প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে হত্যাচেষ্টা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। এছাড়া তিন আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখা হয়েছে। আপিলের রায়ে খালাস পেয়েছেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ১৪ বছর কারাদণ্ড পাওয়া আনিস।
বুধবার বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে রায় ঘোষণা করেন। ভাষার মাস উপলক্ষে রায়টি বাংলায় পড়া হয়।
এর আগে বেলা পৌনে ১১টার কিছু আগে রায় পড়া শুরু হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর রায় ঘোষণা করা হয়।
গত ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈতবেঞ্চে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
গত সোমবার যুক্তিতর্কে ২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা বহাল চায় রাষ্ট্রপক্ষ।
রায়ে যাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় তারা হলেন- ওয়াসিম আকতার, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
এ মামলার প্রধান আসামি হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের আরেক মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয় ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ মামলার রায়সহ সব নথি ওই বছরের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর প্রধান বিচারপতির কাছে নথি উপস্থাপন করা হলে তিনি জরুরি ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন। মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত শেষে কার্যতালিকায় দেয়া হয়।
আরো পড়ুন: হাইকোর্টে পৌঁছেছে দীপন হত্যার আট আসামির ডেথ রেফারেন্স
এছাড়া মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেয়া হয়। তবে আপিলের রায়ে আনিসকে খালাস দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়।
চস/স