spot_img

২৬শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, শনিবার
১১ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বশেষ

যে ব্যক্তির রোজা আল্লাহর কাছে মূল্যহীন

দেখতে দেখতে পবিত্র মাহে রমজানের ১২টি দিন কেটে যাচ্ছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই ভালো জানেন আমরা কতটা তার রহমত পাওয়ার যোগ্য হয়েছি। তাই এ কয়েক দিনের আত্মবিশ্লেষণ করা উচিত, আমরা যে আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির জন্য রোজাগুলো পালন করছি আসলেই কি আমরা এ দিনগুলোতে তার নির্দেশমত জীবন পরিচালিত করেছি?

আমরা কি মিথ্যা বলাসহ সর্ব প্রকার পাপ থেকে বিরত থেকেছি? আমরা নিষ্ঠার সাথে পাঁচ বেলার নামাজ পড়েছি? আমরা কি দানের হাত প্রসারিত করেছি? আমরা কি আল্লাহর ধ্যানে কিছুটা সময় অতিবাহিত করেছি? যদি আমাদের উত্তর না হয়, তাহলে এই রোজা রাখা আমাদের কোনো কাজে আসবে না।

কেননা রোজা মানুষের মাঝে এক ধরনের বিনয়, ধৈর্য, সর্বপ্রকার পাপ মুক্ত এবং সহ্য-ক্ষমতা সৃষ্টি করে। আর রোজার মাধ্যমে মানুষ তার নিজের নাফসের সংশোধনও করে নেয়।

একজন মুমিনের দায়িত্ব হলো নিজের রোজার মাধ্যমে আল্লাহভীতি অর্জনের চেষ্টা করা এবং ধীরে ধীরে নিজের রোজার স্তরকে উন্নীত করা। কেবল পানাহার থেকে বিরত থাকার নাম রোজা নয় আর তাৎপর্যহীন রোজা মানুষের পার্থিব ও অপার্থিব কোনো কাজে আসে না।

আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলা এবং এর ওপর আমল করা থেকে বিরত থাকেনা আল্লাহ তাআলার জন্য তার উপবাস থাকা এবং পিপাসার্ত থাকার কোন প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ তার রোজা রাখা বেকার বলে গণ্য হবে’ (বোখারি, কিতাবুস সওম)।

অর্থাৎ যখন মানুষ রোজার প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে গাফেল হয়ে যায় তখন সে শুধু নিজেকে উপবাসই রাখে যা আল্লাহতায়ালার জন্য কোন প্রয়োজন নেই। আল্লাহ মানুষের অন্তর দেখেন, কোন নিয়তে সে রোজা রাখছে এটাই মূল বিষয়।

অন্য হাদিসে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘কত রোজাদার আছে, যাদের রোজার বিনিময়ে ক্ষুধা ছাড়া আর কিছুই জোটে না। কত নামাজ আদায়কারী আছে, যাদের রাত জাগরণ ছাড়া আর কিছুই জোটে না’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)।

হজরত ফাতেমা যাহরা (রা.) বলেছেন: ‘যে ব্যক্তি নিজের জিহবা, চোখ, কান সহ অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সংযত করতে পারে না তার রোজা কোন কাজেই আসবে না’ (বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড ৯৩, পৃষ্ঠা ২৯৫)।

একজন ব্যক্তির কেবলমাত্র অভুক্ত আর পিপাসার্ত থাকাই রোজার মূল উদ্দেশ্য নয়। কেননা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন: ‘তোমাদের কেউ যখন কোনদিন রোজা রাখে, সে যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং গোলমাল ও ঝগড়াঝাটি না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা কেউ তার সাথে ঝগড়াঝাটি করে তবে তার বলা উচিত, ‘আমি রোজাদার’ (বোখারি)।

বিশ্বনবী সা: আরেক স্থানে বলেন, ‘যে ব্যক্তি রোজাদার আর সে যদি চুপ থাকে তাহলে সেটাও তার জন্য ইবাদত, তার ঘুমও ইবাদত হিসাবে গণ্য করা হবে। তার দোয়া গ্রহণীয় হবে। আর তার আমলের প্রতিদান বাড়িয়ে দেয়া হবে’।

রমজান পেয়েও যে হতভাগা
জিবরাঈল আলাইহিস সালাম বলেছেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যে রমজান পেয়েও নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না। তার কথার সাথে একমত পোষণ করে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমিন বলেছেন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে রমজানের হক আদায় করার তাওফিক দান করুন এবং নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামমের অভিশাপ থেকে বাঁচার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

চস/আজহার

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss