মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে জড়িত অভিযোগে এবার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষক মাকসুদা মালাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হয়েছেন ঢাকার থ্রি ডক্টরস কোচিংয়ের পরিচালক ডা. বশিরসহ ঢাকা মেডিকেল থেকে পাস করা বিভিন্ন সেশনের ছয় চিকিৎসক।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) চ্যানেল ২৪ এর এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
৩২ ঘণ্টার টানা এই অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক তথ্য দিয়েছেন। জবানবন্দি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া আইডিয়ালের শিক্ষক মালা তাঁর মেয়ে ইকরা বিনতে বাশারসহ ১০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেডিকেলে ভর্তি করিয়েছেন।
অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন ঢাকা মেডিকেলের ৬৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বর্তমানে বিসিএস স্বাস্থ্য কর্মকতা ডা. অনিমেষ কুন্ডু, তার মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে মেডিকেলে ভর্তি হওয়া ডা. সাবরিনা রেজা টুষি, ডা. মৈত্রী সাহা এবং ডা. জাকারিয়া আশরাফ। মৈত্রী এবং জাকারিয়া ঢাকা মেডিকেলের ৭৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। আর টুষি রংপুর মেডিকেলের শিক্ষার্থী।
ফাঁসের প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে জাতীয় মেধায় ১৭০০তম স্থান অর্জন করা সাবরিনা রেজা টুষি জানান, ‘মগবাজারের আশপাশে কোনো একটি বাসায় আমরা কয়েকজন ছিলাম। চৈতি আর ফারসিয়া ছিল, এ ছাড়া আর কারো নাম আমার মনে নাই। প্রশ্নটা হার্ড কপি ছিল না, হাতে লেখা ছিল। টাকা দেওয়া হয়েছিল ক্যাশে।’
তাদের প্রাইভেট পড়াতেন ডা. অনিমেষ।
গ্রেপ্তারকৃতরা ২০১৫ সালে কীভাবে প্রশ্ন কিনে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন সে ব্যাপারেও বিস্তারিত জানিয়েছেন।
তারা জানান, ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে এক পরীক্ষার্থীর মামীর বাসায় তাদেরকে ফাঁস করা প্রশ্ন পড়ানো হয়। প্রত্যেকের সাথে ১০ লাখ টাকার চুক্তি ছিল, জামানত হিসেবে রাখা হয়েছিল চেক।
এ ছাড়াও ওই অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন ঢাকা মেডিকেলের ৬৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. জাকিয়া ফারিভা ইভানা। ইভানাকে প্রশ্ন সরবরাহ করা ফেইম কোচিংয়ের পরিচালক ডা. ময়েজ উদ্দিন আহমেদ আগেই গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এ পর্যন্ত চক্রের মোট ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি), যাদের ১৯ জনই চিকিৎসক।
সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ‘অপরাধীকে আমরা অপরাধী হিসেবেই চিহ্নিত করবো। ১৬৪ এ যদি কারও নাম আসে, তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসবো আমরা।’
তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে যেসব ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে, তাদের ছাত্রত্ব বাতিল এবং ডাক্তার ও অন্যান্য যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া…, যাতে তারা কখনো প্র্যাকটিসই করতে না পারে। এটা করলে একটা লেসন হবে। ফলে ভবিষ্যৎ জেনারেশন আর এ রকম করতে সাহস পাবে না।’
চস/স