spot_img

১৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, রবিবার
২রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সর্বশেষ

১৫ বছর ধরে তিনি কবরে বসবাস করেন

এখনো মানুষজন কবরের আশেপাশে যেতেই যেখানে ভয় পান সেখানে কবরে বসবাস করার চিন্তা অসম্ভব বিষয়। কিন্তু সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে সবাইকে অবাক করে মৃত মানুষদের সঙ্গে একটি কবরস্থানেই বসবাস করেন গৃহহীন এক মানুষ। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি কবরের আশেপাশে নয় বরং কবরের ভেতরই বসবাস করছেন।

নাম তার ব্রাতিস্লাভ স্টোজানোভিচ (৪৩)। থাকেন সার্বিয়ার নিস শহরের ১০০ বছরের পুরনো একটি কবরে। গৃহহীন হওয়ায় প্রথমে রাস্তায় রাত কাটাতেন। অবশেষে তিনি এই কবরস্থানের সন্ধান পেয়ে সেখানেই বসবাস শুরু করেন।

ব্রাতিস্লাভ স্টোজানোভিচের মতে, ‘রাস্তার চেয়ে কয়েকগুণ ভালো কবরের এই স্থানটি। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে রাস্তায় ঘুমানো যায় না। তবে কবরের ভেতরটা বেশ গরম আর নিরাপদ। মৃতদের এই স্থানে ঘুমানোর চেয়ে আমি মৃত্যুকে বেশি ভয় পাই।’

এই কবরটিতে বসবাস শুরুর আগে তিনি মৃতদেহের একেবারেই নষ্ট হয়ে যাওয়া কয়েকটি হাড় তুলে ফেলেন। তারপর ভালো করে কবরটিকে থাকার উপযুক্ত করে গড়ে তুলেন। তার থাকার এই জায়গাটি মাত্র দুই বর্গ গজ এবং সিলিং মাত্র এক গজ উঁচু।

রাতে স্টোজানোভিক কবরের ভেতর আলোকিত করতে মোমবাতি ব্যবহার করেন। কিছু কাপড়, কম্বলসহ ব্যক্তিগত কিছু জিনিস দিয়ে পরিপূর্ণ তার এই বসবাসের স্থানটি। তিনি বলেন, ‘এটি প্রাসাদ নয় কিন্তু এটি রাস্তার চেয়ে বেশি আরামদায়ক।’

বাইরে থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই মৃতদের এই স্থানে জীবিত কেউ দিব্যি বছরের পর বছর বসবাস করছেন। কবরের উপর থেকে পাথরের স্লাব সরিয়ে তিনি ভেতরে ঢুকেন। তারপর আবার তা ভেতর ঢুকে লাগিয়ে দেন।

মৃতদের সঙ্গে এমন ভুতূড়ে স্থানে থাকার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে স্টোজানোভিচ বলেন, ‘মৃতদের সঙ্গে বসবাস করা তেমন ভীতিকর নয়। আমি শুরুতে ভয় পেয়েছিলাম। তবে এখন অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। এখন আমি মৃতদের চেয়ে জীবিতদের বেশি ভয় পাই।’

তিনি আরও জানান, ‘যখনই আমি কবর থেকে বাইরে বের হই; তখন আগে দেখি আশেপাশে কেউ আছে কি-না। কারণ এভাবে আমাকে হঠাৎ কেউ দেখলে ভয় পেতে পারে। তবে অনেকেই জানে আমি এখানে বাস করি। এজন্য অনেকেই আমার জন্য এখানে খাবার বা কাপড় নিয়ে আসেন।’

কবরস্থানের কর্মকর্তাদের মতে, তিনি সুস্থ এবং স্বাভাবিক একজন মানুষ। তিনি এই কবরস্থানে কোনো ধরনের ক্ষতি করছেন না। এ কারণেই এখানে তাকে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিনি যে কবরে থাকছেন, সেটি শত বছরের পুরনো। কবরটির কোনো ওয়ারিশও বর্তমানে নেই।

স্টোজানোভিক বলেন, ‘একদিন তো মরতেই হবে। তখন তো এই কবরই হবে বাসস্থান। তাই কবরে ঘুমাতে আমি এখন ভয় পাই না। হঠাৎ কবরে শুয়েই যদি কোনো রাতে মৃত্যু হয় আমার; তাহলে আমার জন্য আর কাউকে কষ্ট করে কবর খুড়তে হবে না।’

সূত্র: ডেইলি মেইল

 

চস/আজহার

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss