spot_img

২৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, সোমবার
১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সর্বশেষ

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: মৃত বেড়ে প্রায় ৫০ হাজার

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছুঁতে চলেছে। গত ১৯ ফেব্রয়ারি জীবিতদের উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়ে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি)। তবে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ অব্যাহত। সেখানে মিলছে এখনো লাশ।

এএফএডি জানিয়েছে, তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা ৪৯ হাজার ছাড়িয়েছে। ৬ ফেব্রুয়ারির পর এখন পর্যন্ত ১৭ হাজারের বেশি আফটারশক হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ২০০টিরও বেশি আফটারশক ছিল ৫ মাত্রার ওপরে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ডের।

তুরস্ক ও সিরিয়ায় ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করে গৃহহীন হয়ে পড়া লাখ লাখ মানুষের আশ্রয় দেয়ার কাজ করছে। তুরস্কের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, ভূমিকম্পে শুধু তুরস্কে মৃত্যু হয়েছে ৪৩ হাজার ৫৫৬ জনের। গত সোমবার নতুন করে জোড়া ভূমিকম্পে আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

অপরদিকে ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৫ হাজার ৮১৪ জন। এটি কয়েকদিন ধরেই অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশটিতে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বেশিরভাগই সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। এসব কারণে সিরিয়ায় মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

দুই দেশ মিলে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ হাজার ৩৭০ জনে। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বলেছে যে, তারা ভূমিকম্পের ধ্বংসাবশেষ অপসারণ এবং ব্যবস্থাপনায় তুরস্ককে সহায়তা করার পরিকল্পনা করেছে।

জাতিসংঘের সংস্থাটি বুধবার বলেছে যে, তাদের ধারণা এই দুর্যোগে ১১৬ মিলিয়ন থেকে ২১০ মিলিয়ন টন ধ্বংসস্তূপ তৈরি হয়েছে।

টিআরটির খবরে বলা হয়েছে, এই ধ্বংসস্তূপ দিয়ে ৩০ কিলোমিটার বাই ৩০ কিলোমিটারের স্তূপ করা যাবে। ইউএনডিপির তুরস্কের আবাসিক প্রতিনিধি লুইসা ভিনটন বলেন, ‘এটি তুরস্কের ইতিহাসে স্পষ্টতই বৃহত্তম ভূমিকম্প বিপর্যয়। সম্ভবত দেশটিকে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি করেছে।’

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লু বুধবার গভীর রাতে বলেছেন, দক্ষিণ তুরস্কে ৬ ফেব্রুয়ারির শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩,৫৫৬ হয়েছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম ভূমিকম্পগুলির মধ্যে একটি।

মন্ত্রী বলেন যে, ভূমিকম্পগুলি ১ লাখ ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আঘাত করেছিল। এটি তিনটি নেদারল্যান্ডের সমান।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিদেশি সহায়তার সমন্বয়ে মোট ৯০ হাজার ১৫টি তাঁবু, ১৬৭টি কন্টেইনার এবং ৯৯৯টি মোবাইল হাইজিন ইউনিট তুরস্কে আনা হয়েছে।

সহায়তার অংশ হিসেবে ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ২৩৪টি কম্বল, ১ লাখ ৯৬ হাজার ৫৩৮টি স্লিপিং ব্যাগ, ৭৪ হাজার ৭৫০টি বিছানা, ২৬ হাজার ৬২২টি জেনারেটর, ৫,৭২২ টন জামাকাপড়, ৩,০৬৫ টন স্বাস্থ্যসম্মত চিকিৎসা সামগ্রী এবং ৫,৬৭৮ টন খাদ্য পৌঁছেছে।

তবে ভূমিকম্পের পর থেকে ঠিক কতসংখ্যক মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন সেবিষয়ে কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি তুরস্ক এবং সিরিয়া।

তুরস্ক এবং সিরিয়ায় আঘাত হানা ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৫৬ হাজার গর্ভবতী নারী রয়েছেন; যাদের জরুরিভিত্তিতে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা দরকার বলে জাতিসংঘের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সংস্থা (ইউএনএফপিএ) জানিয়েছে।

এই নারীদের মধ্যে তুরস্কের ২ লাখ ২৬ হাজার এবং সিরিয়ার ১ লাখ ৩০ হাজার বাসিন্দা। যাদের মধ্যে প্রায় ৩৮ হাজার ৮০০ জন নারী আগামী মাসে প্রসব করবেন।

উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রয়ারি সকালে ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক এবং সিরিয়া। তার পর অন্তত ১০০ বার জোরালো আফটার শকে কাঁপে দুই দেশের মাটি।

চস/স

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss