মিয়ানমারের চলমান বিক্ষোভে নতুন করে গতকাল ৮৯ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৭ মার্চ) দেশটির সশস্ত্র বাহিনী দিবসেই সামরিক বাহিনী এদের গুলি করে হত্যা করেছে। বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।
নোবেলজয়ী নেতা অং সান সু চি এবং তার সরকারের নেতারা ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন। তাদের আটক করে রেখেছে জান্তারা। ক্ষমতাচ্যুত নেতাদের নিয়ে গঠিত গোষ্ঠী সিআরপিএইচের মুখপাত্র ডা. সাশা একটি অনলাইন ফোরামকে বলেন, শনিবার দিনটি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জার দিন। সামরিক জেনারেলরা এই দুই মাসের আন্দোলনে সাড়ে তিনশর বেশি মানুষকে হত্যা করেছে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসকে সামনে রেখে আগেই বিশাল বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীরা। তবে সেই আন্দোলনে গেলে মাথা ও পিঠে গুলি করা হতে পারে বলে শুক্রবার রাতে হুশিয়ারি দেয় জান্তা সরকার।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রপরিচালিত এমআরটিভি নিউজ চ্যানেলে সম্প্রচারিত এক ঘোষণায় বলা হয়, আগের জঘন্য মৃত্যুগুলোর ট্র্যাজেডি থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত যে, [বিক্ষোভে গেলে] আপনি মাথা ও পিঠে গুলি লাগার ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এর পরও পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুসারে শনিবার রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা। এদিন ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়সহ দেশটির বিভিন্ন শহরে শোনা গেছে জান্তাবিরোধী স্লোগান।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউয়ের খবর অনুসারে, সকালে ইয়াঙ্গুনের দালা শহরতলিতে একটি পুলিশ স্টেশনের বাইরে বিক্ষোভরত জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে অন্তত চারজন নিহত এবং ১০ জন আহত হন।
রয়টার্স বলছে, ইনসেন জেলায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তিনজনকে। এর মধ্যে একজন স্থানীয় অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবল দলের খেলোয়াড় ছিলেন।
বিবিসি বলছে, শনিবার সারাদেশে অন্তত ৮৯ জন নিহত হয়েছেন। সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কোনো সাড়া পায়নি রয়টার্স।
আরো পড়ুন: মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৬ বিক্ষোভকারী নিহত
অন্য সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, চারজন প্রাণ হারিয়েছেন পূর্বাঞ্চলীয় লাশিও শহরে, বাগো অঞ্চলে মারা গেছেন আরও চারজন। এ ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হপিন শহরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে আরও একজনকে। মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে সামরিক বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দেশটির জান্তা সরকারের প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেছেন, তারা ‘গণতন্ত্রের জন্য’ লড়াই চালিয়ে যাবেন।
চস/স


