ঢাকায় এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে শনিবার(৬ জুলাই) মির্জা ফখরুল বলেন, “সারাদেশে আজকে তারা (ক্ষমতাসীন) একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা চরমভাবে ভেঙে পড়েছে। আপনারা দেখছেন, দিনে-দুপুরে মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করা হচ্ছে।
“কয়েকদিন আগে পত্রিকায় বেরিয়েছে প্রতি ঘণ্টায় ১২ জন লোক মারা যাচ্ছে, নিহত হচ্ছে। হয় সড়ক দুর্ঘটনায় অথবা হত্যা করার মধ্য দিয়ে। দেশে ধর্ষণ বেড়েছে, ডাকাতি বেড়েছে, লুটপাট বেড়েছে। মানুষের জীবনের এখন আর কোনো নিরাপত্তা নেই।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আজকে সারাদেশ একটা কারাগারে পরিণত হয়েছে। এখানে একটি বিচার বিভাগ আছে, এ বিচার বিভাগের কাছে আমরা কোনো বিচার পাই না। এই বিচার বিভাগ সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকারের করায়ত্ত।
“আপনারা দেখেছেন, পাবনাকে কয়েকদিন আগে ১৯৯৪ সালে একটি ট্রেনে হামলার বিষয় নিয়ে যে রায় হয়েছে- এটা আমার মনে হয় না যে, কোনো সভ্য সমাজে, আইনের শাসনের দেশে এই ধরনের একটা ন্যক্কারজনক রায় হতে পারে।”
তিনি বলেন, “আজকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই বললেই চলে। একেবারে শূন্যের কোঠায় এসে গেছে। উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে। মেগা প্রজেক্ট, মেগা দুর্নীতি। আজকে পত্র-পত্রিকা খুলে দেখবেন, ব্যাংকগুলো থেকে কীভাবে টাকা চলে যাচ্ছে।
“গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করার একমাত্র কারণ হচ্ছে তারা এলএনজি আমদানি করতে চায়। এই এলএনজি আমদানি করে সেখানে যে ভর্তুকি দেবে, সেই টাকা জনগণের পকেট থেকে নিতে চায়।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণে বিএনপির উদ্যোগে দলের চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া ও দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের মুক্তির দাবিতে মানবববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ফখরুল।
এ নিয়ে বাম দলগুলোর রোববারের হরতালে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “কারণ এটা জনগণের দাবি, জনগণের দাবিকে অবশ্যই আমরা সবসময় সমর্থন করব।”
খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, ‘‘ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রেখে এই সরকার এটা প্রমাণ করেছে তারা গণতন্ত্রকে আটক রাখতে চায়। কারণ দেশনেত্রী গণতন্ত্রের প্রতীক। যে নেত্রী তার রাজনৈতিক জীবনের পুরোটাই গণতন্ত্রের উন্নয়ন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাকে তারা অন্যায়ভাবে তাকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে।
“ঠিক একই ধরনের মামলা আপনাদের নেতা-নেত্রী, আপনাদের অনুসারী, তাদেরকে জামিন দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের দেশনেত্রীকে আপনারা জামিন দিচ্ছেন না। এটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি।”
আওয়ামী লীগ দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি শামসুল হুদা, নবী উল্লাহ নবী, মোশাররফ হোসেন খোকন, মীর হোসেন মীরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব বক্তব্য রাখেন।
চস/ সোহাগ