চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণ দিকে বহদ্দারহাট থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কালুরঘাট ব্রীজ একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯১৪ সালে) সৈন্য পরিচালনার জন্য কর্ণফুলী নদীতে ব্রীজের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ব্রীজ নির্মাণের অংশ হিসাবে ১৯৩০ সালে ব্রুনিক এন্ড কোম্পানী ব্রীজ বিল্ডার্স হাওড়া নামক একটি প্রতিষ্ঠান ব্রীজ নির্মাণ কাজ শুরু করে। ১৯৩০ সালে শুধুমাত্র ট্রেন চলাচলের জন্য ৭০০ গজ লম্বা কালুরঘাট সেতু উদ্বোধন করা হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে ব্রীজে ডেক বসানো হয়। দেশ বিভাগের পর ১৯৫৮ সালে ব্রীজটিকে সবরকম যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে বর্তমান রূপ দেওয়া হয়। কালুরঘাট সেতুতে দুইটি এব্যাটমেট, ছয়টি ব্রিক পিলার, বারটি স্টীল পিলার ও উনিশটি স্প্যান রয়েছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বহদ্দারহাটের কাছে স্থাপিত বেতার কেন্দ্রটি ঐতিহাসিক কালুরঘাট সেতুর কারণে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে এবং বেতার কেন্দ্রটিকে কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নামকরণ করা হয়।
কালুরঘাট সেতু কর্ণফুলি নদীর উপর স্থাপিত একটি পুরাতন রেল ও সড়ক সেতু যা একসময় চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাংশকে দেশের অবশিষ্টাংশের সঙ্গে সংযোগ রক্ষার একমাত্র উপায় হিসেবে বিবেচিত ছিল। ১৯৩০ সালে কর্ণফুলি নদীর উপর দিয়ে জানালীহাট এবং গোমদণ্ডী রেলস্টেশনের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে স্টিল কাঠামোর উপর নির্মিত একটি সাধারণ সেতু হিসেবে কালুরঘাট সেতুটি তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ২৩৯ মিটার। চট্টগ্রাম ও দোহাজারী থানার মধ্যে ট্রেন চলাচলের উদ্দেশ্যে ১৯৩১ সালে সেতুটি উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের একত্রিশ বছর পর ১৯৬২ সালে জনগণের দুর্ভোগ বিবেচনা করে সেতুটিতে পাটাতন স্থাপন ও কার্পেটিং করে এটিকে রেলসেতুর পাশাপাশি একটি সড়ক সেতুতে রূপান্তর করা হয়।১৯৮৯ সালে কর্ণফুলি সেতু (শাহ্ আমানত সেতু) নির্মিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কালুরঘাট সেতুটিই ছিল কর্ণফুলি নদীর উপর দিয়ে দক্ষিণ চট্টলাসহ দক্ষিণাংশের সড়ক যোগাযোগের একমাত্র উপায়।
১৯৩০ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র প্রবেশদ্বার কালুরঘাট সেতু। প্রায় শত বছরের কাছাকাছি এই কালুরঘাট সেতুটি মেয়াদ উত্তীর্ণ ও জরাজীর্ণ হওয়ায় দীর্ঘ এক যুগ ধরে নতুন রেল-কাম সড়ক সেতু নির্মাণের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছিল বিভিন্ন মহল। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে প্রকাশ করেছিল মাছরাঙা টেলিভিশন। বর্তমান সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রার্থীদের প্রতিবারই নির্বাচনী ইশতেহারে প্রথম শর্ত থাকতো নতুন কালুরঘাট সেতু উপহার। প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মঈন উদ্দীন খান বাদল কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘ ১১ বছর এমপি থাকাকালীন প্রাণপণ চেষ্টা করেছিল। বারবার দেখতাম এই সেতু বাস্তবায়নের জন্য সংসদে জোড় দাবি জানাতেন। শেষ পর্যন্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার দাবিকে আমলে নিয়ে এ সেতু নির্মাণে আশ্বস্ত করেছিল। শেষবার এমপি নির্বাচনের তার একমাত্র ইশতেহার ছিল এক বছরের মধ্যে কালুরঘাট রেলকাম সড়ক সেতুর বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা। তা না হলে তিনি সংসদ থেকে পদত্যাগ করবে বলেও স্পষ্টভাবে ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু তার পক্ষে আর কালুরঘাট সেতু দেখা হলো না, বছর পূর্তির আগেই তিনি কালুরঘাট সেতু করতে করতে পরলোক গমন করলেন। তৎকালীন এমপির পাশাপাশি আমাদের বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দীন আহমেদও চেষ্টা করেছিল সেতুর জন্য কিন্তু তা স্বত্বেও আমরা নতুন সেতু পেলাম না। বর্তমান মাননীয় সংসদ সদস্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দীন আহমেদ এর নির্বাচনী ইশতেহারের ১ম শর্ত ছিল নির্বাচিত হলে এক বছরের মধ্যে কালুরঘাট সেতু দৃশ্যমান করবে। ঠিকই তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম সংসদ অধিবেশনে কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরেছিলেন। আজো তিনি কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও রেলমন্ত্রনালয়ের সাথে মাঝেমধ্যে সাক্ষাৎ করে খবরা-খবর নিয়ে থাকেন। কিন্তু এ অগ্রগতির শেষ কখন হবে জনসাধারণের মনে প্রশ্ন। কেন এই সেতুর কাজ বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে? কেন এই সেতুর বাজেট একনেকে উঠে আসছেনা? কেন বারবার একনেক থেকে ফিরে আসে সে নিয়ে জনমনে বার বার প্রশ্নজাগে। এই সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে কেন এত বাঁধা?
জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রয়াত মঈনুদ্দিন খান বাদল ২০১৯ সালের ২৬ জুন সংসদ অধিবেশনে সে বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুটি না হলে পদত্যাগের হুমকি দেন। ওই বছরের ৭ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুর কিছুদিন পর প্রধানমন্ত্রী কালুরঘাট সেতুর অগ্রগতি জানতে চান। রেল কর্মকর্তারা কেবল রেল সেতুর নকশা দেখান। তখন রেল কাম সড়ক সেতুর নকশা না করার কারণ জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। রেল কর্মকর্তারা নতুন নকশা তৈরির নির্দেশনার বিষয়টি উল্লেখ করলে প্রধানমন্ত্রী রেলকাম সড়ক সেতুর নকশা তৈরির নির্দেশ দেন।
অর্থায়ন ও নকশা চূড়ান্ত হলেও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আপত্তিতে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কর্ণফুলী কালুরঘাট নতুন সেতু।
রেলের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শুরুতে রেল মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে ৭ মিটার উচ্চতায় সেতুর নির্মাণের সিদ্ধান্তে আপত্তি ছিল না বিআইডব্লিউটিএ-এর। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে নকশা ও বাজেটের চূড়ান্ত হওয়ার পর সেতুর উচ্চতা নিয়ে আসে আপত্তি। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের নতুন নীতিমালা ১২ দশমিক ২ মিটার উঁচুতে সেতু নির্মাণের অনুরোধ জানানো হয়। এ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালি ও আলোচনা চলতে থাকে। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী রেল কাম রোড সেতু নির্মাণের নির্দেশ দেন। এরপর মূলত দ্বিতীয় কালুরঘাট সেতু প্রকল্পে গতি আসে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মো. আহসান জাবির এই বছরের ১৪ই জুন আমাদের সময়কে বলেন, বিআইডব্লিউটিএ সিদ্ধান্ত (নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্স-২) অনুযায়ী ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় সেতু হবে। রেলের প্রস্তাব মতে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে নতুন সেতুর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও ডিটেইল্ড ডিজাইন সম্পন্ন করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বোয়ালখালী, পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি কালুরঘাট রেল-কাম সড়ক সেতুর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের সচিব সেলিম রেজা ও মহাপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ডি এন মজুমদারের সাথে কথা বলেছেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ। গত ৪ এপ্রিল রবিবার দুপুরে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের সচিব সেলিম রেজা বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর বহু আকাক্সিক্ষত কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুটি বাস্তবে রূপ পাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থায়নে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করে দেবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। নতুন কালুরঘাট সেতুর নকশা তৈরির কাজ শেষ হলেই সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন। সরকার চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, উন্নয়নের রোল মডেল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে আন্তরিক এবং কালুরঘাট সেতু নির্মাণের বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন সব কিছু ঠিক থাকলে অতি শীগ্রই কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ আদেশ থাকার পরও এই সেতু নির্মাণে কেন এত বিলম্ব হচ্ছে? কোথায় গাফলতি হচ্ছে? আজো কেন এই সেতুর বাজেট হচ্ছে না? শুধু আশার বাণী শুনে যাচ্ছি আমরা।
একটিমাত্র সেতুই পাল্টে দিতে পারে বোয়ালখালী তথা দক্ষিণ চট্টগ্রামের চেহারা। বাড়াতে পারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আয়তনও। সেই সাথে বোয়ালখালীসহ কালুরঘাট ভারী শিল্প এলাকাটি রূপ নিতে পারে নতুন শিল্প-বিপ্লব ও নগরায়নে। এগিয়ে থাকবে শিক্ষা-দীক্ষায়ও কারণ এই বোয়ালখালী রয়েছে ১৯৩৯ সালে নির্মিত দক্ষিণ চট্টলার উচ্চ শিক্ষার একমাত্র বিদ্যাপীঠ কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজ। যেখান থেকে পড়াশুনা করে বের হয়ে জ্ঞানীগুনী ব্যক্তিগন আজ দেশের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগে পরিচালনার দায়িত্বও পালন করছে, করছে শিক্ষকতাও। শুধুমাত্র একমুখী সেতুর যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যার কারণে তৎকালীন সুপরিচিত সুনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় কলেজও আজ পিছিয়ে আছে।
এই বোয়ালখালীতে রয়েছে পাহাড় বেষ্টিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি জৈষ্ঠ্যপুরা, পর্যটন আকৃষ্ট কড়লডেঙ্গা পাহাড় ও চড়া, পাহাড়ের উপর আছে বোয়ালখালী নামকরণকৃত মহান অলি হযরত শাহ বু-আলী কলন্দর শাহার আস্তানা শরীফ, মেধসমনি আশ্রম, বুড়া মসজিদ,গাউছুল আজম মাইজভান্ডারীর প্রসিদ্ধ সাত খলিফার দরবার, আহলা দরবার শরীফ, চরণদ্বীপ দরবার ও অসংখ্য অলি-আল্লাহর মাজার শরীফ যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন জেয়ারত ও ভ্রমণ করতে আসে।
এই কালুরঘাট রেলকাম সড়ক সেতু হলে শহরসহ রাউজান, রাঙ্গুনিয়ার সাথে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের প্রবক্তা বীরকন্যা প্রীতিলতা সড়কের সাথে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ কক্সবাজারের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠবে, প্রচুরসংখ্যক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাছাড়া দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যে রেললাইন সম্প্রসারণ করা হচ্ছে সেহেতু অতি শীঘ্রই এই কালুরঘাট রেলকাম সড়ক সেতুর কাজ বাস্তবায়ন না করলে ট্রেন চলাচল ঝুকিপূর্ণ হয়ে যাবে। ফলে এত বড় প্রকল্পের কাজ শেষ করেও ট্রেন চলাচল এই সেতু বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে। প্রতিনিয়ত বহু মুমূর্ষু ও ডেলিভারি রোগীর প্রাণ যাচ্ছে এই সেতুতে আটকা পড়ে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কত লোক যানযটে আটকা পড়ায় পায়ে হেটে সেতু পারাপার হয়, মাঝে মধ্যে লোক কাটা পড়ে ট্রেনের নিচে। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী-গামী ট্রেন ও ডেমু ট্রেন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে এই জরাজীর্ণ সেতুর উপর। হঠাৎ এই সেতুর উপর কোন দূর্ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার কে নিবে? একমুখী এই সেতুর উপর মাঝেমধ্যে কোন যানবাহন অবিকল হয়ে পড়লে তা অপসারণ না করা পর্যন্ত ঘন্টার পর ঘন্টা আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। শহরগামী জনগন পড়ে চরম ভোগান্তিতে। প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন ও পঞ্চাশ হাজারেরও অধিক লোকজনের যাওয়া আসা করে এই সেতু দিয়ে।
চট্টগ্রাম শহরের অতি নিকটে অবস্থিত বোয়ালখালী উপজেলাটি আজ কালুরঘাট সেতুর কারণে অবহেলিত, পিছিয়ে আছে শিক্ষা সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে। এই বোয়ালখালীতে করতে হয়নি কোন বাইপাস সড়ক, শত শত কোটি টাকা খরচ করে করতে হয়নি কোন নতুন সড়ক, সংস্কার করার মত নেই তেমন বেশি রাস্তা-ঘাটও শুধু দুইটি প্রধান সড়ক ছাড়া। সেখানে যদি নতুন একটি কালুরঘাট সেতুও যদি উন্নয়নের এই সরকারের কাছ থেকে উপহার না পাই। তাহলে এই অঞ্চলের লোকজন আর কি উপহার পাবে ?
এই অঞ্চলের লোকদের অভিশাপ কালুরঘাট সেতু, বোয়ালখালীবাসীর দুঃখ কি লাঘব হবে না? বর্তমান সরকারের অর্থায়নে যদি পদ্মা সেতু হয়, সেখানে সরকারের কাছে কালুরঘাট সেতু করাটাতো মামুলি বিষয়। যেখানে দেশের বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট নিরসনে এত বড় বড় ফ্লাইওভার নির্মাণ হচ্ছে যেখানে বোয়ালখালী বাসী তথা দক্ষিণ চট্টলাবাসী কি বিকল্প আরেকটি কর্ণফুলী নতুন কালুরঘাট সেতু কি অচিরেই পেতে পারে না? বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের পর সবচেয়ে ব্যস্ততম শহর বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম শহরের অতি নিকটবর্তী এ সেতু। এ সেতু নির্মাণে এত বাঁধা কেন তা বোয়ালখালীবাসী তথা দক্ষিণ চট্টলার জনমনে
বারেবার প্রশ্নই থেকে যায়। বর্তমান সরকারের উন্নয়নে পাল্টে যাচ্ছে দেশের অলিগলি গ্রাম হচ্ছে শহর। সেখানে আজো অবহেলিত বোয়ালখালী, বড় বাঁধা কালুরঘাট জরাজীর্ণ একমুখী সেতু।
মনে করেছিলাম মুজিব শতবর্ষে, স্বাধীনতার ৫০ বছরের সুবর্ণ জয়ন্তীতে এ সেতুটির কাজের বাস্তবায়ন দেখব। কিন্তু তা আর হলো না, বছরটিই শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বোয়ালখালী তথা দক্ষিণ চট্টলাবাসীর প্রাণের দাবি কালুরঘাট রেলকাম সড়ক সেতুর অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন। তিনি যেন এই সেতুটি অতি সত্বর নির্মাণের জন্য আদেশ দেয় এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে যেন একনেকে পাশ করে। আমাদের মাননীয় এমপি মহোদয় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন জননেতা আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দীন আহমদের অক্লান্ত পরিশ্রম যেন সার্থক হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,রেলমন্ত্রী ও এমপি মহোদয়ের হাত ধরে অবিলম্বে নতুন রেলকাম সড়ক সেতুর কাজের উদ্বোধনের জোরদাবি জানাচ্ছি যাতে বোয়ালখালীবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরন হয়।
লেখক: প্রাবন্ধিক