spot_img
BETA Version ...
বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩

সর্বশেষ

খুলে দেয়া হলো ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

খুলে দেয়া হলো বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ছয়টা থেকে সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেয়া হয় এই উড়ালসড়ক। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে কাওলা থেকে ফার্মগেটের তেজগাঁও আসতে সময় লাগবে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট।

দেশের প্রথম এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে এক্সপ্রেসওয়েটি। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের দূরত্ব ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত অংশের কাজ। যা শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হলো।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীতে এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেয়া হলে নগরবাসীর দৈনিক যানজটের কষ্ট অনেকটা লাঘব হবে। যে পথ পাড়ি দিতে আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো, এখন সেই পথ পাড়ি দেয়া যাবে ১০ থেকে ১৫ মিনিটে।

উড়ালসড়কের যেসব স্থান দিয়ে ওঠানামা করা যাবে, তা গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে সেতু বিভাগ। উত্তর দিক থেকে কাওলা, প্রগতি সরণি ও বিমানবন্দর সড়কে আর্মি গলফ ক্লাবের সামনে -এই তিন জায়গা দিয়ে উড়ালসড়কে ওঠা যাবে। নামার স্থানগুলো হচ্ছে বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে, ফার্মগেটে ইন্দিরা রোডের পাশে।

দক্ষিণ দিক থেকে ওঠা যাবে বিজয় সরণি উড়ালসড়কের উত্তর ও দক্ষিণ লেন দিয়ে এবং বনানী রেলস্টেশনের সামনে থেকে। দক্ষিণ দিক থেকে উঠে নামা যাবে মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে, বনানী কামাল আতাতুর্ক সড়কের সামনে বিমানবন্দর সড়কে, কুড়িল বিশ্বরোড ও বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের সামনে।

সেতু বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উড়ালসড়কে যানবাহন থেকে নেমে ছবি তোলা নিষেধ। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ২ এবং ৩ চাকার যানবাহন এবং পথচারী চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উপর যে কোন ধরনের যানবাহন দাঁড়াতে পারবে না। এক্সপ্রেসওয়ের মূল সড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার এবং উঠানামার র‌্যাম্পের জন্য সর্বোচ্চ গতিসীমা ৪০ কিলোমিটার রাখতে হবে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চার শ্রেণির যানবাহনের মধ্যে কার, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) এবং হালকা ট্রাকের (৩ টনের কম) টোল ফি (টাকা ও ভ্যাটসহ) নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা, সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা এর বেশি) ক্ষেত্রে ১৬০ টাকা, মাঝারি ধরনের ট্রাকের (৬ চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা, আর বড় ট্রাকের (৬ চাকার বেশি) ক্ষেত্রে ৪০০ টাকা টোল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে পথচারীদের চলাচল এবং বাইসাইকেল চলানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আপাতত মোটরসাইকেল-অটোরিকশার মতো তিন চাকার যানবাহন চলাচল করবে না বলে জানানো হয়েছে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণে ২০১১ সালে সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেসরকারি অংশীদারদের চুক্তি হয়। প্রকল্পের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর সংশোধিত চুক্তি সই হয়।

২০১৪ সালের মধ্যে পুরো উড়াল সড়কের (১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার) কাজ শেষ করার পরিকল্পনা থাকলেও এক যুগ পর ২০২৩ সালে এসে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত (১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার) উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পুরো প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হতে পারে।

এই মেগা প্রকল্পে শুরুতে ৩ হাজার ২১৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও কয়েক দফা তা বেড়ে ১৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এ প্রকল্পে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিডেট ৫১ শতাংশ, চায়না শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ৩৪ শতাংশ এবং সিনো হাইড্রো কোম্পানি লিমিটেড ১৫ শতাংশের অংশীদার। এসব কোম্পানি আগামী ২৫ বছর টোল আদায় করে স্থাপনাটি পুরোপুরি সরকারের কাছে হস্তান্তর করবে।

চস/স

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss