নৌ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসনের হস্তক্ষেপে শেষ হলো ২০ বছরের জঞ্জাল। বন্দরের ইয়ার্ডের ভেতর পড়ে থাকা প্রায় ৩০০ গাড়ি সরিয়ে নিতে গতকাল মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে ক্রেন দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। এর আগে সকালে বন্দর পরিদর্শনে এসে বন্দরের ইয়ার্ডের ভেতর থেকে সব গাড়ি ও নিলামযোগ্য পণ্য সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।
বন্দরের ভেতরে ডাম্পিং অবস্থায় থাকা ২৯৭টি গাড়ির মধ্যে ২০০২ সালের গাড়িও রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এসব গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য কাস্টমসকে দফায় দফায় অনুরোধ করলেও নেয়নি। এই গাড়িগুলো বন্দরের মূল্যবান জায়গা দখল করে রেখেছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা প্রাইভেট কার-পাজেরো-মাইক্রোবাস এবং পিকআপগুলোর বিপরীতে শুল্ক জটিলতায় রয়েছে কয়েকশো মামলা। আর এই মামলার কারণে আমদানিকারক যেমন গাড়ি ছাড় করাতে পারেনি, তেমনি আইনি জটিলতায় নিলামেও বিক্রি করা যায়নি গাড়িগুলো। বর্তমানে বন্দরের ইয়ার্ডের বাইরে কারশেড এবং ইয়ার্ডের ভেতরে একটি আধুনিক কারশেড করলেও এই ডাম্পিংয়ে এখন আর গাড়ি রাখা হয় না। মামলাসংক্রান্ত জটিলতায় এতদিন আটকে থেকে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল গাড়িগুলো। নিলামের দীর্ঘসূত্রিতায় এসব গাড়ি নিয়ে ভোগান্তিতেও পড়েছিল চট্টগ্রাম বন্দর। এ অবস্থায় গতকাল সকালে নৌ-উপদেষ্টা পরিদর্শনে গিয়ে এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলে দুপুর থেকে শুরু হয় গাড়ি সরানোর প্রক্রিয়া।
দুপুরে বন্দরের পি শেডের কার ডাম্পিং স্পটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেন দিয়ে গাড়ি সরানোর কাজ চলছে। ক্রেনচালক হাসান জাহাঙ্গীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গাড়িগুলো আমরা এখান থেকে সরিয়ে কাস্টমসের নিলাম শেডে নিয়ে যাব। ইতিমধ্যে ২০টি গাড়ি সরানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হবে।’
বন্দর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কার ডাম্পিং শেডের জায়গায় বন্দরের ইয়ার্ড নির্মিত হবে। ইতিমধ্যে অনেকস্থানে ইয়ার্ড নির্মিত হয়েছে। এসব স্থানে ইয়ার্ড নির্মিত হলে কনটেইনার রাখতে সহায়ক হবে এবং বন্দরের কার্যক্রমে গতি আসবে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে নৌ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত প্রথমেই পরিদর্শনে আসেন চট্টগ্রাম বন্দরের এক্স-ওয়াই শেডে। এ সময় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন, অভিযোগ পান চাঁদাবাজিসহ অনিয়মের। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক এ বিষয়গুলোর তদন্তের নির্দেশ দেন নৌ উপদেষ্টা। এর পরেই যান কার অকশন শেডে। কয়েক মাস পার হওয়ার পরও শেডে পড়ে থাকা গাড়ির নিলাম কার্যক্রম গতিশীল না হওয়ায় কাস্টমস কর্মকতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন নৌ উপদেষ্টা। এ সময় ৩১ জানুয়ারির মধ্যে শেডে থাকা গাড়ি এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্ক্র্যাপগুলো নিলামের সময়সীমা বেঁধে দেন।
কাস্টমস আইন অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দরে গাড়ি আসার ৩০ দিনের মধ্যে ডেলিভারি নেওয়া না হলে নিলামে বিক্রি করা যাবে। সূত্র: দেশ রূপান্তর
চস/স