spot_img

২৬শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, শনিবার
১১ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বশেষ

চট্টগ্রামে জশনে জুলুসে পদদলিত হয়ে দুজনের মৃত্যু, আহত ৬

চট্টগ্রাম ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আয়োজিত জশনে জুলুসে পদদলিত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে নগরের মুরাদপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পদদলিত হয়ে মারা গেছেন- চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা আইয়ুব আলী (৬০) ও নগরের কালামিয়া বাজার এলাকার সাইফুল ইসলাম (১৩)।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী ইনচার্জ সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

হতাহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে যান আঞ্জুমানে রহমানিয়া ট্রাস্টের মেডিকেল টিমের সদস্যরা। তাদের এক সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, মানুষের ভিড়ের মধ্যে গরমে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েকজন নিচে পড়ে যান। এ সময় পদদলিত হয়েছেন হতাহতরা। আহত অবস্থায় আটজনকে উদ্ধার করে আমরা হাসপাতালে নিয়ে আসি। এর মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে আলমগীর খানকা শরীফ থেকে ৫৪তম জশনে জুলুসের শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। শোভাযাত্রার নিরাপত্তায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া আঞ্জুমানের স্বেচ্ছাসেবক কর্মীরা কাজ করছেন।

ভোর থেকে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ট্রাক, মিনি ট্রাক সাজিয়ে জুলুসকে সফল করতে অপেক্ষা করছেন। এর আগে, শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে ষোলশহর জামেয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা এলাকায় লাখো মানুষ ভিড় জমান।

ইসলামের প্রবর্তক ও নবী মুহাম্মাদের জন্মদিন উদযাপন করার উদ্দেশে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৩ বছর পর থেকেই প্রতিবছর ইসলামি বর্ষপঞ্জির ১২ রবিউল আউয়াল তারিখে আঞ্জুমান ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রামে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

ঐতিহাসিক এ জুলুসের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মাদজাল্লাহু আলি)। বিভিন্ন পীর-মাশায়েখ ও আলেম-ওলামারা জুলুসে অংশ নিয়েছেন।

আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ বলেন, জশনে জুলুস হচ্ছে নবীপ্রেমের সোনালি প্রদীপ। লাখো মানুষের এই অংশগ্রহণ প্রমাণ করে, মুসলমানরা নবীজির (সা.) ভালোবাসায় সর্বদা ঐক্যবদ্ধ। ১৯৮০ সাল থেকে শুরু হওয়া এই জুলুস এখন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সমাবেশে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রাম আজ ঈমান, ভ্রাতৃত্ব ও মানবতার মহোৎসবে রূপ নিয়েছে।

পথে পথে দেখা যায় এক অনন্য দৃশ্য। প্রতিটি মোড়ে শরবত, পানি ও তাবাররুকের ব্যবস্থা রেখেছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। ছোট্ট শিশুরাও হাতে শরবতের গ্লাস নিয়ে ভক্তদের আপ্যায়ন করছে। বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও এ সেবায় অংশ নিয়েছে। ফলে পুরো জুলুস রূপ নিয়েছে অতিথি আপ্যায়ন আর ভ্রাতৃত্বের মহা উৎসবে।

চট্টগ্রামে জশনে জুলুস শুরু হয় ১৯৮০ সালে। টানা ৫৪ বছর ধরে আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট এই আয়োজন করে আসছে। ঐতিহ্যবাহী এ জুলুস এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী সুন্নি মুসলমানদের কাছে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। প্রতিবছর লাখো ভক্ত-অনুরাগীর সমাগমে এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় শোভাযাত্রায় রূপ নিয়েছে।

চস/আজহার

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss