spot_img

২৮শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, সোমবার
১৩ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সর্বশেষ

হাত, পা ও কোমরসহ শরীরের কয়েক জায়গায় ভাঙা ছিল রুম্পার

ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার মৃত্যু এখনো রহস্যাবৃত।

অনেকটা অন্ধকারেই রয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। উত্তর খুঁজছেন নানা প্রশ্নের। এটি হত্যাকান্ড  নাকি আত্মহত্যা এ বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেননি তারা। আবার হত্যাকান্ড  হলে মৃত্যুর আগে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন কি-না এ প্রশ্নেরও উত্তর মেলেনি গতকাল পর্যন্ত। অন্যদিকে গতকাল সকালে রুম্পার মরদেহ ময়মনসিংহে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) রাজীব আল মাসুদ বলেন, আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। তবে সম্ভাব্য সব দিক গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, রুম্পাকে ভবন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। যদিও এই ঘটনায় কে বা কারা জড়িত সে ব্যাপারে পরিবার ও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে গত বুধবার একটি বিষয় নিয়ে রুম্পা তার মা নাহিদা আক্তারের সঙ্গে ঝগড়া করে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরে পুনরায় আর সে বাসায় যায়নি। ভবনের নিচ থেকে তার ব্যাগ উপরে পাঠিয়ে দিয়েছে। এরই মধ্যে নাহিদা আক্তারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন তারা। রুম্পার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ড. সোহেল মাহমুদ জানান, নিহত তরুণীর হাত, পা ও কোমরসহ শরীরের কয়েক জায়গায় ভাঙা ছিল। ভবন থেকে পড়ে মারা যাওয়ার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না তা জানতে আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। গতকাল রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলের পাশে তিনটি ভবন আছে। এগুলোর কোনো একটি থেকে পড়ে রুম্পা মারা গেছেন। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, মামলা তদন্তাধীন। ইনজুরিগুলো দেখে মনে হচ্ছে উঁচু কোনো জায়গা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। তার শরীর থেকে আলামত সংগ্রহ করে ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছে। এর আগে গত বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরীর ৬৪/৪ নম্বর বাসার নিচে ওই ছাত্রীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। যে জায়গায় এ ঘটনা, তার আশপাশে বেশকিছু ছেলে ও মেয়েদের  হোস্টেল রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নিহত রুম্পার বাবার নাম রোকন উদ্দিন। তিনি হবিগঞ্জ এলাকায় পুলিশ ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত। রুম্পার বাড়ি ময়মনসিংহ হলেও বর্তমানে রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকায় থাকতেন। গতকাল ফজরের নামাজের পর ময়মনসিংহের সদর উপজেলার বিজয়নগর গ্রামের বাড়িতে রুম্পার লাশ এসে পৌঁছলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সকাল ১০টায় জানাজা শেষে দাফন করা হয় রুম্পাকে। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে সুনসান গ্রামটির  হিম-শীতল বাতাসও ভারি হয়ে ওঠে। বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন বাবা রোকন উদ্দিন ও মা নাহিদা আক্তার। তিনি চিৎকার করে বলেন ‘তোরা এত্ত খারাপ’ তোদের মনে মায়া দয়া নেই।  তোরা কোন মায়ের পেট থেকে পড়িসনি, তোদের বিচার যেন দেইখ্যা যাইতে পারি। রুম্পার স্বজন ও এলাকাবাসী বলছেন, রুম্পাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।

চস/সোহাগ

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss