যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিতে সই করেছে ইসরায়েল এবং গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। গতকাল বুধবার নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এই ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন ট্রাম্প। ট্রাম্প তাঁর পোস্টে বলেন, “আমি খুবই গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, ইসরায়েল এবং হামাস উভয়েই আমাদের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সই করেছে।”
এই চুক্তি সইয়ের খবর প্রকাশ্যে আসার পর গাজার খান ইউনিসে ফিলিস্তিনি যুবকদের উল্লাস করতে দেখা গেছে। গাজার প্রতিটি ঘরে ঘরে উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে। কেউ খুশিতে কাঁদছেন-হাততালি দিচ্ছেন, কেউ বাঁশি বাজাচ্ছেন, কেউ গান গাইছেন-নাচানাচি করছেন এবং চিৎকার করে বলছেন- আল্লাহু আকবর।
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারও চুক্তি সইয়ের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি এক্সে এক বার্তায় বলেন, “আমরা মধ্যস্থতাকারীরা এই মর্মে ঘোষণা করছি যে, আজ রাতে গাজায় শান্তি স্থাপন সংক্রান্ত নতুন পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের সমস্ত শর্ত ও বিধান বাস্তবায়নে একটি চুক্তি সই হয়েছে।”
তিনি নিশ্চিত করেন যে এই চুক্তি সইয়ের জেরে গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটবে, সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি কারাবন্দিরা মুক্তি পাবে, এবং গাজায় ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশে আর কোনো বাধা থাকবে না। চুক্তির বিস্তারিত বিষয়গুলো পরবর্তী সময়ে ঘোষণা করা হবে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন পরিকল্পনার ব্যাপারে ট্রাম্প প্রথম ঘোষণা দেন ২৯ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউসে, যেখানে তাঁর পাশে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। শুরুতে হামাস সম্মতি না দিলেও, পরে ৩ অক্টোবর তারা সম্মতি জানায়।
এরপর ৬ অক্টোবর মিসরে ট্রাম্পের প্রস্তাবের ওপর ইসরায়েল, হামাস, মিসর, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে আলোচনা চলার পর উভয় পক্ষ চুক্তিতে সই করল। ট্রাম্প আগেই আভাস দিয়েছিলেন যে আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে এবং তিনি এ সপ্তাহের শেষের দিকে মধ্যপ্রাচ্যে যেতে পারেন।