spot_img

২৭শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, রবিবার
১২ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সর্বশেষ

চবি’র ১৮ শিক্ষককে ক্রেস্টের বদলে দেয়া হল ব্লেজার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ১৮টি বিভাগের সভাপতি ও ইনস্টিটিউটের পরিচালককে ৪ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য নবীনবরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সম্মাননা স্মারক হিসেবে ক্রেস্টের পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে ব্লেজার। গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি কলা অনুষদের সদ্যবিদায়ী ডিন অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী ওই ১৮ জন শিক্ষককে এই ব্লেজার দেন বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে ড. সেকান্দার চৌধুরী বলেন, “কলা অনুষদের সব বিভাগীয় সভাপতির সিদ্ধান্তক্রমে নবীনবরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে অনুষদের ১৮ শিক্ষককে সম্মাননা স্বরূপ ব্লেজার দেওয়া হয়েছে। তাও আবার একদম ন্যূনতম খরচে”।
কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের একাধিক বিভাগীয় সভাপতি ও ডিন অফিসের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা বলেন, এবার শিক্ষকদের ক্রেস্ট ও উত্তরীয়র পরিবর্তে ব্লেজার দেওয়ায় বাজেট আরও কম ধরা হয়েছে। আর গত জানুয়ারী মাসে বিভাগীয় সভাপতিদের মতামতের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি ড. সেকান্দারের ব্যক্তিগত কোনো সিদ্ধান্ত নয়।

এদিকে বিশ্বিবিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ওই শিক্ষকদের ব্লেজার দেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন কিছু শিক্ষক। তাদের দাবি ব্লেজারগুলো কেন ‘অনুষদের উন্নয়ন ফান্ড’ থেকে দেওয়া হলো। তবে বিশ্বিবিদ্যালয়ের একাধিক জ্যোষ্ঠ শিক্ষক এমন প্রশ্নের সমালোচনা করে বলেন, ক্রেস্ট, উত্তরীয় ও আনুসাঙ্গিক কিছু খরচ কমিয়ে ব্লেজার দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে প্রশ্ন তুলার কোনো ভিত্তি নেই। কারণ অনুষদ ফান্ডের অর্থ অনুষদের কাজেই লাগানো হচ্ছে। নবীনবরণ অনুষ্ঠানে এই অর্থ যেমন করে শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে ঠিক তেমনভাবে অনুষদের অংশ হিসেবে শিক্ষকদের জন্যও ব্যয় হচ্ছে। আর তা আগে থেকেই হয়ে আসছে।

তারা আরও বলেন, ড. সেকান্দার ডিন থাকাকালীন যেভাবে অনুষদের খরচ সাশ্রয় করা যায় সেভাবেই কাজ করেছেন। তাইতো দায়িত্ব হস্তান্তরের পর তিনি এই অনুষদে ৯ লক্ষেরও অধিক অর্থ উদ্বৃত্ত রেখে গিয়েছেন।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী প্রতি বছর ভর্তির সময় ‘অনুষদ উন্নয়ন ফি’ হিসেবে সাড়ে তিন হাজার টাকা জমা দিতে হয় একেকজন শিক্ষার্থীকে। এরমধ্যে তিন হাজার টাকা শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব বিভাগে এবং পাঁচশ টাকা অনুষদের উন্নয়ন ফান্ডে রাখা হয়। অনুষদের বিভিন্ন কাজে উন্নয়ন ফি’র এ টাকা খরচ করা হলেও ইউজিসিকে এর কোনো হিসেব দেওয়া লাগে না।

প্রত্যেক বছর নবীনবরণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ব্যয় বহন করা হয় অনুষদের এ ফান্ড থেকে। সেই ধারাবাহিতায় এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আগামী ৪’মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে অনুষদ এই ফান্ড থেকে। তবে প্রত্যেক বছর নবীনবরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের সম্মাননা ক্রেস্ট ও উত্তরীয় দেওয়া হলেও এবার দেওয়া হয়েছে ব্লেজার। আর অনুষদের সকল বিভাগীয় সভাপতি ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকরা একই ধরণের পোষাক পরিধান ও স্মৃতিস্বরূপ রাখতে নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আগেই হস্তান্তর করা হয়েছে ব্লেজারগুলো।

ব্লেজার দেওয়ার বিষয়কে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কের কড়া জবাব দিয়ে ড. সেকান্দার চৌধুরী বলেন, “এটা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির কোনো কারণ নেই। প্রত্যেক বছরই নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বিভাগীয় সভাপতিদের ক্রেস্ট ও উত্তরীয় দেওয়া হয়। সবার সিদ্ধান্তক্রমে এবার ক্রেস্ট ও উত্তরীয়র বিষয়টি বাদ দিয়েছি। এছাড়া আরও কিছু খরচ কমিয়ে শিক্ষকদের সম্মাননা স্মারক হিসেবে ব্লেজারের ব্যবস্থা করেছি”।

তিনি বলেন, “ব্লেজারগুলো শিক্ষকদের পার্সোনাল কোন কাজের জন্য নয়। এই ব্লেজারগুলো করা হয়েছে নবীনবরণ অনুষ্ঠানের জন্য। আর এগুলোতে লোগোও রয়েছে”।

এদিকে বিভাগীয় সভাপতিদের মিটিং এ উপস্থিত থাকা এক শিক্ষক বলেন, “কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের নবীনবরণ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় সভাপতিদের সভায় প্রথমে শিক্ষকদের চিত্রকর্ম দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে। পরে সব কিছু বিবেচনা করে শিক্ষকদের জন্য ব্লেজার দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। তবে ব্লেজার দেওয়ার বিষয় আসলে ক্রেস্ট ও উত্তরীয় প্রদান বাদ পড়ে যায়”।

চস/সোহাগ

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss