বিপিএলের গত আসরে চিটাগং ভাইকিংসের লজিস্টিক ম্যানেজার ছিলেন শাকিল আবেদীন। চট্টগ্রামে খেলা হলে ম্যাচ রেফারির দায়িত্বও পালন করতেন তিনি। চট্টগ্রাম ক্রীড়াঙ্গনেও সম্পৃক্ততা আছে তার। অথচ এবার বিপিএলে থাকতে পারছেন না তিনি। কারণ শাকিলের ওপর কড়া নজর আছে বিসিবি দুর্নীতি দমন বিভাগের। বিসিবি সূত্র থেকে জানা গেছে, গত বিপিএলের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের কয়েকজন ক্রিকেটারকে রাজশাহী কিংসে খেলার সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন শাকিল। খেলার সুযোগ নিশ্চিত হলে কর্মকর্তাদের কথামতো চলার শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন তিনি। বিসিবির একাধিক পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রস্তাব পাওয়া খেলোয়াড়রা বিষয়টি বোর্ডের দুর্নীতি দমন বিভাগকে জানান। বিসিবি বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করলে অনৈতিক প্রস্তাবের ঘটনার সত্যতা খুঁজে পায়। গতকাল কয়েকজন পরিচালক নিশ্চিত করেন, শাকিলকে ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারাও জেনে গেছেন, শাকিল ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হচ্ছেন। চট্টগ্রামের ক্রিকেট সংগঠকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারাও জেনেছেন যে কোনো দিন শাকিলের নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন জারি করবে বিসিবি। এ ব্যাপারে শাকিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না।’ বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কি-না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে কেউ কিছু জানতে চায়নি। নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারেও কিছু জানি না।’ অসুস্থ বাবা সেলিম আবেদীনকে দেখভালের জন্য এবারের বিপিএলে সম্পৃক্ত হননি বলে জানান তিনি।
শাকিলকে কত বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হতে পারে জানা যায়নি। তবে এবারের বিপিএলের খেলা দেখতে তিনি যে মাঠে যেতে পারবেন না সেটা নিশ্চিত। ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ডেও সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না তিনি। ২০১২ সালের প্রথম বিপিএলে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল শরিফুল হক প্লাবনকে। জাতীয় দলের সাবেক সতীর্থের কাছ থেকে অনৈতিক প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি মাশরাফি রিপোর্ট করেছিলেন টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে। শাকিলকে নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে ওই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা হলে বড় ধরনের শাস্তি পেতে পারেন তিনি।
বিসিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, দেশের ক্রিকেটে কোনো ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না। বিপিএল ইস্যুতে আরও বেশি সিরিয়াস তারা। নাম গোপন রাখার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘শাকিল যে উদ্দেশ্যেই এই প্রস্তাব দিন না কেন, অ্যান্টিকরাপশনের নিয়মে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’ কারও প্রলোভনে পড়ে শাকিল এ ধরনের ভুল করে থাকতে পারেন বলে মনে করেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটারদের কেউ কেউ। একজন সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। মানুষটা বোকা কি-না বুঝতে পারছি না।’
সূত্র :দৈনিক সমকাল
চস/আজহার