spot_img

৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার
১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বশেষ

জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসর আজ

বছর ঘুরে আবারও এসেছে জব্বারের বলীখেলা। ১২ বৈশাখ তারিখটা যেন এতদ অঞ্চলের মানুষের কাছে বেশ পরিচিত। কারণ এই তারিখটিতেই যে লালদীঘি পাড়ে বসে জব্বারের বলী খেলা। জব্বারের বলী খেলাকে ঘিরে বসা বৈশাখী মেলা যেমন এতদ অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় তেমনি জব্বারের বলী খেলাটাও সমান জনপ্রিয়। বিশেষ করে যারা এই আধুনিক যুগেও বলী খেলাটাকে বাঁচিয়ে রেখেছে তাদের জন্য এই বলী খেলা যেন আরাধ্য। তাইতো প্রতি বছরই বলীদের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪৭ জন বলী আয়োজকদের কাছে নাম নিবন্ধন করেছে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা। এর বাইরে গত আসরের চার সেমিফাইনালিস্ট বাঘা শরীফ, রাসেল, রাশেদ এবং সৃজন চাকমাও এবারের বলী খেলায় অংশ নেওয়াটা নিশ্চিত করেছে। এদের সাথে আসছে রুবেল চাকমাও। যিনি ইতোমধ্যেই বেশ সাড়া জাগিয়েছে বেশ কয়েকটি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। বলা যায়, জব্বারের বলী খেলার ১১৬তম আসর যেন আগেরবারের চাইতে বেশি জমজমাট হওয়ার আভাস দিচ্ছে।
এরই মধ্যে লালদীঘি মাঠের মাঝখানে প্রস্তুত করা হয়েছে মঞ্চ। যে মঞ্চে নিজেদের শ্রেষ্টত্ব প্রমাণ করতে লড়াই করবে বলীরা। একটা সময় ছিল জব্বারের বলী খেলায় দক্ষিণ চট্টগ্রাম এবং কঙবাজার এলাকার বলীদের আধিপত্য ছিল। দীর্ঘদিন তারা শ্রেষ্টত্বের মুকুট পড়েছে এই বলী খেলায়। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় দক্ষিণাঞ্চলের বলীদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে কুমিল্লা অঞ্চলের বলীরা নিজেদের শ্রেষ্টত্ব দেখাচ্ছে। এবারেও যদি তেমনটি হয় তাহলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

আজ বিকেলে বলী খেলার উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ। আর খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ করবেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এবারে জব্বারের বলী খেলায় শিরোপা কে জিতবে তা নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। উৎসুক মানুষ গতকাল থেকে লালদীঘি মাঠের মঞ্চ ঘিরে ভীড় করছিল।
একটা সময় ছিল গ্রামীণ খেলাধুলার মাঝে বেশ জনপ্রিয় ছিল গরুর লড়াই এবং বলী খেলা। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সে সব এখন হারিয়ে গেছে। তবে হাতে গোনা কয়েকটা বলী খেলার আসর এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। যাদের মধ্যে অন্যতম জব্বারের বলী খেলা। আধুনিক এই যুগে জব্বারের বলী খেলা যেন আরো বেশি আবেদন সৃষ্টি করছে। আধুনিকতার ছোঁয়া নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে শতবর্ষী এই বলী খেলা।
সেই ১৯০৯ সাল থেকে আবদুল জব্বার সওদাগর, পরবর্তীতে তার সন্তানরা এবং বর্তমানে তার নাতিরা এই বলী খেলাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তিন প্রজন্মের হাত ধরে জব্বারের বলী খেলা যেন ক্রমশ উজ্জ্বল্য ছড়াচ্ছে। জব্বারের বলী খেলার শান আর মানের কথা চিন্তা করলে তা যেন বলীদের কাছে মহা আরাধ্য। কিন্তু মর্যাদাকর ট্রফিটা ছাড়া এই বলী খেলার প্রাপ্তি তেমন কিছু নেই। গত আসরে চ্যাম্পিয়ন বলীকে দেওয়া হয়েছিল ট্রফিসহ নগদ ৩০ হাজার টাকা। রানার আপকে দেওয়া হয় ট্রফিসহ নগদ ২০ হাজার টাকা। তৃতীয় স্থান অর্জনকারীকে দেওয়া হয় ট্রফিসহ নগদ ১০ হাজার টাকা। তবে এবারের আসরে কত টাকার প্রাইজ মানি দেওয়া হবে তা অবশ্য জানানো হয়নি আয়োজকদের পক্ষ থেকে।

গতকাল থেকে অনেক বলী দূর–দূরান্ত থেকে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছে। তাদের থাকার জন্য লালদীঘি পাড়স্থ সিটি কর্পোরেশনে পাবলিক লাইব্রেরি ভবনে ব্যবস্থা করেছে আয়োজক কমিটি। যদিও অনেকেই সেখানে থাকেন না। তারা যে যার যার মত হোটেলে থাকে। তবে আজ বেলা ১২টার আগে সবাইকে সিটি কর্পোরেশন পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এসে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। বিকেল ৩টা থেকে শুরু হবে বহুকাঙ্ক্ষিত এই বলী খেলা।

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss