চলমান এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অপচেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
আজ রোববার রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
এই সময় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ এবং ঢাকা বোর্ডের চেয়ার ও আন্তঃবোর্ড সমন্বয়ক অধ্যাপক তপন কুমার সরকার উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে অভিনব কায়দায় প্রশ্নফাঁসের চেষ্টা হয়েছিল। ওই পরীক্ষায় যেসব ছোটখাটো ব্যত্যয় ঘটেছে তা বিশ্লেষণ করে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। কেউ যদি কোথাও প্রশ্নফাঁসের অপচেষ্টা করে তাহলে আমরা সবাই মিলে তা প্রতিরোধ করব। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কেন্দ্র পরিদর্শনের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কেন্দ্র ঘুরে দেখলাম বাইরে অভিভাবকদের অনেক ভিড়। যারা আগে এসেছেন তারা সন্তানকে ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে অপেক্ষা করছেন। তাদের এত ভিড় যে, বাকি পরীক্ষার্থীদের ঢুকতে সমস্যা হচ্ছে। অভিভাবকদের আমি অনুরোধ জানাব, সন্তানকে কেন্দ্রে দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্র ত্যাগ করবেন। তাহলে কোনো পরীক্ষার্থীর কেন্দ্রে ঢুকতে সমস্যা হবে না।’
কোচিং সেন্টার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘কোচিং বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে। আর একই কোচিং সেন্টারে অনেক ধরনের কোচিং চলে। এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা বোর্ডের পক্ষে একা বন্ধ করা সম্ভব নয়। স্থানীয় প্রশাসনেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘কোচিংয়ের প্রয়োজন আছে। ক্লাসে এত শিক্ষার্থী, সবার প্রতি শিক্ষকদের আলাদা নজর দেয়া সম্ভব নয়। তবে নতুন যে শিক্ষাক্রম, তাতে কোচিংয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না বলে আশা করি।’
আগামী বছরের পরীক্ষা এগিয়ে আনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবার আমরা চেষ্টা করেছিলাম জুলাই-আগস্টে পরীক্ষা নিয়ে আসতে। কিন্তু দেশের একটি অঞ্চলে বন্যার কারণে পরীক্ষা নিতে দেরি হয়ে গেল। আগামী বছর আরও এগিয়ে আনার চেষ্টা করবো। আর আগামীতে যদি কোনো অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয় তাহলে সেই বোর্ডের পরীক্ষা সাময়িক বন্ধ রেখে অন্য বোর্ডের পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করব। যত দ্রুত সম্ভব ওই বোর্ডের পরীক্ষাও নেব।’
পরীক্ষায় ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ শিক্ষার্থী
করোনা পরিস্থিতি ও বন্যার কারণে কয়েক দফায় সাত মাস পেছানোর পর আজ শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা। গত বছরের মতো এবারও বিষয়, নম্বর ও সময় কমিয়ে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এবার এইচএসসিতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন। তাদের মধ্যে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭১৩ শিক্ষার্থী। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ৯৪ হাজার ৭৬৩ জন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি বিএম, ভোকেশনাল এবং ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে এক লাখ ২২ হাজার ৯৩১ শিক্ষার্থী।
নয় হাজার ১৮১টি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীরা দুই হাজার ৬৪৯টি কেন্দ্রে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দিচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর এক লাখ ৯৬ হাজার ২৮৩ জন কম পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। গত বছর পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন।
চস/আজহার