spot_img

১৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সর্বশেষ

টি-টোয়েন্টিতে ইরফান শুক্কুরকে প্রয়োজন

টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২১ এ ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করে এসেছে বাংলাদেশ। প্রথম পর্বে পাপুয়া নিউগিনি ও ওমানের বিপক্ষে জয়কে সফলতা হিসেবে ভাবার কারন নেই, কেননা একই পর্বে স্কটল্যান্ডের সাথে হার মানতে হয়েছে টাইগারদের। ২য় রাউন্ডে দুই ম্যাচে জয়ের ক্ষেত্র তৈরী করলেও শেষের দুই ম্যাচে সর্বনিম্ন সংগ্রহ গড়া কিংবা ক্রিকেটারদের শরীরি ভাষা ছিলো যথেষ্ট হতাশাজনক। আপাত দৃষ্টিতে মাঠের ভুলগুলোই ব্যর্থতার মূল কারণ মনে হলেও টি২০ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার নেপথ্যে ছিলো টি২০ ক্রিকেটে সামর্থ্যবান ক্রিকেটার পর্যাপ্ত না থাকা এবং টি২০ সূলভ উইকেটে খেলার অভিজ্ঞতা না থাকা।

বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর বিসিবি টি২০ দলকে ঢেলে সাজাতে চাইছে। বিসিবির উদ্যোগ লোক দেখানো হোক কিংবা সত্যি সত্যিই পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে হোক, তাৎক্ষনিক ভাবে টি২০ দল থেকে সৌম্য-লিটনকে বাদ দেয়ার পাশাপাশি ইয়াসির আলী রাব্বি, তৌহিদ হৃদয়, কামরুল ইসলাম রাব্বি, সাইফ হাসান, পারভেজ ইমন সহ মোট ৭ ক্রিকেটারকে প্রাথমিক ভাবে ভাবনায় রেখে তাদের নিয়ে কাজ করছে বিসিবি। ইয়াসির রাব্বি, পারভেজ ইমন টি২০ এর জন্য যুথসই হলেও সাইফ হাসান ও তৌহিদ হৃদয় কেনো টি২০ বিবেচনায় এবং পরীক্ষিত উইকেটকিপার ব্যাটার ইরফান শুক্কুর কেনো বিবেচনায় আসেনি, সে প্রশ্ন সমর্থকদের মনে।

সাইফ হাসান জাতীয় টেস্ট দলে খেলছেন, তার খেলাও টেস্ট-ওয়ানডে সূলভ। টি২০ ক্রিকেটে নেই সাইফের তেমন কোন সফলতা। অপরদিকে তৌহিদ হৃদয়ও টি২০ মেজাজের ব্যাটার নয়। বিপরীতে ইরফান শুক্কুর বিপিএল, প্রেসিডেন্ট কাপ, ঢাকা লীগে তার টি২০ সামর্থ্য দেখিয়েছে দারুণ ভাবে। প্রেসিডেন্ট কাপের ওয়ানডে ফরম্যাটে ব্যাট হাতে ধারাবাহিক ঝড় তোলা ইরফান জাতীয় দলের ক্রিকেটার না হয়েও পরবর্তী বঙ্গবন্ধু টি২০ লীগে জায়গা করে নিয়েছিলেন এ ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের তালিকায়।

বিসিবি টি২০ ক্রিকেটে যদি সত্যিই পরিবর্তন চায়, তাহলে সামর্থবান ক্রিকেটারদের জায়গা করে দিতে হবেই। পরিবর্তনের নামে সেই পুরনো ধারণা অর্থাৎ ওয়ানডে মেজাজের ক্রিকেটারদের দিয়ে টি২০ চালালো ব্যর্থ চেষ্টার নামান্তর হবে নিঃসন্দেহে। যদিও সাইফ, তৌহিদদের প্রাথমিক ভাবে ডাকা মানেই তাদের দলে নিয়ে মাঠে নামিয়ে দেয়া নয়, তবে তাদেরকে যেহেতু বিবেচনা করে প্রস্তুত করা হচ্ছে, এতটুকুই সামর্থ্যবান ক্রিকেটারদের জন্য করতে পারলে ভবিষ্যতের জন্য দূর্দান্ত হতো।

২০১৯/২০ সেশনের বিপিএলের ফাইনালে রাজশাহীকে চ্যাম্পিয়ন করতে ইরফান শুক্কুর রেখেছিলেন দূর্দান্ত ভূমিকা। ফাইনালে তিন নাম্বারে নেমে খেলেছেন ৩৫ বলে ৫২ রানের ইনিংস। এর আগের ম্যাচে চাপের মুহুর্তে খেলেছেন ৪২ বলে ৪৫ রানের ইনিংস। এর পর ওয়ানডে ফরম্যাটের প্রেসিডেন্ট কাপের ফাইনালে চাপের মুহুর্তে খেলেছেন ৭৭ বলে ৭৫ রানের ইনিংস। গ্রæপের চতুর্থ ম্যাচে খেলেছেন মাত্র ৩১ বলে ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংস। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই খেলেছিলেন ৫৭ রানের ইনিংস। পুরো টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক রান করা ইরফান ২য় সর্বোচ্চ ২১৪ রান করেছিলেন। সর্বশেষ টি২০ ফরম্যাটে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের ১৬ ম্যাচে ২ ফিফটিতে ১৩২.১৫ স্ট্রাইকরেটে ৬৮ রান বেস্টে করেছিলেন ৩০০ রান।

ইরফানের সমসাময়িক প্রায় ক্রিকেটারই জাতীয় দলে খেলেছেন। কিন্তু ধারাবাহিক কয়েকটি টুর্নামেন্টে রান করা ইরফান প্রেসিডেন্ট কাপে দূর্দান্ত খেলে জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়ার গুঞ্জন শোনা গেলেও সুযোগ হয়নি। সর্বশেষ বিশ্বকাপে চরম ভরাডুবির পর পরিবর্তনের ডাকের অংশ হিসেবে সাইফ, তৌহিদ হৃদয়ের মতো ব্যাটার জায়গা পেলেও জায়গা হয়নি টি২০ ক্রিকেটে দূর্দান্ত সামর্থ্যবান ইরফান শুক্কুর, রনি তালুকদার কিংবা হালের আনিসুল ইসলাম ইমনের মতো ব্যাটারদের।

টি২০ ক্রিকেটে যদি সত্যিই পরিবর্তনের মাধ্যমে উন্নতি চায় বাংলাদেশ, তাহলে ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যাটারদের পরিবর্তে যোগ্য ব্যাটারদের জায়গা করে দিতে হবে। টার্নিং উইকেটের পরিবর্তে স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে হবে। টি২০ ক্রিকেটের উপযোগী কোচিং প্যানেল সাজাতে হবে। বড় বড় দলগুলোর কার্যক্রম অনুসরণ করতে হবে। প্রত্যাশা থাকবে বিসিবি সেদিকেই হাটবে।

 

 

চস/আজহার

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss