spot_img

২৫শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার
১০ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ডেস্ক রিপোর্ট

সর্বশেষ

ভুটান ভ্রমণ: বাংলাদেশির জন্য জুলাইতে যুক্ত হচ্ছে বড় ফ্লাইট, কমছে ট্যাক্সও

বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য ভুটান ভ্রমনে আগে থেকেই অন এরাইভাল ভিসা সুবিধা আছে। কিন্তু পর্যটকদের জন্য বাড়তি সাসটেইনেবল ডেভলপমন্ট ট্যাক্স (এসডিএফ) আরোপ, ঢাকা থেকে পর্যাপ্ত ফ্লাইট না থাকা এবং অনলাইনে ফ্লাইট বুকিং সুবিধা না থাকার কারণে চাহিদা থাকা সত্ত্বে বিপুল বাংলাদেশি পর্যটক ভুটান যেতে পারতেন না। এখন সেই ভোগান্তি কমাতে নতুন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে ভুটান ট্যুরিজম কর্পোরেশন লিমিটেড (বিটিসিএল)।

এরই অংশ হিসেবে জুন থেকেই বাংলাদেশের ঢাকায় নতুন অফিস দিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে বিটিসিএল। পর্যটকদের জন্য এসডিএফ যাত্রী প্রতি ২শ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে মাত্র ১৫ ডলারে নির্ধারন করেছে। আগামী জুলাই মাসে ঢাকা থেকে বড় ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন করবে। এরফলে আগের তুলনায় দ্বিগুণ যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে।

বিটিসিএল এর সাথে ঢাকার জিটেক এভিয়েশন লিমিটেড এবং চট্টগ্রামের ট্রেফেল ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এই ঘােষনা আসে। শনিবার সন্ধ্যায় জিইসি মোড়ের ট্রেফেল ট্যুরসের কনফারেন্স হলে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্তত ২০ জন ট্রাভেল এজেন্ট অংশ নেন।

সভায় বিটিসিএল এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ভুটান হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট) চেনচো শেরনিং বলেন, “বিশেষ করে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য আমরা ট্যাক্স জনপ্রতি ২শ ডলার থেকে কমিয়ে মাত্র ১৫ ডলারে নির্ধারন করেছি। এরফলে পর্যটকদের খরচ অনেক কমবে। এখন ঢাকা থেকে ভুটানে সপ্তাহে দুটি ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন হয় অর্থ্যাৎ মাসে ৮টির মতো। সবগুলোই ছিল ৪০ সীটের ছোট ফ্লাইট। জুলাই মাস থেকে মাসে আমরা ৪টি এয়ারবাস দিয়ে যাত্রি পরিবহন শুরু করছি। এরফলে একসাথে ১২০ যাত্রী ভুটান নেয়া সম্ভব হবে। আশা করছি এরমাধ্যমে আগের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি যাত্রী আমরা বাংলাদেশ থেকে পাবো।”

বাংলাদেশি পর্যটকদের সার্বিক সহযোগিতা দিতে বিটিসিএল এর সাথে কাজ করছে জি টেক এভিয়েশন লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তানভীর আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশি পর্যটকদের ফ্লাইট টিকেট বুকিং, ট্যুর প্যাকেজ, পর্যটকদের যাবতীয় সমস্যা দেখার আগে কোন অফিস ছিল না। এখন ডাকায় একটি অফিস খুলেছে ভুটান ট্যুরিজম কর্পোরেশন। ফলে আগের চেয়ে বেশি পর্যটক বাংলাদেশ থেকে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। একেবারে অর্গানিক ন্যাচার যারা ভালােবাসেন তাদের জন্য সেরা গন্তব্য ভুটান।”

ট্রেফেল ট্রাভেল এন্ড ট্যুরসের ম্যানেজার মোহাম্মদ মামুন বলেন, “ঢাকা-ভুটান ফ্লাইট পরিচালনা করছে কেবল ভুটানভিত্তিক সরকারী এয়ারলাইনস ড্রুক এয়ার। এখানে বাংলাদেশি এয়ারলাইনসে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিলে প্রতিযোগিতার কারণে টিকেট ভাড়া অনেক কমে আসবে। আর অনলাইনে ফ্লাইট টিকেট বুকিং সুবিধা না থাকায় অনেক পর্যটককে ভুটান ভ্রমনের সুবিধা আমরা দিতে পারি না। অনলাইনে টিকেট ইস্যুর ব্যবস্থা নেয়া এবং টিকেট ভাড়া কমানোর পদক্ষেপ নিলে বাংলাদেশিদের আকর্ষনীয় গন্তব্য হবে ভুটান।

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বিটিসিএল এর সিনিয়র ম্যানেজার কান্দু ইয়েতসো, ট্রেফেল ট্রাভেল এন্ড ট্যুরসের কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন সাবিথ, কর্মকর্তা শৈবাল দাশ গুপ্ত, এস আর ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলসের কর্মকর্তা প্রবাল সাহা, এয়ারবাংলা ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত, এয়ার স্টার ট্রাভেলস ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা ফারুক হোসাইন, এক্সপো ট্যুরসের ইব্রাহিম খলিল, সাঙ্গু ট্যুরসের এমডি হান্নান, কুহেলিয়া ট্যুরসের সাইফুল কবির প্রমুখ।

সভায় বক্তারা ড্রুক এয়ারের পাশাপাশি বাংলাদেশি এয়ারলাইনগুলোকে ভুটানে ফ্লাইট চলাচলে অনুমতির দাবি জানান। বিটিসিএল কর্মকর্তারা স্বীকার করে অন্য এয়ারলাইনসকে ফ্লাইট পরিচালনাকরতে দিলে ভাড়া কমে আসবে। এজন্য ভুটানে নতুন বিমানবন্দর চালু পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন; যেটি ২০৩০ সাল নাগাদ চালু হতে পারে।

সভায় জানানো হয়, বর্তমানে ড্রুক এয়ার ঢাকা থেকে মাসে ৩২০ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারে। জুলাই থেকে সেই সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৬শ জনে উন্নীত হবে। আর ২০২৬ সালে তিন লাখ পর্যটক আনার লক্ষমাত্রা নির্ধারন করেছে ভুটান সরকার। এর একটি অংশ বাংলাদেশ থেকে আনতে চায় ভুটান সরকার।

বিটিসিএল এর তথ্যমতে, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ২৮ হাজার ৬৭৪ জন পর্যটক ভুটান ভ্রমন করেছেন ২০২৪ সালের এপ্রিলে এই সংখ্যা ছিল ১৬ হাজারের বেশি। আর ২৮ হাজার ৬৭৪ পর্যটকের মধ্যে সাড়ে ১৫ হাজারই ছিল ভারতীয়। দ্বিতীয় স্থানে আছে আমেরিকান ১৭৩৪ জন, তৃতীয়স্থানে আছে ব্রিটিশ নাগরিক; যার সংখ্যা ৬৯৭ জন। আর পঞ্চমস্থানে থাকা বাংলাদেশি গেছেন ৫৫৯ জন।

ঢাকা থেকে দেড় ঘন্টার ফ্লাইটে ভুটান যেতে পারছেন বাংলাদেশি পর্যটকরা। ভাড়া আসা-যাওয়ার ভাড়া ন্যুনতম ৪৭ হাজার ৫শ টাকা। তবে গ্রুপগুলোর ট্যুর প্যাকেজে গেলে খরচ অনেক কমে আসে। ট্রাভেল এজেন্সিগুলো ভুটানে তিন রাত-চার দিনের প্যাকেজ দিচ্ছে ১৯ হাজার টাকায়। এই খরচের মধ্যে বিমান টিকেট ছাড়া, থাকা, খাওয়া, এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার, ট্যুর গাইড আছে।

চস/স

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss