বছরের দীর্ঘতম রাত আজ (২১ ডিসেম্বর)। বছরের এ দিনে সূর্য তার দক্ষিণায়নকালে নিরক্ষরেখা অতিক্রম করে মকরক্রান্তি রেখায় পৌঁছায়। এর ফলে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে নেমে আসে পৃথিবীর দীর্ঘতম রাত আর ২২ ডিসেম্বর ক্ষুদ্রতম দিন। সূর্যের এ পরিক্রমকে বলে দক্ষিণ অয়নান্ত। তবে বিপরীত অবস্থা থাকবে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধে।
কেন ২১ তারিখ বছরের দীর্ঘতম রাত তা জানতে হলে সেই ছোটবেলার ভূগোল বইয়ের পাঠে ফিরে যেতে হবে। জানতে হবে সূর্যের উত্তরায়ন ও দক্ষিণায়নের গতিপ্রকৃতি।
কেন আজকের রাত সবচেয়ে বড় হয়, এর বৈজ্ঞানিক ব্য়াখ্যা আছে। আমরা জানি ঋতু ছয়টি। ঋতু বদলের সঙ্গে দিন ও রাতের সময়কালও বদলায়। বছরের ৩৬৫ দিন কখনও সমান থাকে না। কখনও দিন বড় রাত ছোট হয়, আবার কখনও তার উল্টো। ঠিক এভাবেই বছরে এমন একটা দিন আসে যেখানে দিন সবচেয়ে ছোট হয়, এবং রাত সবচেয়ে বড়। আবার এর উল্টাটাও হয়।
সৌরজগতের নিয়ম অনুযায়ী পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরার সময় একদিকে একটু হেলে থাকে। ফলে কখনও উত্তর গোলার্ধ সূর্যের কাছাকাছি আছে, আবার কখনও দক্ষিণ গোলার্ধ। ২১ জুন দিনটাতে উত্তর গোলার্ধ সূর্যের কাছাকাছি থাকে। তাই সূর্যের রশ্মি দীর্ঘসময় পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে পড়ে। সূর্য এদিন কর্কটক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে বা খাড়াভাবে কিরণ দেয়। তাই মনে হয় দিন শেষই হচ্ছে না।
মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে দেশগুলোতে বেশি পরিমাণ সূর্যালোক পৌঁছায়। এর ফলে এই সময়কালে সেইসব দেশে গ্রীষ্মকাল থাকে। বিজ্ঞানের ভাষায় একেই বলে ‘সামার সলসটিস’ (Summer Solstice ) বা উত্তরায়ণ। এরপর থেকে দিন ছোট হয়ে শুরু করে।
ডিসেম্বর মাস থেকে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলতে থাকে, উত্তর গোলার্ধ চলে যায় অনেকটা দূরে। এই সময় উত্তরে সূর্যের আলো ক্ষীণভাবে পড়ে ফলে সেখানে তখন শীতকাল, আর দক্ষিণে গরমকাল।
২১ ডিসেম্বর দিনটিতে উত্তর গোলার্ধ সূর্যের থেকে অনেকটাই দূরে থাকে। ফলে সেখানে সূর্যের আলো অতটাই কম পড়ে যে দিন খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় বলে মনে হয়। রাত হয় দীর্ঘ। একে বলে উইন্টার সলসটিস (Winter solstice) বা সূর্যের দক্ষিণায়ন। এই সময় দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড় হয় আর উত্তর গোলার্ধে রাত দীর্ঘতম হয়।
চস/স