spot_img

২৫শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার
১০ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বশেষ

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে জাতিসংঘে ভোট

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভোটে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব পাস হয়েছে। শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে ১৪২টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, বিপক্ষে মাত্র ১০টি এবং বিরত থাকে ১২টি দেশ। প্রস্তাবটি উত্থাপন করে ফ্রান্স ও সৌদি আরব।

এই প্রস্তাবকে ‘নিউইয়র্ক ঘোষণা’ বলা হচ্ছে। এতে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রচেষ্টা জোরদার করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে—স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হলে সেখানে হামাসের কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকবে না। হামাসকে অস্ত্র সমর্পণ করে গাজার শাসন থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

এরই মধ্যে আরব লিগ প্রস্তাবটির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। গত জুলাইয়ে জাতিসংঘের ১৭টি দেশ এতে সই করেছিল। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গাজার যুদ্ধ থামানো জরুরি। এ জন্য হামাসকে অবশ্যই ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) কাছে ক্ষমতা ও অস্ত্র হস্তান্তর করতে হবে।

জাতিসংঘের এই সমর্থনকে ইসরায়েল ‘লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরেন মারমোর্সটেইন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, সাধারণ পরিষদ ‘বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন এক রাজনৈতিক সার্কাসে পরিণত হয়েছে’।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হুসেইন আল–শেখ একে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনিদের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে।

এমন সময়ে প্রস্তাবটি পাস হলো যখন গাজায় ইসরায়েলের তীব্র হামলা অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হিসাবে, গত ২৩ মাসে ইসরায়েলি হামলায় ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে গাজা নগরী দখলের লক্ষ্য নিয়ে তীব্র অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা, এতে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

অন্যদিকে, পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণে নতুন পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বৃহস্পতিবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চুক্তিতে সই করেন, যার আওতায় দখলকৃত এলাকায় ৩ হাজার ৪০০ নতুন বাড়ি নির্মাণ করা হবে। এর ফলে পশ্চিম তীর কার্যত দ্বিখণ্ডিত হয়ে পড়বে এবং ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পথ আরও সংকীর্ণ হবে।

সই অনুষ্ঠানে নেতানিয়াহু বলেন, ‘কোনো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র থাকবে না—এই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে যাচ্ছি আমরা। এই জায়গা আমাদের।’ এ অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ এ বিষয়ে বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। তিনি সতর্ক করে বলেন, নেতানিয়াহুর এ পদক্ষেপ গোটা অঞ্চলকে ‘নরকের পথে ঠেলে দিচ্ছে’। একই সঙ্গে যেসব দেশ এখনো ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়নি, তাদের দ্রুত এমন পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

চস/স

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss