spot_img

১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, মঙ্গলবার
২৫শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ডা. শায়লা কবির

সর্বশেষ

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও মানসিক সুস্থতাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের পথ

বাংলাদেশে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে, বিশেষ করে নগরায়ন ও জীবনধারার পরিবর্তনের কারণে অসংক্রামক ও অপ্রতিরোধ্য রোগের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। এর মধ্যে ডায়াবেটিস বর্তমানে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী দেশে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসের সাথে লড়াই করছেন, এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ২ কোটি ৩০ লাখে পৌঁছাবে। ডায়াবেটিস কেবল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বিষয় নয়, এটি মানসিক স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মানের সাথেও গভীরভাবে জড়িত।

ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে মানসিক অবসাদ, উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা খুবই সাধারণ। এসব মানসিক চাপ রোগের চিকিৎসার ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং রোগীর জীবনযাত্রার মানও কমিয়ে দেয়। তাই শুধুমাত্র ঔষধের উপর নির্ভর না করে রোগীদের মানসিক ও সামাজিক সহায়তা প্রদান করা অত্যন্ত জরুরি। পরিবার, সহকর্মী এবং সমাজের সহযোগিতা রোগীর মানসিক চাপ কমাতে এবং সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাংলাদেশের নগর ও কর্মক্ষেত্রে ধীরে ধীরে সেডেন্টারি জীবনধারা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি আরও বাড়াচ্ছে। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের মতো স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা এখন অত্যন্ত জরুরি। সামগ্রিক জীবনধারার পরিবর্তন ডায়াবেটিস রোগীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য অপরিহার্য।

২০২৫ সালের বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের থিম ‘ডায়াবেটিস এবং সুস্থতা (Diabetes and Well being)’, এবং এবার বিশেষ ফোকাস করা হয়েছে কর্মক্ষেত্রের উপর। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, কর্মজীবী মানুষদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও সহায়ক কর্মপরিবেশ গড়ে তোলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সহকর্মীদের সাথে বোঝাপড়া, নিয়মিত স্বাস্থ্য চেকআপ, ফিটনেস ও স্ট্রেস ব্যবস্থাপনা কর্মক্ষেত্রে সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশের ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নতুন আশা বয়ে এনেছে। এভারকেয়ার চট্টগ্রামে রোগীরা শুধু ঔষধই নয়, একইসাথে মানসিক ও সামাজিক সহায়তাও পাচ্ছেন, যা সুস্থ জীবনধারার পথে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রাখছে। হসপিটালটি রোগীদের ব্যক্তিগত চিকিৎসা পরিকল্পনা, নিয়মিত পরামর্শ ও লাইফস্টাইল ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছে, যাতে রোগীরা স্বাভাবিক ও সক্রিয় জীবনধারা বজায় রাখতে পারেন।

ডায়াবেটিস কেবল ঔষধের মাধ্যমে নয়, মানসিক স্বাস্থ্য, স্ট্রেস কমানো এবং দৈনন্দিন জীবনের সব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গ্রহণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। স্বাস্থ্য সচেতনতা, সহায়ক পরিবেশ এবং আধুনিক চিকিৎসা সুবিধার সংমিশ্রণই বাংলাদেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের চাবিকাঠি।

ডা. শায়লা কবির
এমবিবিএস, ডিইএম (বারডেম), এফআরসিপি (গ্লাসগো) প্রাক্তন বিশেষজ্ঞ: ডায়াবেটিস, এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম, কুইন এলিজাবেথ হাসপাতাল, মালয়েশিয়া
কনসালটেন্ট, ডিপার্টমেন্ট : এন্ডোক্রাইনোলজি এন্ড ডায়াবেটোলজি
এভারকেয়ার হসপিটাল, চট্টগ্রাম

 

চস/আজহার

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss