spot_img

১৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় কথার ‘টোন’ আলাদা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে অনুষ্ঠিতব্য সীমান্ত সম্মেলনে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বাংলাদেশের ‘টোন’ (কণ্ঠস্বর) ভিন্ন হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশের কথার ‘টোনটা’ আলাদা হবে।

আগামী ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ৫৫তম সীমান্ত সম্মেলন হবে। সম্মেলন সামনে রেখে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে প্রস্তুতিমূলক আন্তমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ভারতীয় নাগরিক, বিএসএফ ও অন্য যারা সীমান্তে হত্যা করছে, এটি যেভাবে হোক তাদের বন্ধ করতে হবে। এটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অনেক সময় দেখা গেছে, বিএসএফ কর্তৃক এবং তাদের দুষ্কৃতকারীরা সীমান্ত থেকে কৃষিকাজ করার সময় বাংলাদেশের নাগরিক ধরে নিয়ে যায়। এটি যেন তারা না করে, সেজন্য তাদের বলা হবে।

অনেক সময় সীমান্ত লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে পারাপারের চেষ্টা করা হয় বলে উল্লেখ করেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, এই বিষয়গুলো যেন না হয়, সে বিষয়ে আলোচনা হবে। ভারতীয়রা অনেক সময় সীমান্ত এলাকায় ফেনসিডিলসহ মাদকের কারখানা তৈরি করে। যদিও বলে, ফেনসিডিল ওষুধ হিসেবে বানায়। কিন্তু বানায় মাদকের জন্য। এটি বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যায়। এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।

তিনি আরও বলেন, সীমান্তে ১৫০ গজের ভেতরে কতগুলো কাজ, যেগুলো করার নিয়ম নেই, এগুলো অনেক সময় তারা করতে চায়। আর কিছু কাজ আছে, যেগুলো করতে হলে দুই দেশের অনুমোদন লাগে। এই অনুমতি নিয়ে যেন তারা করে, এটা নিয়েও আলোচনা হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যম যে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে, এটি কীভাবে তারা বন্ধ করতে পারে সে ব্যাপারেও আলোচনা হবে। এছাড়া নদীর পানির যেন সুষম বণ্টন হয়, পানিচুক্তির বাস্তবায়ন ও কীভাবে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ভালো হয়, পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি পায়- এগুলোর ব্যাপারে আলোচনা হবে।

ভারতের সঙ্গে চারটি চুক্তি হওয়ার কথা উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ২০১০ সালে যে চুক্তিটি হয়েছে, সেটির ভেতরে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। চুক্তিটি কিছুটা অসম। এজন্য আলোচনা হবে। এগুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আগেও জানানো হয়েছে।

চস/স

চট্টগ্রামে স্কুলছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা, আটক ৪

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে এক স্কুলছাত্রীকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পথে চার জনকে আটক করেছে স্থানীয়রা। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার দাঁতমারা বালুটিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আটককৃতরা হলো-ফটিকছড়ির হাজারীখীর এলাকার মৃত মনিরাম ত্রিপুরার ছেলে বাদল ত্রিপুরা (১৯), হারুয়ালছড়ির আবুল কাশেমের ছেলে মো. শাবলু (২৩), হাজারখীল এলাকার গোপাল বিশ্বাসের ছেলে চঞ্চল বিশ্বাস (২৪) ও বুদিয়া ত্রিপুরার ছেলে মিদুল ত্রিপুরা (২৫)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বালুটিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির তিনছাত্রী স্কুলে যাওয়ার পথে একটি মাইক্রোবাসে থাকা তিন যুবক এক ছাত্রীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয়রা এ ঘটনা দেখে মোটরসাইকেল নিয়ে তাদের পিছু নেয়। শান্তিরহাট বাজার এলাকায় গাড়িটি যানজটে আটকে গেলে ভেতরে থাকা ছাত্রী চিৎকার দেয়। এসময় স্থানীয়রা গাড়িটি আটক করে অপহরণকারীদের গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

ভূজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলম বলেন, দুই বান্ধবীসহ স্কুল যাওয়ার সময় বালুটিলা ব্রিজের সামনে থেকে সেই ছাত্রীকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এসময় তার বান্ধবীরা স্কুলের প্রধান শিক্ষককে জানালে পরে সেটি জানাজানি হয়। দাঁতমারা শান্তিরহাট বাজারে স্থানীয়রা ব্যারিকেড দিয়ে গাড়িটি আটক করে ভাঙচুর করে। এসময় স্থানীয়রা স্কুলশিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেন এবং অপহরণকারীদের পুলিশের হস্তান্তর করেন। তাদের আটক করা হয়েছে।

চস/স

ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ২ বছরের কারাদণ্ড

প্রতারণার মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে দুই বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র এ রায় দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী তৌসিফ মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আসামিরা পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ইভ্যালি বিভিন্ন মাধ্যমে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন পণ্য বিক্রয় করে। এতে আকৃষ্ট হয়ে তৌফিক মাহমুদ তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২১ সালের ২০ মার্চ ইয়ামাহা আর ওয়ান ফাইভ বাইক অর্ডার করেন। যার মূল্যবাবদ দুই লাখ ৪৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। ৩ এপ্রিল তিনি আর ওয়ান ফাইভের আরো দুটি বাইক অর্ডার করেন। যার মূল্যবাবদ ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। তবে কর্তৃপক্ষ ৪৫ দিনের মধ্যে বাইক তিনটি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়। পরে তিনি ধানমন্ডি অফিসে যোগাযোগ করেন। কর্তৃপক্ষ দুটি চেক প্রদান করে। তবে ব্যাংক হিসেবে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ না থাকায় চেকটি নির্ধারিত তারিখে ব্যাংকে জমা না দিতে অনুরোধ করেন। আসামিদের কথা বিশ্বাস করে তিনি চেকটি ব্যাংকে জমা দেননি। পরে তৌফিক মাহমুদ টাকা আদায়ের জন্য তাগাদা দিতে থাকেন। তবে তারা কোনো টাকা তাকে ফেরত দেননি। পরে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েও কাজ হয়নি।

এ ঘটনায় তৌফিক মাহমুদ ২০২৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

চস/স

সরাসরি গুম ও হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা :এইচআরডব্লিউ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জুলাই আন্দোলন নিয়ে একটি প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। যেখানে তারা বলেছে যে কর্মকর্তারা তাদের জানিয়েছেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশি একনায়ক শেখ হাসিনা সরাসরি গুম ও হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন’।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ইলেইন পিয়ারসনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই বিপ্লবের ওপর একটি প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। এই প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

এইচআরডব্লিউ-এর এশিয়া প্রধান বলেন, ‌‌‌‌‘এখন পর্যন্ত যে অগ্রগতি হয়েছে তার আমরা প্রশংসা করি।’

জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সময় অধিকার প্রতিষ্ঠা ছিল মূলনীতি, তা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এখন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবাধিকারের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছে।

এইচআরডব্লিউ র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করে বলেছে, হত্যাকাণ্ড এবং জোরপূর্বক গুমের জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের তাদের অপরাধের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। কিছু জবাবদিহিতা থাকা দরকার।

এইচআরডব্লিউয়ের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের গত ১৬ বছরে তাদের প্রতিবেদনগুলো সরকার দ্বারা সংঘটিত ব্যাপক অপরাধের উন্মোচন করেছে। র‌্যাব তার অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়েছে, তবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং জোরপূর্বক গুমের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে এবং শাস্তি পেতে হবে।

পিয়ারসন বলেন, শেখ হাসিনার ২০০৯-২০২৪ সালের শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনী রাজনীতিকরণ করা হয়েছিল এবং তারা দলীয় ক্যাডারদের শাসন করার মতো আচরণ করেছিল। এটির জন্য পদ্ধতিগত সংস্কার প্রয়োজন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা স্বচ্ছতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সমস্ত সংস্কার সুপারিশ প্রকাশ করছি, জনগণকে কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছি। যেমনটি আপনি উল্লেখ করেছেন, ১৫ বছরের নিপীড়ন ও অপরাধের অবসান ঘটানো একটি চ্যালেঞ্জিং প্রচেষ্টা হবে।

এইচআরডব্লিউয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, বলপূর্বক গুমের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে আরও বলেছেন যে, শেখ হাসিনা বা ঊর্ধ্বতনরা সরকার আটকের বিষয়ে অবগত ছিলেন এবং কিছু ক্ষেত্রে হাসিনা সরাসরি জোরপূর্বক গুম এবং হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এইচআরডব্লিউয়ের এশিয়া প্রধান বলেন, তার সফরের সময় তিনি সংস্কার কমিশনের বেশ কয়েকজন প্রধান এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধির সাথে দেখা করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইনে তাদের জন্মভূমিতে একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আশা করেছেন যে, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং প্রধান বিদ্রোহী গোষ্ঠী, আরাকান আর্মি, নিরাপদ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

চস/স

বইমেলায় সাজেদুল ইসলাম রাব্বি’র প্রথম উপন্যাস ‘অসম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি’

অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে সাজেদুল ইসলাম রাব্বি’র প্রথম উপন্যাস ‘অসম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি’। বইটি প্রকাশ করছে সাম্য পাবলিকেশন। ‘অসম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি’ উপন্যাস প্রচ্ছদ এঁকেছেন, মো. সাদিতউজজামান।

প্রকাশক জানান, বইটি ইতোমধ্যে রকমারি, সাম্য পাবলিকেশনে পাওয়া যাচ্ছে। বইমেলায় বইটির একমাত্র পরিবেশক চয়ন প্রকাশন। স্টল নাম্বার ১৭০ থেকে বইটি সংগ্রহ করা যাবে। বইটির প্রচ্ছদ মূল্য ৩৫০ টাকা।

‘অসম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি’ উপন্যাস নিয়ে সাজেদুল ইসলাম বলেন, “উপন্যাসটি যেন মধ্যবিত্ত বাস্তবতার জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। যে বাস্তবতায় খুঁজে পাওয়া যাবে নির্মল প্রেমে সিক্ত প্রেমিক যুগলকে। যেখানে দৃঢ়তা নিয়ে বেড়ে উঠে আত্মার বন্ধন। উপন্যাসে খুঁজে পাওয়া যাবে মফস্বল থেকে উঠে আসা এক অতি সাধারণ ছেলে ‘ফারাবি’কে। যে দু’চোখে হাজারো স্বপ্ন নিয়ে শহরে পা রাখে। জীবনের বাঁকে বাঁকেই যার দ্বিধাদ্বন্দ্ব। যে পড়াশোনা, পরিবার, সম্পর্ক, ক্যারিয়ার নিয়ে জীবনযুদ্ধে নানান চড়াই-উতরাইয়ের সম্মুখীন হয়। টালমাটাল একটি সময় যাকে আষ্টেপৃষ্টে আঁকড়ে ধরে। একটা পর্যায়ে জটিল ও দুর্বিষহ হয়ে পড়ে যার জীবন।”

তিনি আরও বলেন, “পাঠকের কথা মাথায় রেখে আমি বাক্যগঠনে ক্ষুদ্র বিষয়কেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। সমসাময়িক বিষয়-কে কেন্দ্র করে মধ্যবিত্তের বাস্তবিক প্রেক্ষাপট নিয়ে রচিত এ উপন্যাসটি কিছুটা হলেও পাঠক-কে জীবন সম্পর্কে উপলব্ধি করাবে। উপন্যাসে পাঠক হয়তো নিজেকেও খুঁজে পেতে পারেন। পাঠকরা প্রবল আগ্রহে কাছে টেনে নিবে ‘অসম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি’ উপন্যাস-কে, এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।”

সাজেদুল ইসলাম রাব্বি’র প্রত্যাশা এই উপন্যাসটি পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। উপন্যাসের সাথে পাঠকের উপভোগ্য সময় কাটবে। এবং পাঠক মধ্যবিত্ত জীবন ও বাস্তবতা সম্পর্কে নিদারুণ উপলব্ধি করবে।

 

চস/আজহার

ডাকাতির প্রস্তুতিকালে চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার ৬

চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার কুলগাঁও খলিল শাহ মাজার সংলগ্ন একটি বাড়ির দোতলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. আসিফ (২২), মো. হাসান (২০), মো. ফয়সাল (১৯), মো. আজিম উদ্দিন (২৩), মো. রিফাদ (১৯) এবং মো. জুয়েল (২০)।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ৬ জন নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সহযোগী। গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত থেকে একটি দেশি এলজি, ড্রিল মেশিন, কাটার মেশিন, কিরিচসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের মিডিয়া সেন্টারে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) রইছ উদ্দিন সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা মূলত বায়েজিদ এলাকার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সহযোগী। তাদের বিরুদ্ধে নগরের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এই ৬ জনকে গ্রেপ্তারে অভিযানের খবর পেয়ে আরও ৩ থেকে ৪ জন পালিয়েছে। তাদেরও আমরা গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি। আসিফ নামে যে ডাকাত রয়েছে তিনি হচ্ছেন সর্দার। ওই এলাকায় তার নেতৃত্বেই ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।

তিনি আরও বলেন, অতি সম্প্রতি সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করেই ফেলেছিলাম। কিন্তু সে পুলিশের ওপর গুলি ছুঁড়ে পালিয়ে যায়। আমরা তার ব্যাপারে সবসময় সক্রিয় রয়েছি। ইতোপূর্বে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় জেলে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আবারও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। তার ওপর আমাদের নজরদারি রয়েছে।

চস/স

বইমেলায় অরণ্য সৌরভের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘মেঘদীপা দাস’

অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে অরণ্য সৌরভের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘মেঘদীপা দাস’। বইটি প্রকাশ করছে প্রকাশনা সংস্থা দূরবীণ। ‘মেঘদীপা দাস’ বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকেছেন পরাগ ওয়াহিদ।

প্রকাশক জানান, বইটি ইতোমধ্যে রকমারি, প্রথমা-তে প্রি অর্ডার শুরু হয়েছে। বইমেলায় বইটির একমাত্র পরিবেশক কিংবদন্তী পাবলিকেশনের ৭৫-৭৭ নম্বর স্টলে বইটি পাওয়া যাবে। বইটির প্রচ্ছদ মূল্য ৩৩৩ টাকা।

মেঘদীপা দাস কাব্যগ্রন্থ নিয়ে অরণ্য সৌরভ বলেন, প্রতিটি কবিতা আত্মার একটি টুকরো, যা হৃদয়গহীন থেকে উচ্চারিত। যা আকাঙ্ক্ষা এবং পরিপূর্ণতার কথা বলে। একইসাথে প্রতিটি কবিতা-প্রেম খুঁজে পাওয়া ও হারিয়ে যাওয়া এবং প্রতিশ্রুতির কথা বলে। দেখবেন, আপনি একজন রোমান্টিক-বিরহী প্রেমিক-প্রেমিকা, হৃদয়ের গভীরতায় খুঁজে পাচ্ছেন নিজের সান্ত্বনা, অনুপ্রেরণা, বিরহ ব্যথা এবং প্রেমময় গভীর উপলব্ধি। পাঠ করতে গিয়ে কখনো কখনো খটকা লাগবে, কারণ এই কাব্যগ্রন্থের বেশ কয়েকটি কবিতায় খুঁজে পাবেন জীবনানন্দের সুর।

তিনি বলেন, বিশ্বাস করি, পাঠক যখন পৃষ্ঠাগুলো উল্টাবে, চরণে চরণে তাদের হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি এবং অভিজ্ঞতার আয়না খুঁজে পাবে। কবিতাগুলো তাদেরকে সেই মুহূর্তের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে পারে, যা একসময় তাদের আত্মাকে স্পর্শ করেছিল এবং করছে।

অরণ্য সৌরভের প্রত্যাশা এই কাব্যগ্রন্থটি কেবল আপনার হৃদয়কে আলোড়িত করবে না; বরং পুরোনো স্মৃতি এবং আবেগকে পুনরুজ্জীবিত করবে, যা আমাদের অস্তিত্বকে সংজ্ঞায়িত করে।

চস/আজহার

আন্দোলনে পুলিশকে গুলি করার নির্দেশ দেন রাজনৈতিক নেতারা

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশি বর্বরতায় সরাসরি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। তারা বেশকিছু উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক রিপোর্টে এসব জানিয়েছে সংস্থাটি।

গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা অফিসারদের চেয়ে রাজনৈতিক নেতারাই বেশি ঠিক করে দিতেন বলে জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ। ৫০ পাতার রিপোর্টে পুলিশের বয়ানে উঠে এসেছে সেই সময়কার নির্দেশদাতা এবং অপরাধের নমুনা।

‘আফটার দ্য মনসুন রেভলিউশন: এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, অতীতে কীভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং নিরাপত্তা বাহিনী সবসময় রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারের নানা দিকও উঠে এসেছে প্রতিবেদনটিতে।

পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা এইচআরডব্লিউকে জানিয়েছেন, জুলাই-আগস্টের বিদ্রোহের সময় অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকেই এসেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, অস্থিরতার সময় পুলিশের ভূমিকা মাঠপর্যায়ের অফিসারদের চেয়ে রাজনৈতিক নেতারাই বেশি নির্ধারণ করে দিতেন।’

আরেকজন পুলিশ কর্মকর্তা এইচআরডব্লিউকে বলেছেন, তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সিনিয়র অফিসারদের লাইভ সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে দেখেছেন এবং প্রতিবাদকারীদের গুলি করার জন্য অফিসারদের সরাসরি এমনভাবে নির্দেশ দিতে দেখেছেন যেন ‘তারা কাউকে ভিডিও গেমে গুলি করার নির্দেশ দিচ্ছেন।’

আন্দোলনের সময় ১৮ বছর বয়সি আমির হোসেন পুলিশের হাতে ধরা পরে। এসময় তারা বিল্ডিং থেকে লাফ দিতে বলে। হিউম্যান রাইট ওয়াচকে আমির বলেছেন, ‘পুলিশ যখন আমার দিকে আসছিল, তখন ধরা পড়ে যাবার ভয়ে আমি নির্মানাধীন একটা বিল্ডিংয়ে উঠি। যখন আমি চারতলায় পৌঁছাই তখন পুলিশ আমাকে লাফ দিতে বলে। আমি জানি যদি এখান থেকে পরে যাই তবে, আমি মারা যাব। চারতলায় তাই একটি রডে ঝুলে থাকার চেষ্টা করি। একজন পুলিশ অফিসার আমার দিকে ছয় রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। ততক্ষণে আমি তিন তলার ঝুলছিলাম। এসময় অনেক পুলিশ আমার পায়ে আঘাত করছিল। পরে তারা চলে যায়। আমার তখন অনেক ব্যথা হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে তিনতলা থেকে লাফ দেই। তখন আমার একটি পা ভেঙে যায়। আমি এখনও বুঝতে পারি না কেন তারা আমাকে ধাওয়া করে গুলি করল!’

গুলি করার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা। বাংলাদেশ পুলিশের একজন অফিসার বলেছেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাদেরকে কঠোর হতে এবং ‘নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী কোনও অপরাধী’কে রেহাই না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারা স্পষ্টভাবে ‘গুলি করো’ শব্দটি ব্যবহার করেননি, তবে তাদের নির্দেশাবলী স্পষ্ট ছিল: সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করুন, আপনি যা প্রয়োজন মনে করেন তা করুন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নিন।’

তিনি এইচআরডব্লিউকে বলেন, আন্দোলনের সময়কার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানকে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন।

আন্দোলন চলাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও সরাসরি পুলিশের বর্বরতার সাক্ষী হতে দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগস্টে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) এক কর্মকর্তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলছেন, ‘গুলি করি, মরে একটা, আহত হয় একটা…বাকিডি যায় না স্যার।’

চস/স

২০২৪ সালে দেশে ২৬ হাজারেরও বেশি অগ্নিকাণ্ড

বৈদ্যুতিক গোলযোগ, বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা, চুলা ও গ্যাসসংক্রান্ত কারণে প্রতিবছরই দেশে অগ্নি দুর্ঘটনা বাড়ছে। এদিকে ২০২৪ সালে সারাদেশে ২৬ হাজার ৬৫৯টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ১৪০ জন নিহত এবং ৩৪১ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া বিভাগ জানিয়েছে, গেল বছরে সারাদেশে এই অগ্নিকাণ্ডে ৪৪৬ কোটি ২৭ লাখ ২৮ হাজার ৬৯৭ টাকা সম্পদের ক্ষতি হয়েছে এবং ফায়ার সার্ভিস আগুন নির্বাপণের মাধ্যেমে ১ হাজার ৯৭৪ কোটি ৪৪ লাখ ৭২ হাজার ৮৭৫ টাকার সম্পদ রক্ষা করে। অগ্নিকাণ্ডে সারাদেশে ৩৪১ জন আহত এবং ১৪০ জন নিহত হয়েছেন।

আগুন নির্বাপণের সময় ৩৭ জন বিভাগীয় কর্মী আহত এবং অগ্নি নির্বাপণ ও উদ্ধার কাজ করতে গিয়ে দুইজন কর্মী নিহত হয়েছেন। অগ্নিনির্বাপণকালে উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক ফায়ার সার্ভিস এর ৩৪টি গাড়ি ভাঙচুর ও ৮টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

অগ্নিকাণ্ডের কারণের বিষয় তুলে ধরে পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২৬ হাজার ৬৫৯টি আগুনের মধ্যে বৈদ্যুতিক গোলযোগে ৯ হাজার ৬৯টি (৩৩.৯৮%), বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা থেকে ৪ হাজার ১৩৯টি (১৫.৫২%), চুলা থেকে ৩ হাজার ৫৬টি (১১.৪৬%), উচ্ছৃঙ্খল জনতা কর্তৃক ৭৮৯টি (২.৯৫%), ছোটদের আগুন নিয়ে খেলার কারণে ৭৫৯টি (২.৮৪%), উত্তপ্ত ছাই থেকে ৭৩৫টি, গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে ৭০৪টি, গ্যাসের লাইন লিকেজ থেকে ৪৬৫টি, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে ৪৪টি (০.৪৫%), কয়েল থেকে ৪৫৫টি এবং আতশ বাজি/ফানুস/পটকা পোড়ানো থেকে ৬৪টি আগুনের ঘটনা ঘটে।

সম্পদের ক্ষয়ক্ষতিভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে বাসাবাড়ি/আবাসিক ভবনে সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সারাদেশে বাসা বাড়িতে মোট ৭ হাজার ১৩১টি আগুন লাগে, যা মোট আগুনের ২৬.৭৪ শতাংশ। এছাড়া খড়ের গাদায় ৪ হাজার ৫১৩টি (১৬.৯২%), রান্নাঘরে ২ হাজার ৪১১টি (৯.০৪%), দোকানে ১ হাজার ৮৮৭টি, হাট-বাজারে ৯১১টি, শপিং মলে ৪৮১টি, পোশাক শিল্প ব্যতীত কলকারখানায় ৪৯৪টি, পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে ২৩৬টি, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ২১১টি, বহুতল ভবনের আগুন (৬ তলার উপরে) ১৫৩টি, রেস্টুরেন্ট ও হোটেলে ১৫০টি, কেপিআই ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ১২৯টি, হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ১২৬টি, পাট গুদাম-পাটকলে ১২৩টি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ৮৫টি, বস্তিতে ৮৪টি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৭৮টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

পরিবহনে আগুনের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে সারাদেশে বাস বাদে যানবাহনে ২৬৮টি, বাসে ১১৪টি, ট্রেনে ১৩টি, লঞ্চে ৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

মাসভিত্তিক অগ্নিকাণ্ডের পরিসংখ্যানে জানা যায়, ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারিতে ২৭৩৭টি, মার্চ ৩৪২১টি, এপ্রিল ৩৪২৬টি, মে মাসে ২৬৮৬টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এই চার মাসে গড়ে প্রতিদিন ১০২টি করে আগুন লেগেছে। এছাড়া জানুয়ারি মাসে ২৫১৪টি, জুলাই মাসে ১৪২৭টি, আগস্ট মাসে ২১৬৩টি আগুন লাগে।

অগ্নিকাণ্ডে আহত-নিহতদের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আহত ও নিহতদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি। সারাদেশে ৩৪১ জন আহতের মধ্যে পুরুষ ২৩৭ ও নারী ১০৪ জন। নিহত ১৪০ জনের মধ্যে ১০৭ জন পুরুষ ও ৩৩ জন নারী।

আহত ও নিহত হওয়ার ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বাসা-বাড়ি/আবাসিক ভবনে (আহত ৭২, নিহত ৩৬), গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ (আহত ৫৩, নিহত ৮) এবং রেস্তোরাঁ ও হোটেলে (আহত ৭৮, নিহত ৪৭) আগুনের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছেন।

এছাড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ২০২৪ সালে সারাদেশে ডুবুরি কার্যক্রমের মাধ্যমে ১৫৬ জন আহত এবং ৭৫০ জন নিহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। আরও ৩০৩টি পশু, ৫০টি পাখি, ২২৭টি প্রাণী উদ্ধার করে।

২০২৪ সালে সারাদেশে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ৯ হাজার ১২৮টি দুর্ঘটনায় উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে ১০ হাজার ৮২৬ জন আহত এবং ২ হাজার ৪৩৭ জন নিহতদের উদ্ধার করে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৪০৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ৩১৯ জন আহত এবং ১ হাজার ৪৮৪ জন নিহতদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

সারাদেশে অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ২০২৪ সালে ১৪৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। এই মোবাইল কোর্টের মাধ্যেমে ১৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ৫৮ লাখ ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ৩টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

অগ্নিদুর্ঘটনা কমানোর জন্য সারাদেশে জনগণকে সচেতন করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ২০২৪ সালে ১৮৯৮৩টি মহড়া, ৩০৩৬টি সার্ভে, ১৫৬৮৪টি গণসংযোগ করেছে। এছাড়া সারাদেশে অগ্নিদুর্ঘটনায় করণীয় বিষয়ে ৭৭৬৯টি প্রশিক্ষণের মাধ্যেমে ১,৪৭,৭১৭ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অপরদিকে ২০২৪ সালে শুধুমাত্র পোশাক শিল্প কারখানায় ৩৯২১টি প্রশিক্ষণ কোর্সের মাধ্যমে ১,৫৬,৮৪০ জন পোশাক শ্রমিককে অগ্নিদুর্ঘটনায় করণীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

চস/স

নেতাদের সঙ্গে সিদ্ধান্ত ছাড়াই সমঝোতার বৈঠক শেষ, চলছে না ট্রেন

ট্রেন চালু করতে সমঝোতার বৈঠক শেষ হয়েছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আপাতত ট্রেন চলার কোনো খবর নেই। তাই সারাদেশে ট্রেন চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধই থাকছে।

আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ভিআইপি রুমে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই রানিং স্টাফদের প্রতিনিধি সেখান থেকে বেরিয়ে যান।

রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সকল পক্ষকে নিয়ে কয়েক দফায় দুই ঘণ্টার বেশি বৈঠক চললেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত করা যায়নি।

কর্মবিরতি থেকে সরে আসতে রানিং স্টাফদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মো. ফাহিমুল ইসলাম।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, রেলওয়ে স্টেশনের প্রতিটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে জনশূন্য। প্ল্যাটফর্মে থাকা ট্রেনগুলোর প্রতিটি দরজা লাগানো। আর রেলওয়ে স্টেশনের ভিআইপি রুমের সামনে অপেক্ষামান যাত্রীরা। যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে রেলপথ মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ রুটসমূহে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করেছে।

উল্লেখ্য, মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতিতে গেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে সোমবার দিবাগত রাত ১২টার পর শিডিউলে থাকা ট্রেনগুলোতে ওঠেননি রানিং স্টাফরা। ফলে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। যার ফলে সারা দেশে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। রানিং স্টাফের মধ্যে রয়েছেন ট্রেন চালক, গার্ড ও টিকিট চেকার পদধারীরা।

চস/স