এস আলম গ্রুপের কোম্পানি এস আলম সুগার রিফাইন ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের জমি নিলামে তুলেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতা ব্যাংক।
এস আলম সুগার রিফাইন ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের কাছে ব্যাংকটির পাওনা ১ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। চট্টগ্রামের সাধারণ বিমা কর্পোরেট শাখায় এই ঋণের দায়ে ২ হাজার ৯৭১ শতাংশ জমি নিলামে তোলা হচ্ছে। জমি নিলামের তোলার বিষয়টি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে জনতা ব্যাংক।
জানা গেছে, জনতা ব্যাংক থেকে নেওয়া এস আলম গ্রুপের ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণের প্রায় পুরোটাই খেলাপি হয়ে গেছে। ফলে প্রতিটি ঋণের বিপরীতে যে জমি বন্ধক দেওয়া আছে, তা একের পর এক নিলামে তুলছে জনতা ব্যাংক।
এর আগেও জনতা ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায়ে এস আলম গ্রুপের জমি নিলামে তুলেছে। ১ হাজার ৮৫০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য গত ২০ নভেম্বর গ্রুপটির ১ হাজার ৮৬০ শতাংশ জমি নিলামে তোলা হয়। গ্রুপটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেডের কাছে এই টাকা অনাদায়ী ছিল। জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রামের সাধারণ বীমা ভবন কর্পোরেট শাখা থেকে এই ঋণ নেওয়া হয়; সে শাখাতেই নিলাম ডাকা হয়েছিল।
জনতা ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, এস আলম গ্রুপ ২০০৪ সাল থেকে জনতা ব্যাংকের গ্রাহক। ব্যাংকটির চট্টগ্রামের সাধারণ বীমা ভবন কর্পোরেট শাখার দেওয়া ঋণের ৮০ শতাংশের বেশি নিয়েছে গ্রুপটি। ১০ হাজার ১০০ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে ব্যাংকটিতে বন্ধক আছে ২ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকার জমি ও স্থাপনা। যদিও, এসব জমি ও স্থাপনা বিক্রি করেও টাকা তুলতে পারবে না জনতা ব্যাংক।
গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশনের কাছ থেকে এই পাওনা আদায়ে গত ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে ঋণ খেলাপি মামলাও দায়ের করেছে ব্যাংকটি।
যেই মামলায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলম (মাসুদ), তার স্ত্রী, ৫ সহোদর, ভাইয়ের স্ত্রী ও একজন পরিচালকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে সমন জারি করে আদলত।
জানা যায়, এস আলম গ্রুপ ও এর সংশ্লিষ্টরা জনতা ব্যাংকের সাধারণ বীমা শাখা থেকে ১৪ বছরে প্রায় ৯ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার এক বছর পর ২০১০ সাল থেকে এভাবে ঋণ নেওয়া শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
হাসিনা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক— এ সাতটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ছিল এস আলম গ্রুপের কাছে।
এসব ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এস আলম গ্রুপ অন্তত দেড় লাখ কোটি টাকা বের করে তার বেশিরভাগই পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
চস/স


