টিকটক বর্তমানে একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। শিশু,কিশোর,যুবক, বৃদ্ধ সকল বয়সের মানুষ এখন টিকটকের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। টিকটকে ভিড়িও করে রাতারাতি ভাইরাল হওয়ার জন্য কি না করছে এখন। বলা যায় যে টিকটক রীতিমতো মাদকের মত আসক্ত করছে সকল বয়সী মানুষকে। টিকটকের কারণে আমরা অনেক কিছু হারিয়ে ফেলছি। দিনের পর দিন এই টিকটক আমাদের সমাজের একটি বহুল আলোচিত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টিকটকে ভিডিও করার নেশায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছে। যতটা সময় তারা পড়াশোনা করে কাটানোর কথা তার চেয়ে বেশি সময় কাটাচ্ছে টিকটক ভিডিও তৈরিতে। যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। টিকটক ভিডিও তৈরি করে নিজের কাজের ভিন্নতা আনতে অশ্লীলতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এ ধরনের ভিডিও দেখে সমাজের যুব সমাজ আজ যেমন নৈতিকতা হারিয়েছে তেমনিভাবে বেড়ে গিয়েছে ধর্ষণ,সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও অপরাধ।
পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা মিলে, টিকটকে ভিডিও বানাতে গিয়ে গলায় ফাঁস লেগে নিহত হয়েছে ৫ম শ্রেণির শিশু ছাত্রী। আবার সংবাদের শিরোনাম হয়, টিকটকে ভিডিও তৈরি করার জন্য ট্রেনের ছাদে উঠে ছয় টুকরো হয়েছে এক কিশোর। এভাবে নানান ঘটনা আছে। যা সংবাদে উঠে এসেছে। অনেক খবর আবার আডালে রয়ে গেছে।
টিকটকে অভিনয় করার লোভ দেখিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষনের শিকার হয়েছে অনেক তরুণী। এসব নিয়েও অনেক সংবাদ হয়েছে। অথচ এত সব ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও এখনো চালু আছে সামাজিক ব্যাধিতে রুপ নেওয়া এই টিকটক।
বাবা মায়ের অসচেতনতা এক্ষেত্রে মুখ্য ভুমিকা রাখছে। সন্তান কোথায় কি করছে, কি দেখছে তার উপর দৃষ্টি রাখা বাবা মায়ের এখন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। অনেক বাবা মা এই বিষয়টাকে হালকা ভাবে নিয়ে নেন। তারা হাসিমুখেই বলেন “আমার ছেলে তো সারাদিন কি যেন টিকটকে ভিডিও বানায়”। তারা জানেই না এই টিকটক তার সন্তানকে অধপতনের শেষ সীমায় নিয়ে যাবে।
সমাজকে এই ব্যাধি থেকে রক্ষা করার জন্য অবশ্যই বাবা,মা,শিক্ষক সহ সমাজের মানুষকে সচেতন হতে হবে।নানা ধরনের অশ্লীলতা থেকে সন্তানকে রক্ষা করতে অবশ্যই তার সন্তানের গতিবিধির উপর দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।
লেখক: নাসরিন সুলতানা