কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আজ মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) ভোররাতে অভিযান চালিয়ে ১৫ নম্বর জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গা থেকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসার কথিত কমান্ডার সেলিম প্রকাশ ওরফে মাস্টার সেলিমসহ আটজনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছে ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এর সদস্যরা।
মঙ্গলবার সকালে ৮ এপিবিএন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিডিয়া মো. কামরান হোসেনের দেওয়া এক প্রেস রিলিজ থেকে জানা যায়।
তিনি জানান, গতকাল সোমবার রাতে উখিয়া উপজেলার জামতলী ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাহাড়ি এলাকায় একদল রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতির খবর পেয়ে ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এপিবিএন এর একটি টিম ক্যাম্পে ব্লক রেইডের সিদ্ধান্ত নেয়। এমন সংবাদের ভিত্তিতে জামতলী এপিবিএন ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা ভোর রাতে ক্যাম্পের ব্লক-ডি/১৩ এর উল্লিখিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান চলাকালে পুলিশ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ১৩ নম্বর ক্যাম্পের আমির হোসেনের ছেলে এনায়েত উল্লাহ (২০), ১৯ নম্বর ক্যাম্পের আব্দুল আমিন (২৮), ১৩ নম্বর ক্যাম্পের নুর মোহাম্মদ (২৯), ১৪ নম্বর ক্যাম্পের রফিক (২১), ১৫ নম্বর ক্যাম্পের মো. রফিক (২৫), একই ক্যাম্পের ফিরোজ মিয়া(২২), ১৩ নম্বর ক্যাম্পের মো. আরিফ উল্লাহকে (৩২) আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে কাঠের বাটযুক্ত লোহার তৈরি দা, কাঠের বাটযুক্ত হাসুয়া, লোহার রডের তৈরি শাবল, সিমকার্ড, মোবাইল ফোন, নোট বুক উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ১৫ নম্বর ক্যাম্পের সিআইসি অফিসের সামনে থেকে এই সন্ত্রাসী গ্রুপের লিডার মো. সেলিম ওরফে মাস্টার সেলিমকে (২৬) আটক করে পুলিশ।
এপিবিএন এর পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামি(১) এনায়েত উল্লাহ, (২) আব্দুল আমিন, (৩) নূর মোহাম্মদ, (৪) মোঃ রফিক (২১), (৫) মো. রফিক (২৫) ও (৬) মো. আরিফ উল্লাহ আরসার অন্যতম নেতা আনাস এর ঘনিষ্ঠ সহচর এবং আরসা সদস্য, গ্রেপ্তারকৃত ৬নং আসামি ফিরোজ মিয়া চিহ্নিত মাদক কারবারি এবং আরসার অন্যতম সদস্য এবং ৮নং আসামি গ্রেপ্তারকৃত সেলিম আরসার স্থানীয় কমান্ডার। গ্রেপ্তার রোহিঙ্গা এই সন্ত্রাসীদের উখিয়া থানায় হস্তান্তর করেছে এপিবিএন পুলিশ।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিজ অফিসে খুন হন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ। ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে মুহিবুল্লাহর ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মুহিবুল্লাহকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ কথিত আরসার সদস্যরা খুন করেছে বলে সাধারণ রোহিঙ্গারা অভিযোগ করেছেন। এর পর থেকেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এপিবিএন ও থানা পুলিশ নিয়মিত ব্লক রেইড দিয়ে আসছে। মুহিব্বুল্লাহ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ইলিয়াস আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পগুলোতে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত কথিত আরসা সদস্যসহ ৩০ জনেরও বেশি সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চস/স