ নগরীতে কোন বাস কিংবা ট্রাক টার্মিনাল নাই। ভারী যানবাহনগুলো যত্রতত্র পার্কিং করে যানজট বাড়াচ্ছে। অবৈধ এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাখার জন্য কোন ডাম্পিং স্টেশন নেই। ভাঙা-চোরা গাড়ি প্রতিদিন নগরীতে যাত্রী পরিবহন করছে। যারা এসব গাড়ি চালাচ্ছে তাদের ট্রাফিক সিগন্যাল সম্পর্কে সচেতনতা নেই। ফলত যেখানে সেখানে যাত্রী উঠানামা করতে গিয়ে যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বন্ধে পুলিশ কাজ করছে জানিয়ে নগরীর প্রতিটি থানাকে এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা প্রদানের কথাও জানান তিনি। মাদক কারবারী এবং মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে পুলিশ প্রশাসন। মাদক কারবারীদের ধরতে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। আইন শৃংখলা রক্ষা করা এবং জনগনের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে জিরো টরালেন্স নীতি অনুসরন করা হচ্ছে। এছাড়া বিনোদন কেন্দ্রসমূহে অনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে এবং নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়।

 

চস/আজহার

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss