নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। এরই অংশীদার হিসাবে শিপিং সেক্টরও জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে।
রবিবার (২২ জানুয়ারি) ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট (এনএমআই) চট্টগ্রামের ২৪তম এবং এনএমআই, মাদারীপুরের ১৩তম ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থী রেটিংসদের পাসিং আউট অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ডিজিটালাইজেশনের কারণে বিশ্বনৌবহর দ্রুতগতিতে উন্নত থেকে উন্নতর হচ্ছে। সেই সাথে তাল মিলিয়ে জাহাজি অফিসার ও রেটিংদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। দিন বদলের পালায় বর্তমান সরকারের ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে দেশের সকল সেক্টর একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। সে প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নিম্নমধ্য আয়ের দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল (ডেভলপিং) দেশে এবং উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে চলছে।
তিনি আরও বলেন, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটটি, চট্টগ্রামকে মেরিটাইম কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসাবে পরিণত করার সরকারি পরিকল্পনার অংশ হিসাবে সরকার ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটে ‘শেখ রাসেল সিমুলেটর ভবন’ নির্মাণ করেছে। যার মধ্যে ফুল মিশন ব্রিজ সিমুলেটর, ফুল মিশন ইঞ্জিন সিমুলেটর এবং হাইভোল্টেজ সিমুলেটরসহ অন্যান্য আধুনিক প্রশিক্ষণ যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের শিপিং সেক্টরের সংশ্লিষ্ট অফিসার ও রেটিংদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশি অফিসার ও রেটিংদেরকে (নাবিক) আর বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। ফলে দেশের আর্থিক সাশ্রয় হবে ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট, চট্টগ্রামের নিয়ন্ত্রণে মাদারীপুর শাখার স্থাপনাদির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। শীঘ্রই উদ্বোধন করে মাদারীপুর ক্যাম্পাসে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হবে। সেখানে প্রতি ব্যাচে ৩০০ জন করে ২টি ব্যাচে প্রতি বছর ৬০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা সম্ভব হবে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় উত্তরবঙ্গের কুড়িগ্রামে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট, কুড়িগ্রাম শাখা স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী পাসিং আউট রেটিংদের মার্চ পাস্ট পরিদর্শন করেন এবং শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। প্রতিমন্ত্রী পরে ইনস্টিটিউটের নবনির্মিত মসজিদ ও ‘শেখ রাসেল সিমুলেটর ভবন’র উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে দুজন রেটিংসকে গোল্ড মেডেল ও সিলভার মেডেল পদক প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের সৌজন্যে প্রদত্ত গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত হন অল রাউন্ড রেটিং মো. আতিকুর রহমান টুটুল এবং মেসার্স হক এন্ড সন্স লিমিটেডের সৌজন্যে প্রদত্ত বেস্ট গ্রাউন্ড ড্রিল সিলভার মেডেল প্রাপ্ত হন প্যারেড কমান্ডার মো. ইসমাইল হোসেন। দুজনই চট্টগ্রাম এনএমআইয়ের। প্রশিক্ষণ কোর্সে ২৯৭জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যেদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মো. নিজামুল হক, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন আতাউর রহমান। অনুষ্ঠানে দেশের সামরিক-বেসামরিক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, দেশি ও বিদেশি জাহাজ মালিক এবং এজেন্টদের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
চস/স