চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের আলীনগরে দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হয়েছেন এখন টেলিভিশনের দুই সাংবাদিক। এ সময় হামলাকারীরা তাদের ব্যবহৃত ক্যামেরা ভাঙচুর, মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ লুট করে নিয়ে যায়।
রোববার (৫ অক্টোবর) সকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত সাংবাদিকরা হলেন এখন টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান ও বিশেষ প্রতিনিধি হোসাইন জিয়াদ এবং ক্যামেরা পার্সন মো. পারভেজ। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংবাদিক দলটি আলীনগর এলাকায় চলমান সংঘর্ষ ও দখলবাজি পরিস্থিতি কভার করতে গেলে ইয়াসিন গ্রুপের সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। হঠাৎ চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে মারধর করা হয় সাংবাদিকদের। হামলার পর আহত অবস্থায় স্থানীয়দের সহায়তায় তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সীতাকুণ্ড মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান। তিনি বলেন, হামলার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়েছে। দুই সাংবাদিকের উপর হামলা করায় তারা গুরুতর আহত হয়েছে বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, আলীনগরের আয়নাঘর থেকে অভিযান চালিয়ে পুলিশ একজনকে আটক করেছে। তবে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এই বিষয়টি সম্পর্কে কিছু জানাতে চাননি।
এদিকে দুই সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে সাংবাদিক মহল।
এর আগে শুক্রবার রাতে আলীনগরে দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একজন নিহত ও অন্তত ১৬ জন আহত হয়। নিহতের নাম কালু (৩২)। সংঘর্ষে অংশ নেয় ইয়াসিন বাহিনী ও যুবলীগের সন্ত্রাসী ভাগিনা জাবেদ গ্রুপ। পরে যুবলীগ নেতা ভাগিনা জাবেদকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের আলী নগর এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে ইয়াসিন গ্রুপ ও সরোয়ার বাবলার মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় শনিবার। এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়কেন্দ্র ও অস্ত্রের গুদামঘরে পরিণত হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, “দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত ও একাধিক আহত হয়েছে। আমরা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি।”
সরকারি জমি দখল করে গড়ে ওঠা জঙ্গল সলিমপুর ও আলীনগরের ছিন্নমূল বস্তি দীর্ঘদিন ধরেই চট্টগ্রামের সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একাধিকবার অভিযান চালালেও এখানকার দখলবাজ চক্রগুলো বারবার নতুনভাবে সংগঠিত হচ্ছে।
চস/স


